ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঝটিকা মিছিল করতে গেলে দুই শিবির কর্মীকে গণধোলাই

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ৯ এপ্রিল ২০১৫

ঝটিকা মিছিল করতে গেলে  দুই শিবির কর্মীকে গণধোলাই

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সারাদেশে হরতালের ছিটেফোঁটাও দেখা যায়নি। রাজনৈতিক কর্মসূচীর সবচেয়ে বড় হাতিয়ার ‘হরতাল’ এখন মৃত। হরতাল শব্দটি শুধু রাজনৈতিক ময়দানেই আলোচিত হচ্ছে। মানুষের মধ্য নয়। বিএনপির ডাকা টানা অবরোধ আর হরতালে অতিষ্ঠ দেশবাসী হরতালকে আর আমলেই নিচ্ছেন না। সর্বশেষ হরতালের সলিল সমাধির চিত্র লক্ষ্য করা গেছে, গত মঙ্গলবার ও বুধবার জামায়াতের ডাকা টানা দুই দিনের হরতালে। উল্টো হরতাল পালনের চেষ্টাকারীরা প্রতিদিনই দেশেরও কোথাও না কোথাও গণধোলাইয়ের শিকার হচ্ছে। বুধবারও রাজশাহীতে হরতালের পক্ষে ঝটিকা মিছিল করতে গিয়ে দুই শিবিরকর্মী গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছে। সারাদেশে চলমান কর্ডন পদ্ধতির বিশেষ অভিযানে শতাধিক গ্রেফতার হয়েছে। নিরাপত্তা জোরদার করতে সারাদেশে অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাবের পাশাপাশি মোতায়েন থাকছে বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ)। বুধবার জামায়াতের ডাকা টানা দুই দিনের হরতালে সারাদেশ ছিল রীতিমতো কর্মচঞ্চল। মানুষের মধ্যে কোন আতঙ্কও লক্ষ্য করা যায়নি। এক সময় হরতাল মানেই আতঙ্ক ছিল। রাস্তায় যানবাহন বের করলে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগসহ নানাধরনের নাশকতার আশঙ্কা ছিল। এখন সে সব চিত্র পাল্টে গেছে। উল্টো হরতাল অবরোধের নামে নাশকতাকারীরা প্রতিদিন দেশে কোথাও না কোথাও গণধোলাইয়ের শিকার হচ্ছে। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের প্রায় তিন মাসের অবরোধ-হরতালে অতিষ্ঠ মানুষ। তাই অবরোধ-হরতালের নামে নাশকতাকারীদের শায়েস্তা করতে সাধারণ মানুষ আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অপেক্ষা করছেন না। জনতাই নাশকতাকারীদের ধরে গণধোলাই দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে খবর দিচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাড়তি খবর রাখার প্রয়োজন কমই পড়ছে। জনতার রোষানলের ভয়ে গত মঙ্গলবার ও বুধবার জামায়াতের ডাকা হরতালে দলটির নেতাকর্মীদের দেশের কোথাও দেখা যায়নি। এদিকে চোরাগোপ্তা হামলাসহ নানাধরনের নাশকতার আশঙ্কায় সারাদেশেই সতর্ক অবস্থায় রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সকালে রাজধানীর পুরানা পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কার্যালয়ের সামনে রাখা হয়েছে জল কামান, সাঁজোয়া যান ও প্রিজনভ্যান। মোতায়েন রয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাব আর বিজিবি। নয়া পল্টনের অফিস রীতমতো খোলা। নেতাকর্মীরা সেখানে অবাধে যাতায়াত করছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। নাশকতাকারী, তাদের অর্থ-মদদ-আশ্রয়-প্রশয়দাতাদের গ্রেফতারে চলমান অভিযানে ঢাকা থেকে ২০ জন গ্রেফতার হয়েছে। এর মধ্যে নয়াপল্টনের আশপাশ থেকেই ১৩ জন গ্রেফতার হয়েছে। এদিকে বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে রাজশাহী মহানগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকায় কামারুজ্জামানের ফাঁসির প্রতিবাদে ছাত্রশিবির ঝটিকা মিছিল বের করে। এ সময় দুই কর্মী গণধোলাইয়ের শিকার হয়। শিবিরের দাবি, ছাত্রলীগ তাদের গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোর্পদ করেছে। যদিও স্থানীয়রা বলছেন, শিবিরের চোরাগোপ্তা হামলার আশঙ্কায় অতিষ্ঠ হয়ে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ, বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মী শিবিরকর্মীদের ধাওয়া করে। দুই শিবিরকর্মী ধরা পড়লে তাদের গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোর্পদ করা হয়। আহত শিবিরকর্মী মিজানুর রহমান ও মনির হোসেনকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছে পুলিশ। এদিকে নাশকতার আশঙ্কায় সারাদেশে কর্ডন পদ্ধতিতে বিশেষ অভিযান চলছে। বিশেষ অভিযান চলছে জামায়াত-শিবিরের প্রভাব থাকা জেলাগুলোতে। অভিযানে রংপুর থেকে ৬৮, সাতক্ষীরা থেকে ৩২, গাইবান্ধা থেকে ২৩ ও মানিকগঞ্জ থেকে ৬ জনসহ সারাদেশ থেকে শতাধিক গ্রেফতার হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা বিভিন্ন নাশকতার মামলার আসামি। যাদের অধিকাংশই বিএনপি-জামায়াত-শিবির ও ভাড়াটে সন্ত্রাসী।
×