ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সিডনির মেলব্যাগ ॥ অজয় দাশগুপ্ত

বঙ্গবন্ধুকন্যা, আসন্ন নির্বাচন আমাদের ভরসা

প্রকাশিত: ০৫:০৬, ৬ এপ্রিল ২০১৫

বঙ্গবন্ধুকন্যা, আসন্ন নির্বাচন আমাদের ভরসা

গণতন্ত্রের প্রধান ধারাই হলো নির্বাচন। আমাদের দেশে গণতন্ত্রের জন্য হাহাকার থাকলেও নির্বাচনের ব্যাপারে দলগুলো কেবলই বিবাদে বিশ্বাসী। বিশেষ করে এখন নামগোত্র হারিয়ে ফেলা বিএনপি কিছুদিন থেকে গণতন্ত্রের নামে আগুন জ্বালিয়ে মানুষ মারলেও নির্বাচনে তার আসা না আসার কারণ যেন একটাই। জিতলে আসব, হারলে সঠিক হয়নি এমন একটা অপধারণার শিকার বিএনপি আসন্ন মেয়র নির্বাচনে আসবে এমন আমরা ধরেই নিচ্ছি। বলা উচিত প্রায় এসেই গেছে। কথা হচ্ছে নির্বাচনের ব্যাপারে তাদের এই দু’মুখো ধারা কেন? অন্য যে কোন নির্বাচনে তারা আসবে, জিতবে বা ফলাফলে আস্থা রাখবে, কিন্তু জাতীয় নির্বাচনে আসতেই যত আপত্তি এটা কোন্ ধরনের রাজনীতি? সরকার তো একটাই, আর তারাই সব নির্বাচনের আয়োজক। এক জায়গায় বিশ্বাস করব, আরেক জায়গায় আগুন জ্বালাব এ নীতির দলকে মানুষ এখনও আস্থায় রাখে, এখনও এক শ্রেণীর মানুষ তাদের নামে পাগল এটা মানা যায় না। এর পেছনে যে কত ধরনের নোংরা রাজনীতি আর সুবিধাবাদ কাজ করে সেটা জানার পরও অন্ধদের চোখ খোলে না। এই অন্ধত্ব আজ প্রায় সর্বগ্রাসী। আমার মতে পাল্টে যাওয়া বাঙালীদের মনে-চোখে এখন সাম্প্রদায়িকতার নতুন আরেক চেহারা। ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে যে বিদ্বেষ আর রাজনীতি তার সঙ্গে দেশপ্রেমকে গুলিয়ে ফেলার কি কোন কারণ আছে? কোন্ রাজনীতি বাংলাদেশের ক্রিকেটকে এই জায়গা পর্যন্ত এনেছে? কোন্ নেতৃত্বে বাংলাদেশের ক্রিকেট বিশ্বব্যাপী সুনাম কুড়িয়েছে বা কোথায় এর গর্বের উৎস এটা কি আমাদের অজানা? শেখ হাসিনা এমন একজন নেতা যিনি পান থেকে চুন সব কিছুর খবর রাখেন। সময়ে তাঁকে কেউ ভুল বুঝলেও এক সময়ে তাঁর দূরদর্শিতা দেখে অবাক হওয়ার বিকল্প থাকে না। তিনি যে সঠিকভাবে দেখভাল করেন তার কারণেই আমাদের অনেক অর্জন আজও অম্লান। সাবের হোসেন চৌধুরীর হাত ধরে ক্রিকেটের দিন দিন বেড়ে ওঠার পর সে জায়গাটায় আজ নানা ধরনের মানুষ আর তাদের চিন্তা ভর করছে। দেশবাসী তথা বিশ্ব বাংলাদেশীর সে অধিকার আছে এবং থাকবে। কিন্তু সব বিষয়ে আওয়ামী বিরোধিতা আর মুক্তিযুদ্ধের চিন্তাকে অপমানের বিষয়টা এবারও দেখলাম সামনে নিয়ে আসা হয়েছে। একজন বাংলাদেশীও নিজের দেশের বিরুদ্ধে কথা বলেনি। কারও তেমন কোন ইচ্ছে ছিল বলেও মনে হয়নি। সবাই যার যার দৃষ্টিকোণে দেশের পাশে ছিল, আছে এবং থাকবে। অথচ এটাকেও এক ধরনের বিদ্বেষে পরিণত করার হাতিয়ার বানাতে চেয়েছে ধর্মান্ধরা। আমি নিশ্চিত, সময়মতো সাবধান না হলে আসন্ন নির্বাচনেও এর প্রভাব পড়ার দুর্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না। বাংলাদেশের মানুষকে আমরা কেন একটা সত্য তুলে ধরতে পারছি না যে, আসলে কারা দেশের মঙ্গল ও ভাল চায়। ধর্মের নামে এখন দেশ-বিদেশে যে সাম্প্রদায়িকতা আর নতুন জামায়াতীকরণ তাদের ঠেকাতে হলে আমাদের উদারতা যথেষ্ট নয়। চাই কৌশল। বিদেশে এখন মাসালা আর সভা-সমাবেশের নামে খুব কৌশলে মগজ ধোলাইয়ের কাজ চলছে। নতুন যে তথ্যটি পেলাম সেটি আরও ভয়ঙ্কর। দেশের পরিস্থিতি বিপদসঙ্কুল করে রেখে খুন-জখম, আগুন আর বোমাবাজি জারি রেখে মানুষকে দুর্বল করে রাখার পর তাদের সবক দেয়া হচ্ছেÑ এগুলো থেকে মুক্তির উপায় নাকি পোশাক আর খাদ্যে ধর্মপ্রাণ হয়ে ওঠা। শান্তি ও ন্যায়ের ধর্মকে বিপদে ফেলে নিজেদের রাজনৈতিক এ্যাজেন্ডা হাসিলের এমন চেষ্টা আগে দেখা যায়নি। ঘরে ঘরে, গৃহে গৃহে দেশে-বিদেশে জামায়াতী ক্যাম্পিং যে একেবারে নিষ্ফল তাও কিন্তু নয়। মানুষের দুর্বল মনে ঘা দিয়ে এরা আমাদের প্রগতির বারোটা বাজাচ্ছে। সবকিছুর সারমর্ম আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা বিরোধিতা। একটা কথা বুঝতে হবে, তারা কেন শেখ হাসিনার বিরোধিতা করে? শেখ হাসিনার বিরোধিতা করার মানেই হচ্ছে এই দেশকে আর রাজনীতিকে তাদের শত্রুমুক্ত করা। জাতিকে পাকিকরণের পথে নেয়ার প্রধান বাধা বঙ্গবন্ধুকন্যা। তিনি আছেন বলেই আজও আমরা ভাল স্বপ্ন দেখি। সুশীল নামের নব্য পাকি আর রাজাকাররা তাই তাঁকে বিরোধিতা করে। অথচ একটা বিষয় পরিষ্কার, শেখ হাসিনা না থাকলে অনেক কিছুই অন্য ধরনের হয়ে যেত। তিনি না থাকলে আমাদের জাতীয় অস্তিত্ব বিপন্ন হতো। আছেন বলেই আমরা এগোচ্ছি। আছেন বলেই খালেদা-তারেক মিডিয়াচক্রান্ত বারবার হেরে যায়। নির্বাচনে বিএনপির ফিরে আসায় আবারও প্রমাণিত শেখ হাসিনাই যথেষ্ট। আমরা যেন তাঁকে ঘিরেই আবর্তিত হতে পারি। এটা মুক্তিযুদ্ধের অসমাপ্ত কাজের জন্য জরুরীও বটে।
×