ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

৮ মাসের সর্বনিম্ন অবস্থানে ডিএসইর সূচক

প্রকাশিত: ০৪:২৭, ৭ এপ্রিল ২০১৫

৮ মাসের সর্বনিম্ন অবস্থানে ডিএসইর সূচক

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পতনের ধারা থেকে কোনভাবেই বের হতে পারছে না পুঁজিবাজার। সোমবারও মূল্য সূচকের মাঝারি ধরনের পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে উভয় পুঁজিবাজারে। দেশের প্রধান বাজারে ৭০ ভাগ কোম্পানির দরপতনের দিনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্য সূচক ৩৩ কমে দাঁড়ায় ৪ হাজার ৩৯৭ পয়েন্টে; যা গত ৮ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থান। এর আগে ২০১৪ সালের ২১ জুলাই ডিএসইর সার্বিক মূল্য সূচকের অবস্থান ছিল ৪ হাজার ৩৯৪ পয়েন্ট। এরপরে ডিএসইর এই সূচক আর চার হাজার চারশ পয়েন্টের নিচে নামেনি। গত বছরের অক্টোবর মাসে ডিএসইএক্স সূচক ৫ হাজার পয়েন্ট ছাড়িয়ে রেকর্ড সৃষ্টি করেছিল। তবে বিনিয়োগকারীদের সেই সুখস্মৃতি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের হরতাল ও অবরোধ শুরুর আগেই গত ডিসেম্বর থেকে পুঁজিবাজারে আবারও দরপতন শুরু হয়। এই পতনের ধারা থেকে কোনোভাবেই রেহাই পাচ্ছে না পুঁজিবাজার। বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, দেশের চলমান রাজনৈতিক সহিংসতার কারণেই পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না। তবে মাঝে মাঝে সূচক ও লেনদেন বাড়লেও তা বেশিদিন স্থায়ী হচ্ছে না। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা থাকলেও বেলা ১২টার পর থেকে সূচক কমতে থাকে। মানবতা অপরাধে জামায়াত নেতা কামারুজ্জামানের ফাঁসির আদেশ বহাল রেখে রায় ঘোষণার পরে মঙ্গল ও বুধবার ফের হরতালের ডাক দেয় জামায়াতে ইসলামী। যার কারণে সূচক ও লেনদেনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ফলে ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমে গেছে। এদিন ডিএসইতে ৩০৫ কোটি ৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা আগের দিনের তুলনায় প্রায় ৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকা কম। রবিবার এই বাজারে লেনদেন হয়েছিল ৩১১ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এদিন ডিএসইতে মোট লেনদেনে অংশ নেয় ৩১০টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৫৬টির, কমেছে ২১৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৬টির শেয়ার দর। এদিকে ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ৯ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৭৫ পয়েন্টে। ডিএস৩০ সূচক ১১ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে এক হাজার ৬৮৫ পয়েন্টে। ডিএসইতে দিনটিতে খাতভিত্তিক লেনদেনের সেরা স্থান দখল করেছে জ্বালানি এবং শক্তি খাতের কোম্পানিগুলো। সারাদিনে খাতটির মোট লেনদেনের পরিমাণ ৬৫ কোটি টাকা, যা মোট লেনদেনের ২২ ভাগ। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল ওষুধ এবং রসায়ন খাতের কোম্পানিগুলো। সারাদিনে খাতটির মোট লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫২ কোটি টাকা, যা মোট লেনদেনের ১৮ ভাগ। তৃতীয় অবস্থানে ছিল বস্ত্র খাতটি। বস্ত্র খাতের মোট ৩৮ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে, যা মোট লেনদেনের ১২ ভাগ। ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে থাকা দশ কোম্পানি হচ্ছে- ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন এ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, শাশা ডেনিমস, ইফাদ অটোস, এসিআই, এমজেএল বাংলাদেশ লিমিটেড, স্কয়ার ফার্মা, গ্রামীণফোন লিমিটেড, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড এবং ফার্মা এইড । দরবৃদ্ধির সেরা কোম্পানিগুলো হলো : বিডি ল্যাম্পস, ইফাদ অটোস, প্রাইম ব্যাংক, মুন্নু সিরামিক, মুন্নু স্টাফলারস, মোজাফফর হোসেন স্পিনিং, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স, আইসিবি ৩য় এনআরবি, তুং হাই নিটিং এবং সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। দর হারানোর সেরা কোম্পানিগুলো হলো : দুলা মিয়া কটন, কনফিডেন্ট সিমেন্ট, সালভো কেমিক্যাল, বিডি ওয়েল্ডিং, জাহিন স্পিনিং, আইএফএসএল মিউচ্যুয়াল ফান্ড, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল, ফাস ফাইনান্স, বিচ হ্যাচারি ও খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ। সোমবার ঢাকার মতো অপর বাজারে সব ধরনের সূচকের পতন ঘটেছে। সেখানেও আদালতের রায় কিছুটা বিনিয়োগকারীদের কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত করেছে। সারাদিনে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ২৮ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এদিন সিএসই সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১২৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৪৫৩ পয়েন্টে। সিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২৩৯টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৩৬টি, কমেছে ১৭৯টি এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৪টি কোম্পানির শেয়ারের। সিএসইর লেনদেনের সেরা কোম্পানিগুলো হলো : ইউনাইটেড পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড, লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, শাশা ডেনিমস, মবিল যমুনা বিডি, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেড, ইফাদ অটোস, বেক্সিমকো, অগ্নি সিস্টেম, গ্রামীণফোন ও খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড।
×