ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শেখ জামাল ৪-১ ফরাশগঞ্জ

শেখ জামালের শুভসূচনা ফরাশগঞ্জকে হারিয়ে

প্রকাশিত: ০৬:১৭, ৮ এপ্রিল ২০১৫

শেখ জামালের শুভসূচনা ফরাশগঞ্জকে হারিয়ে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে বহুল প্রতীক্ষিত ‘মান্যবর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ।’ বেলুন উড়িয়ে লীগের অষ্টম আসরের উদ্বোধন করেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার। সঙ্গে ছিলেন বাফুফের সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী, সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ, সদস্য শেখ মোঃ মারুফ হাসানসহ অনেকে। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী দিনে একটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। সে ম্যাচে লীগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব লিমিটেড ৪-১ গোলে ফরাশগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাবকে উড়িয়ে দিয়ে শুভসূচনা করে। প্রথমার্ধে খেলার স্কোর ছিল ১-১। জামালের পক্ষে জোড়া গোল করেন ল্যান্ডিং ডার্বোয়ে। বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লীগের রানার্সআপ ‘নীলকুঠি’ খ্যাত ফরাশগঞ্জ এই হারে বদলা নিতে ব্যর্থ হলো জামালের বিরুদ্ধে। প্রিমিয়ার লীগে শেখ জামাল-ফরাশগঞ্জ সর্বশেষ মুখোমুখি হয়েছিল ২০১১-১২ লীগ মৌসুমে। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ১৪ মে দ্বিতীয় লেগের খেলায় ২-০ গোলে জামালকে হারিয়ে অঘটন ঘটিয়েছিল ফরাশগঞ্জ! মঙ্গলবারের ম্যাচে তারাই কিন্তু প্রথম গোল করে জামালশিবিরে আতঙ্ক ছড়ায়। তবে জামাল একে একে চার গোল করে ঠিকই প্রমাণ করে দেয়, তারাই সেরা। খেলার বিরতির সময় অঝোর ধারায় বৃষ্টি নামলে তাতে জামালের গোলবন্যা বইয়ে দিতে কোন সমস্যা হয়নি। শেখ জামাল এবার মৌসুম-সূচক ফেডারেশন কাপ জিতেছে। দলের বেশিরভাগ খেলোয়াড়ই জাতীয় দল এবং যুবদলের হয়ে খেলায় পুরো দল নিয়ে বেশিদিন অনুশীলন করতে পারেনি কোচ মারুফুল হকের অধীনে। ফলে প্রস্তুতি তেমনটি হয়নি। ম্যাচের আগের দিন জামালের অধিনায়ক নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেছিলেন, ‘আমরা লীগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন। শিরোপা ধরে রাখতে চাই এবং প্রথম ম্যাচেই জয় দিয়ে লীগে শুভসূচনা করতে চাই।’ জামাল প্রথম ম্যাচ জিতে শুভসূচনা করেছে ঠিকই, কিন্তু মঙ্গলবারের ম্যাচে মাঠে দেখা যায়নি নাসিরকে। কারণ হচ্ছে চোটজনিত সমস্যা। তার পরিবর্তে ডিফেন্ডার ইয়ামিন আহমেদ অধিনায়কত্ব করেন। ফরাশগঞ্জের দলীয় অধিনায়ক সুজন চৌধুরী বলেছিলেন, জামালের বিপক্ষে তাদের চেষ্টা থাকবে ভাল কিছু করার। ম্যাচে প্রথম গোল করে তেমন ইঙ্গিত দিয়েছিল ফরাশগঞ্জ। কিন্তু জামালের পেশাদারিত্ব আর অভিজ্ঞতার কাছে আত্মসমপর্ণ করতে বাধ্য হয় তারা। শক্তির বিচারে জামাল ও ফরাশগঞ্জের মধ্যে অনেক ব্যবধান। কিন্তু খেলার প্রথমার্ধ দেখে উল্টোটিই পরিলক্ষিত হয়েছে! ফরাশগঞ্জ বার বার আক্রমণ শাণায় হলুদ জার্সিধারী জামালের গোলমুখে। সেগুলো প্রতিহত করতে গিয়ে হিমশিম খেয়ে যায় জামাল বাহিনী। ম্যাচের তখন ৮ মিনিট। এ সময় ফরাশগঞ্জের মিডফিল্ডার জহিরুল ইসলাম প্রতিপক্ষের বক্সে বল পাস দেন নাইজিরিয়ান সতীর্থ মিডফিল্ডার এ্যাকিনইয়েলি পিটারকে। তিনি বল নিয়ে ছোট বক্সে ঢুকে পড়ার পড় জামাল ডিফেন্ডার কেষ্ট কুমার তাকে ফাউল করে ফেলে দেন। সেটা বিধি সম্মত না হওয়ায় রেফারি মিজানুর রহমান পেনাল্টির নির্দেশ দেন। নিখুঁত শটে জামালের জাল কাঁপান পিটার। তবে জামালের খেলোয়াড়রা শট নেয়ার আগে বক্সে ঢুকে পড়লে পিটারকে আবারও শট নিতে হয়। পিটার একই স্টাইলে আবারও গোল করেন (১-০)। উল্লাসে ফেটে পড়ে ফরাশগঞ্জ দল। ঝাঁপিয়ে পড়েও গোলরক্ষক মাজহারুল ইসলাম গোল ঠেকাতে পারেননি। তবে সমতায় ফিরিয়ে আনতে বেশিক্ষণ লাগেনি মারুফুল হকের শিষ্যদের। ১৫ মিনিটে বাঁপ্রান্ত থেকে ডিফেন্ডার ইয়ামিন আহমেদ বল দেন ফরাশগঞ্জের বক্সে দাঁড়িয়ে থাকা হাইতিয়ান সতীর্থ ওয়েডসন এ্যানসেলমেকে। দর্শনীয় শটে ফরাশগঞ্জের জালে পাঠান গত লীগের সর্বোচ্চ গোলদাতা ওয়েডসন (১-১)। ৪৮ মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ের দুর্দান্ত ফ্রিকিকে ব্যবধান বাড়ান জামালের গাম্বিয়ান ফরোয়ার্ড ল্যান্ডিং ডার্বোয়ে (২-১)। ৭৫ মিনিটে ওয়েডসনের ব্যাকপাসে বল পেয়ে ডি-বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ের দুর্দান্ত-উড়ন্ত শটে ফরাশগঞ্জ গোলরক্ষক-অধিনায়ক সুজন চৌধুরীকে পরাস্ত করেন জামালের গত লীগের অধিনায়ক-মিডফিল্ডার মামুনুল ইসলাম (৩-১)। ইনজুরি সময়ে (৯০+১) আরেকটি গোল করে ফরাশগঞ্জের পরাজয়ের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন জামালের ল্যান্ডিং ডার্বোয়ে (৪-১)। রেফারি খেলা শেষের বাঁশি বাজালে পূর্ণ তিন পয়েন্ট ও সন্তুষ্টি নিয়ে মাঠ ছাড়ে শেখ জামাল। জামালের পরের ম্যাচ রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটির বিরুদ্ধে, ১১ এপ্রিল, বিকেল ৪টায়। আর ফরাশগঞ্জ তাদের দ্বিতীয় ম্যাচে মোকাবেলা করবে ব্রাদার্স ইউনিয়ন লিমিটেডের, ১৭ মার্চ, বিকেল সোয়া ৪টায়।
×