ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

৬ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জনে স্থিতিশীলতার তাগিদ সিপিডির

প্রকাশিত: ০৬:০২, ৬ এপ্রিল ২০১৫

৬ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জনে স্থিতিশীলতার তাগিদ  সিপিডির

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বিএনপি-জামায়াতের চলমান সহিংসতায় দেশে মোট উৎপাদন ক্ষতি হয়েছে ৪ হাজার ৯০০ কোটি টাকার। জিডিপির হিসেবে তা দশমিক ৫৫ শতাংশ। তবে, ১৬ এ্যাসোসিয়েশনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী প্রতিদিনের ক্ষতির পরিমাণ ২ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা; যা এক দিনের জিডিপির প্রায় ৬১ দশমিক ৫ শতাংশ। রবিবার দুপুরে রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘বাজেট প্রস্তাবনা ২০১৫-২০১৬’ এ তথ্য জানানো হয়। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিপিডির সম্মানিত রিসার্চ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, রাজনৈতিক সহিংসতায় যে ক্ষতি তা শুধু উৎপাদনে। প্রাক্কলিত প্রবৃদ্ধি সাড়ে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে হিসাব করা হয়। আর সিপিডির অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, এটা অর্থনীতির সার্বিক উৎপাদন ক্ষতি। যা সর্ব নিম্ন পর্যায়ের ক্ষতি। সার্বিক হিসাবে তা আরও বাড়বে। সিপিডির রিসার্চ ফেলো ও বাজেট প্রস্তাবনা কমিটির সমন্বয়ক তৌফিকুল ইসলাম খান তার ‘বাজেট প্রস্তাবনা-২০১৫-১৬’ উপস্থাপনায় বলেন, অবরোধের ৮১ দিন এবং হরতালের ৬৭ দিনে মাত্র ১১ খাতের ক্ষতির হিসাব করলে এই ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায়। সিপিডির বাজেট প্রস্তাবনায় বলা হয়, আগের অর্থবছরের (২০১৪-১৫) বাজেট ঘাটতি থাকায় সরকারকে সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নিতে হয়েছে। এখন কিছু কিছু সঞ্চয়পত্রের সুদ পুনঃনির্ধারণ করা উচিত। তবে, ব্যাংক ঋণে সুদের হার লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও কম আছে। এছাড়া বৈদেশিক মুদ্রার অন্যতম খাত তৈরি পোশাক রফতানিতেও গত জুলাই-ফেব্রুয়ারি মাসের প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৪ শতাংশ ছিল। যা সন্তোষজনক নয়। নিকটতম প্রতিযোগী দেশগুলোর প্রবৃদ্ধি একই সময়ে ২০ শতাংশেরও বেশি। আমদানি পাওনা পরিশোধের হার ছিল শক্ত অবস্থানে। তবে, বছর শেষে তা কমতে পারে। রাজস্ব আয়ের সব চেয়ে বড় যোগানদাতা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ এর আধুনিকায়ন। রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে করের আওতাও আরও বাড়াতে হবে। পাশাপাশি মুদ্রা পাচাররোধ আর শুল্ক ফাঁকি রোধেও এনবিআরকে সতর্ক হতে হবে। এছাড়া কর বহির্ভূতখাত থেকে রাজস্ব আদায় বাড়ানো দরকার। মামলা জটের কারণে আটকে থাকা ২৫ হাজার ৭৮২ কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ে এডিআরের মাধ্যমে দ্রুত সমাধানে আসতে পারলে সরকারের রাজস্ব আয়ে গতি পাবে। এছাড়া প্রস্তাবিত নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন করতে গেলে প্রায় ২২ হাজার ৯৫৩ কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় হবে। এটা হবে সরকারের অতিরিক্ত ব্যয়। সরকার এ ঝুঁকি মোকাবেলায় ধাপে ধাপে নতুন পে-স্কেল বাস্তবায়ন করতে পারে। তবে, বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্পে নেয়া ১১ বিদ্যুত উৎপাদন কেন্দ্রসহ ২৬টি প্রকল্প সময়মত বাস্তবায়ন হলে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সহায়ক হবে। বেসরকারী খাতের বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়বে। একই সঙ্গে প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের উপরে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে।
×