ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ মোটেই সহজ প্রতিপক্ষ নয় ॥ হাফিজ

প্রকাশিত: ০৪:২০, ৯ এপ্রিল ২০১৫

বাংলাদেশ মোটেই সহজ প্রতিপক্ষ নয় ॥ হাফিজ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ‘সহজ প্রতিপক্ষ নয়’, আর ‘কঠিন প্রতিপক্ষ’- বাক্য দুটির মধ্যে তাৎপর্যগত পার্থক্য অবশ্যই রয়েছে। আসন্ন সফর সামনে রেখে টাইগারদের ঠিকই সমীহ করলেন মোহাম্মদ হাফিজ, তবে পাকিস্তানী অলরাউন্ডার বাংলাদেশকে কঠিন প্রতিপক্ষ মানতে নারাজ! তার মতে, বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলে মাশরাফি বিন মর্তুজার দল বিশ্ববাসীর মনোযোগ কেড়েছে, তবে তা নিয়ে একদমই ভাবছেন না তারা। বরং পরিসংখ্যান ও সামর্থ্যরে বিচারে পাকিস্তানই এগিয়ে বলে মনে করেন ইনজুরির জন্য বিশ্বকাপে খেলতে না পারা এই পাকি ক্রিকেটার। ‘বিশ্বকাপ কেবল জয়-পরাজয়ের বিষয় নয়। বাংলাদেশ পারফর্মেন্স দিয়েই এবার অনেকের মন জয় করেছে। বিশ্ব ক্রিকেটে নতুন করে সমীহ আদায় করে নিয়েছে তারা। কোয়ার্টার ফাইনালে খেলা একটি দলকে ছোট করে দেখার অবকাশ নেই, মাশরাফি-মুশফিকদের সামর্থ্য নিয়েও প্রশ্ন নেই। ভাল ক্রিকেট খেলেই তারা আসরের সেরা আটে জায়গা করে নিয়েছিল। সুতরাং আমরা ওদের মোটেই হালকাভাবে দেখছি না, নিজেদের কন্ডিশনে বাংলাদেশ সহজ প্রতিপক্ষ নয়।’ বলেন ৩৪ বছর বয়সী পাঞ্চাব তারকা। বাংলাদেশ ক্রিকেটে বেশ উন্নতি করেছে বলেও মনে করেন অভিজ্ঞ পাক ক্রিকেটার। এক বাক্যে হাফিজ বলেন, ‘মনে হতে পারে তাদের বিপক্ষে জেতা সহজ, বিষয়টা মোটেই তেমন নয়!’ দ্বিপক্ষীয় সিরিজে অংশ নিতে ১৩ তারিখ বাংলাদেশে পা রাখবে পাকিস্তান। টেস্টের নেতৃত্বে দেখা যাবে যথারীতি মিসবাহ-উল হক, ওয়ানডেতে দলটির নতুন নেতা আজহার আলী, আর টি২০র দায়িত্ব থাকছে তুখোড় অলরাউন্ডার শহীদ আফ্রিদির কাঁধে। ওয়াসিম আকরাম, শোয়েব আখতারের মতো অনেক সাবেক তারকাই বাংলাদেশকে বিশ্ব ক্রিকেটের আগামীর শক্তি বলে মনে করেন। তাদের মতে, এবার টাইগারদের বিপক্ষে ‘অগ্নিপরীক্ষার’ মুখে পড়বে সফরকারীরা। তবে এই বিষয়ে হাফিজের বক্তব্য অতটা জোরালো নয়, যেখানে উল্টো তার বক্তব্যে পাকিস্তান এগিয়ে থাকবে বলেই ধারণা প্রকাশ পায়। এর একটা কারণও অবশ্য রয়েছে। দু’দিন আগে টাইগার অলরাউন্ডার সকিব আল হাসান পরিষ্কার বলে দিয়েছেন সিরিজে বাংলাদেশই এগিয়ে। যেখানে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে নিজেদের বিশ্বকাপ সাফল্য ও প্রতিপক্ষ পাকিস্তান দলে এক ঝাঁক নতুন মুখকেই মুখ্য হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন বতর্মানে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে আইপিএল খেলতে ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশী হিরো। মূলত তার জবাবেই হাফিজের এমন বক্তব্য। ‘সাকিব যেটা বলেছে সেটা আত্মবিশ্বাস থেকে। আত্মবিশ্বাস থাকা সবসময়ই ভাল। আমি যতদূর জানি, মাশরাফি প্রথম ম্যাচে খেলতে পারবে না। সেক্ষেত্রে সকিব নেতৃত্ব দেবে। আপনি যদি ইতিহাসটা দেখেন, আমরাই ওদের বেশি হারিয়েছি। এক ম্যাচ ছাড়া বাংলাদেশ কখনই আমাদের বিপক্ষে জিততে পারেনি!’ সফরে নিজেদের রসদ পেতে অতীতকে টেনে আনেন হাফিজ। ১৯৮৮ থেকে এ পর্যন্ত দুই দল মোট ৮৮ বার মুখোমুখি হয়েছে, যেখানে সবেধন নীলমণি ১৯৯৯ বিশ্বকাপে এক ওয়ানডেতে জয় বাংলাদেশের। ইতিহাস, পরিসংখ্যান, সামর্থ্যে পাকিস্তান এগিয়েÑ হাফিজ হয়ত সতীর্থদের আত্মবিশ্বাসী করতে সেদিকে ইঙ্গিত করেন। বিশ্বকাপ শেষে ওয়ানডে থেকে বিদায় নিয়েছেন মিসবাহ-আফ্রিদির মতো বড় দুই পারফর্মার। জায়গা হারিয়েছেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান ইউনুস খান। এই অবস্থায় একাধিক তরুণ ক্রিকেটারকে সুযোগ করে দিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। রঙ্গিন পোশাকে নতুন অধিনায়ক নির্বাচন করা হয়েছে আজহার আলীকে। সব মিলিয়ে ওয়ানডেত অনেকটাই পুনর্গঠনের প্রচেষ্টায় পাকিস্তান ক্রিকেট। অন্যদিকে দারুণ একটি বিশ্বকাপ খেলে উজ্জীবিত বাংলাদেশ। দলে খুব বেশি পরিবর্তনের প্রয়োজন নেইÑ সাকিবকে এই দিকটাই বেশি আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে। তবে নতুরা ঠিকই পারফর্ম করবেন বলে মনে করেন হাফিজ। তিনি আরও বলেন, ‘যারা দলে সুযোগ পেয়েছে ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফর্ম করেই তারা নির্বাচকদের আস্থা অর্জন করেছে। বেশ কয়েকজন নতুন খেলোয়াড় নিয়ে আমরা নতুন যুগের সূচনা করতে যাচ্ছি। সবাই মাঠে নামতে অধীর হয়ে আছে। আশা করছি আমরা ভাল করব।’ আত্মবিশ্বাস ঝড়লেও হাফিজই নিজেই রয়েছেন সমস্যার বেড়াজালে। সফরে তিন ভার্সনেই দলে আছেন, তবে আজই ভারতে আইসিসির আনুষ্ঠানিক এ্যাকশন পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে তাকে। এক সপ্তাহের মধ্যে ফল বেরোবে। এ্যাকশন বৈধ হলে বল করতে পারবেন, নইলে হাফিজকে কেবল ব্যাটসম্যান হিসেবেই খেলতে হবে! তরুণ্যে ভরা দল, তাই এ্যাকশন বৈধ না হলে হয়ত ব্যাটসম্যান হিসেবেই ওপেনিংয়ে জায়াগ পাবেন ২০০৩ থেকে পাকিস্তানের হয়ে ৪০ টেস্ট, ১৫৫ ওয়ানডে ও ৬০ টি২০ খেলা অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার।
×