ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

খাদ্য পানি ওষুধের অভাবে শরণার্থীরা ধুঁকছে

ফিলিস্তিনী শরণার্থীদের রক্ষার আহ্বান জাতিসংঘের

প্রকাশিত: ০৪:০৯, ৮ এপ্রিল ২০১৫

ফিলিস্তিনী শরণার্থীদের রক্ষার আহ্বান জাতিসংঘের

সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের ইয়ারমুকে সিরীয় ফিলিস্তিনী শরণার্থী শিবিরে পরিস্থিতির ক্রমেই অবনতি হওয়ায় শরণার্থীদের রক্ষার জন্য আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। খবর বিবিসি অনলাইনের। জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা শিবিরের ১৮ হাজার শরণার্থীর অবস্থা অমানবিক বলে উল্লেখ করেছেন। ইসলামিক স্টেট (আইএস) এপ্রিলে শিবিরে হামলা চালালে এ পরিস্থিতির উদ্ভব হয়। সিরীয় সরকারবিরোধী ফিলিস্তিনী মিলিশিয়া ও ফ্রি সিরিয়ান আর্মির কিছুসংখ্যক যোদ্ধা আইএসের বিরুদ্ধে এ লড়াইয়ের নেতৃত্বে রয়েছে। ১৫ সদস্যবিশিষ্ট নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি জর্দানের রাষ্ট্রদূত দীনা কাওয়ার শিবিরের শরাণার্থীদের রক্ষার জন্য এবং সেখানে মানবিক ত্রাণ সাহায্য ও ওষুধ প্রবেশ করতে দেয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। ফিলিস্তিনী জাতিসংঘ ত্রাণ সংস্থার পিয়েরে ত্রাহেনবুল নিরাপত্তা পরিষদে পাঠানো এক রিপোর্টে বলেছেন, শিবিরের পরিস্থিতি আগের যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি ভয়াবহ। পর্যবেক্ষকরা বলেছেন, আইএস এখন শিবিরের প্রায় ৯০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে। জতিসংঘে ফিলিস্তিনী রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মনসুর বলেছেন, শরাণার্থীদের রক্ষাই হচ্ছে তার সরকারের প্রধান কাজ। তিনি সিরিয়ার অনত্র বা বিদেশে এ শরণার্থীদের স্থানান্তরের জন্য জাতিসংঘভুক্ত সদস্য রাষ্টগুলোর প্রতি আবেদন জানান। বৈরুতে জিম মুইরেব বিশ্লেষণে বলা হয়, ইয়ারমুক শিবির কৌশলগত অবস্থানে থাকায় সিরীয় সরকারের সব সময় একটা আশঙ্কা রয়েছে যে, রাজধানীর কেন্দ্রস্থলে বিদ্রোহীদের আক্রমণের জন্য সহায়ক হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে এ শিবির। কিছু রিপোর্টে বলা হয়েছে, বর্তমানে এলাকাটির প্রায় ৯০ শতাংশ আইএসের নিয়ন্ত্রণে থাকায় দামেস্কের কেন্দ্রস্থলের খুব কাছে রয়েছে তারা আগের যে কোন সময়ের চেয়ে। ইয়ারমুকের সরকারী হেলিকপ্টার থেকে ব্যারেল বোমাবর্ষণ করা হচ্ছে এবং তাই সরকারী সন্ত্রাসীদের ঘাঁটি হিসেবে বিদ্রোহীদের পুরো আন্দোলন নস্যাত করে দিতে পারে বলে রিপোর্টে বলা হয়েছে। যদিও আইএসের প্রভাব সম্প্রসারণে উৎসাহিত করার জন্য সরকারকে অভিযুক্ত করছে বিদ্রোহী গ্রুপগুলো। ফিলিস্তিন মুক্তি সংস্থার কর্মকর্তা আহমেদ মাজদালানি বলেছেন, শিবিরে একটি মানবিক করিডর প্রতিষ্ঠায় সিরীয় সরকার ও ফিলিস্তিনী গ্রুপগুলোর একটি প্রতিনিধি দল আলোচনার জন্য দামেস্কে রওনা হয়েছে। জাতিসংঘের অন্য ত্রাণ কর্মকর্তা ক্রিস গানেস বলেছেন, শিবিরের পরিস্থিতি অত্যন্ত অমানবিক। এখানে খাদ্য নেই, পানি নেই এবং বলতে গেলে ওষুধও নেই। মানুষ গৃহবন্দী হয়ে রয়েছে। রাস্তায় লড়াই চলছে। বোমাবর্ষণেরও খবর পাওয়া যাচ্ছে। এগুলোর অবসান হতে হবে এবং বেসামরিক লোকদের উদ্ধার করতে হবে। পর্যবেক্ষকরা বলেছেন, রবিবারের তীব্র লড়াই বিচ্ছিন্ন সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। তাঁরা বলেন, আইএস ও আল কায়েদার শাখা নুসরা ফ্রন্ট ইয়ারমুখে একযোগে লড়ছে। সিরিয়ায় পাঁচ বছরের এই গৃহযুদ্ধে দুই লাখের বেশি মানুষ মারা গেছে এবং ১ কোটি ১০ লাখের বেশি লোক গৃহচ্যুত হয়েছে।
×