ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কক্সবাজারে নদীর নাব্য হ্রাস

প্রকাশিত: ০৫:১১, ৬ এপ্রিল ২০১৫

কক্সবাজারে নদীর নাব্য হ্রাস

এইচএম এরশাদ, কক্সবাজার ॥ অবৈধ দখলে চলে যাওয়ার কারণে কক্সবাজার জেলার অনেক স্মৃতি বিজড়িত প্রসিদ্ধ চারটি নদী অস্তিত্ব ও নাব্যতা হারাতে বসেছে। প্রত্যহ নিধন করা হচ্ছে নদীর পাশে সৃজিত প্যারাবন। নদীগুলোর পাড়ে বিভিন্ন স্থানে দখল হয়ে গেছে উকূলীয় বনভূমি। ঘেরা- বেড়া দিয়ে ভূমি দখলে নিয়ে অবাধে কর্তন করছে সৃজিত বনাঞ্চলের গাছ। ওইসব ভূমিদস্যুদের কারণে বিরূপ প্রভাব পড়ছে পরিবেশের ওপর। খরস্রোতা নদীতে বর্তমানে ধু-ধু বালুচর আর উপকূলীয় বনভূমি পরিণত হচ্ছে আবাদি জমিতে। সেখানে অসংখ্য স্থাপনা গড়ে তুলছে চিহ্নিত ভূমিদস্যুরা। কক্সবাজার জেলার প্রধান প্রধান নদীগুলো হচ্ছে বাঁকখালী, নাফনদী, ঈদগাঁও ফুলেশ্বরী ও মাতামুহুরী নদী। নদীগুলো উৎপত্তিস্থলের বিষয়ে স্পষ্ট তথ্য না থাকলেও ভারত ও মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে এ ৪টি নদী। খরস্রোতা বাঁকখালী নদীর কিছু অংশ জেলার কক্সবাজার সদর, রামু ও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ঘিরে প্রবাহিত রয়েছে। পার্বত্য এলাকা হতে সৃষ্টি হয়ে আসা প্রমত্তা মাতামুহুরী ও ঈদগাঁও ফুলেশ্বরী নদী দুইটি কক্সবাজার জেলার চকরিয়া, কক্সবাজার সদর, রামু ও বান্দরবানের লামা ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। টেকনাফ, উখিয়া ও নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম-তুমব্র সীমানা হয়ে প্রবাহিত নাফ নদীটির ওপারে মিয়ানমার। এ নদীগুলো সরাসরি বঙ্গোপসাগরে সঙ্গে মিলিত হয়েছে। কক্সবাজার জেলার ভিতর দিয়ে প্রবাহিত এই চারটি নদী পলি জমে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। ফলে গভীরতা ও প্রশস্ততা কমার পাশাপাশি কমছে এর খরস্র্রোতা। পাশাপাশি ভরাট হওয়া অংশটুকু প্রতিযোগিতামূলকভাবে দখল করে নিচ্ছে এক শ্রেণীর প্রভাবশালী ব্যক্তি। এক সময়ের প্রমত্তা বাঁকখালী, ঈদগাঁও ফুলেশ্বরী, নাফনদী ও মাতামুহুরী নদী এখন চিকন খালে পরিণত হয়েছে। কোথাও কোথাও এই নদীগুলোর বুকজুড়ে দেখা দিয়েছে শুধু ধু-ধু বালুচর। প্রায় স্রোতহীন নদীগুলোর পাশেই অগভীর নলকূপ স্থাপন করে এখন চাষ হচ্ছে আবাদী ফসলের। অথচ এক সময় নদীগুলো দিয়ে চলাচল করত বড় বড় নৌযান। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এ অঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ ও পণ্য আনা নেয়ার জন্য এ নদীগুলোই ছিল একমাত্র উপায়। কালের বিবর্তনে নতুন প্রজন্মের কাছে এ সব নদী এখন শুধু ইতিহাস।
×