ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ইয়েমেন সংঘাতে গভীরভাবে জড়িয়ে পড়ছে ওবামা প্রশাসন

মার্কিন অস্ত্র সরবরাহ বাড়ছে

প্রকাশিত: ০৪:৩১, ৯ এপ্রিল ২০১৫

মার্কিন অস্ত্র সরবরাহ বাড়ছে

যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা হুতি বিদ্রোহীদের অবস্থানের ওপর বোমা হামলাকারী সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটকে অস্ত্র সরবরাহ ত্বরান্বিত করছে। এটা হুতিদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানে ওবামা প্রশাসনের গভীরভাবে জড়িত হওয়ার একটি ইঙ্গিত। সৌদি রাজধানী রিয়াদে মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ্যান্টনি জে, ব্লিংকেন মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্র জোটের সঙ্গে তার গোয়েন্দা তথ্যও বেশি করে ভাগ করে নিচ্ছে এবং সৌদি সরকারকে তাদের যুদ্ধ প্রচেষ্টায় সাহায্য করতে একটি ‘যৌথ সমন্বয় পরিকল্পনা সেল’ প্রতিষ্ঠা করেছে। খবর নিউইয়র্ক টাইমস, বিবিসি ও আল- জাজিরার। হুতিদের বিরুদ্ধে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের বিমান হামলা শুরুর দু’সপ্তাহ পরে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এই সমর্থন ব্যক্ত করা হলো। হুতিরা উত্তর ইয়েমেনে জায়দি শিয়াপন্থী একটি বিদ্রোহী আন্দোলনের সদস্য, যারা ইয়েমেনের ভূখ- দখল করে গত ৮ মাস যাবত ধীরে ধীরে তাদের নিয়ন্ত্রণ ও প্রভাব বৃদ্ধি করেছে। গত সেপ্টেম্বরে ইয়েমেনী রাজধানী সানা দখল করার পর ফেব্রুয়ারিতে তারা প্রেসিডেন্ট হাদিকে গৃহবন্দী করে। হাদি পরে দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দর এডেনে ও পরে সৌদি আরবে পালিয়ে যান সৌদি আরব বলেছে, হুতিদের দমন করে ইয়েমেনের স্থিনিশীলতা পুনরুদ্ধার এবং প্রেসিডেন্ট আব্দরাব্বু মনসুর হাদিকে পুনরায় ক্ষমতাসীন করাই তাদের লক্ষ্য। ‘হুতি ও তাদের মিত্ররা শক্তি প্রয়োগ করে ইয়েমেন দখল করতে পারবে না’ বলে সৌদিরা তাদের যে কড়া বার্তা পাঠিয়েছে ব্লিংকেন তার প্রশাংসা করেন। এদিকে সাহায্য সংস্থাগুলো ইয়েমেনের বন্দর নগরী এডেনে একটি আসন্ন মানবিক বিপর্যয়ের ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছে সেখানে বিদ্রোহী ও হাদি অনুগতদের মধ্যে রাস্তায় রাস্তায় লড়াইয়ের খবর পাওয়া গেছে। গত এক পক্ষকালের লড়াইয়ে সেখানে প্রায় ৫৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, একই সময় সেখানে ২ হাজার লোক আহত হয়। জাতিসংঘের শিশু সংস্থা ইউনিসেফ বলেছে, নিহতদের মধ্যে অন্তত ৭৪ জন শিশু, তবে এ সংখ্য আরও বেশি হতে পারে। লক্ষাধিক লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে। আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটির একজন মুখপাত্র বলেন, ‘বাড়িয়ে না বললেও পরিস্থিতি চরম বিপর্যয়কর।’ এডেনে রেডক্রস কর্মকর্তা রবার্ট গোসেন ওই বন্দরকে ‘ভুতুড়ে নগরী’ বলে বর্ণনা করেন। রেডক্রস কয়েকটি সাহায্য সংস্থার অন্যতম যারা এডেনে আরও চিকিৎসা উপরণ ও কর্মী পাঠানোর চেষ্টা করছে। চলতি সপ্তাহে সেখানে তীব্র লড়াই শুরু হলে রাস্তায় রাস্তায় লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। হাসপাতালগুলোতে আহত রোগীতে ভরে যায় ও এ্যাম্বুলেন্স ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। রবার্ট গোসেন বিবিসির টুডে প্রোগ্রামে বলেন, ‘আমরা দেখেছি অনেক লোককে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হচ্ছে কিংবা অনেকে হাসপাতালে মারা যাচ্ছে। হাসপাতালগুলোতে সঠিত চিকিৎসা উপকরণ এবং উপযুক্ত চিকিৎসা কর্মী নেই।’ জেনেভার রেডক্রসের মুখপাত্র সিতারা জাবিন নগরীতে সংস্থার কর্মীদের পাঠানো রিপোর্টের উদ্ধাতি দিয়ে বলেছেন, এডেনের তুমুল লড়াইয়ে অনেক লাশ উদ্ধারের জন্য মেডিক্যাল টিম পাঠানো যাচ্ছে না। তিনি বলেন, চিকিৎসা সরবরাহ নিয়ে একটি কার্গোবিমান জর্দানের রাজধানী আম্মানে অপেক্ষা করছে। ‘বিমানটি বুধবার সানার উদ্দেশে যাত্রা করবে।’
×