ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

চেয়ারম্যান হয়েই ফিরলেন শুক্লা

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ৮ এপ্রিল ২০১৫

চেয়ারম্যান হয়েই ফিরলেন শুক্লা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আবারও সেই রাজীব শুক্লাকেই চেয়ারম্যান হিসেবে বেছে নিল জগমোহন ডালমিয়ার বোর্ড। সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগের (আইপিএল) চেয়ারম্যান হিসেবে নিজের জায়গা ফিরে পেলেন রাজীব শুক্লা। ২০১৩ সালে আইপিএলের ফিক্সিং কা-ের বিতর্কে এই পদ থেকেই সরে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। আইপিএলের অষ্টম সংস্করণ শুরুর দুইদিন আগে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আইপিএল কমিটির এই তালিকা প্রকাশ করা হয়। এর ফলে শ্রীনিবাসনের ঘনিষ্ট রঞ্জিব বিসওয়ালকে সরতে হলো। চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে থাকা অজয় শিরকেও পদ থেকে বঞ্চিত হতে হলো। ‘সাপও মরল, লাঠিও ভাঙল না’ নীতিতে আবারও চেয়ারম্যানের পদটি দখল করে নিলেন রাজীব শুক্লা। দুই বছর আগে আইপিএল স্পট ফিক্সিং কা-ে ধরা পড়েন তিনি। আর এরপরই টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরে দাঁড়ান শুক্লা। কিন্তু দুই বছরের বিরতি শেষে সেই পদেই ফিরলেন তিনি। আইপিএলের চেয়ারম্যান কে হবে? এই প্রশ্নে বেশ কয়েকদিন ধরেই আলোচনা হচ্ছিল। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হিসেবে সম্প্রতিই নির্বাচিত হন জগমোহন ডালমিয়া। ২০১৩ সালে ফিক্সিং কা-ে জড়িত থাকার কারণে ভারতের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের ভিত্তিতে সরিয়ে দেয়া হয় সাবেক বোর্ড প্রধান শ্রীনিবাসনকে। আর তারই উত্তরসূরি হিসেবে আবারও ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন জগমোহন ডালমিয়া। তাই তার সমর্থিত প্রার্থী এবার আইপিএলের চেয়ারম্যান হতে যাচ্ছেন তা নিয়েই গুঞ্জন ছিল। কিন্তু অবশেষে শ্রীনিবাসনের যেন সব শেকড়ই কেটে দিলেন ডালমিয়া। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের বিভিন্ন ওয়ার্কিং কমিটি গঠনের দিকে তাকিয়ে ছিল সারা ক্রিকেট দুনিয়ারই লোকজন। নতুন সভাপতি জগমোহন ডালমিয়া সমঝোতা অনুযায়ী আইসিসি চেয়ারম্যান ও সাবেক সভাপতি এন শ্রীনিবাসনের মত অনুযায়ী চলেন কি না, সেটা দেখার অপেক্ষা ছিল। কিন্তু ডালমিয়া কার্যত শ্রীনিবাসনের সব অনুরোধ উড়িয়ে দিলেন। তার পছন্দের কোন প্রার্থীকেই গুরুত্বপূর্ণ কোন পদে বসাননি ডালমিয়া। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, শ্রীনিবাসন সরাসরি বিসিসিআইকে বলেছিলেন, সদ্য আইসিসি সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ানো মুস্তফা কামাল-কা-ের ফলে বাংলাদেশ সফর বাতিল করুক ভারত। কিন্তু ডালমিয়া সফর তো চালু রেখেছেনই; বাংলাদেশের অনুর্ধ-১৭ দলকে সংবর্ধনা দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন বন্ধুত্ব আরও বাড়াতে চান তিনি। আইপিএল চেয়ারম্যান পদে শ্রীনিবাসনের লোক ছিলেন রঞ্জিব বিসওয়াল; ডালমিয়া সেখানে বসিয়ে দিয়েছেন একেবারে শ্রীনিবাসন বিরোধী রাজীব শুক্লাকে। এ ছাড়া শ্রীনিবাসনের ঘোরতর সমালোচক জ্যোতিরাদিত্য ও চেতনকে বসানো হয়েছে মার্কেটিং ও ফিন্যান্স কমিটিতে। সৌরভকে পছন্দ করতেন না শ্রীনিবাসন; আর তাকে আনা হয়েছে আইপিএল কমিটিতে। শ্রীনিবাসন চেয়েছিলেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের ক্রিকেটার সুনীল নারাইনকে আইপিএলে নিষিদ্ধ করা হোক। উল্টো ওয়েস্ট ইন্ডজের তরুণ প্রতিভাবান এই ক্রিকেটারকে প্রথম ম্যাচ থেকেই খেলার জন্য ছাড়পত্র দিয়ে দিয়েছে বোর্ড। সবমিলিয়ে শ্রীনিবাসন অবশেষে নিজের লোকেদের বোর্ডেই কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন। শ্রীনি ক’দিন আগে বোর্ড প্রেসিডেন্টকে রীতিমতো হুমকি দিয়েছিলেন যে, তেমন হলে তিনি এই সর্বোচ্চ চেয়ারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনবেন। বোর্ডের সংবিধান অনুযায়ী পাঁচ সদস্য মিলে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে পারেন। এরপর সেটা পাস করাতে হয় দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থনসহ। শ্রীনির ১৫-১৬ ভোট থাকলেও দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থন নেই। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ শুরু থেকেই ক্রিকেটেপ্রেমীদের মন জয় করে নেয়। কিন্তু গত মৌসুমে এসেই ফিক্সিং কা-ে জড়িয়ে পড়ে ক্রিকেটারসহ-কর্মকর্তারা। এর ফলে আজ থেকে শুরু হতে যাওয়া আইপিএলের অষ্টম সংস্করণ নবগঠিত এই কমিটির জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ।
×