ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বদলে যাবে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতির বিন্যাস

ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি

প্রকাশিত: ০৩:৪৮, ৫ এপ্রিল ২০১৫

ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি

পরমাণু কর্মসূচী নিয়ে ইরান ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে যে সমঝোতায় পৌঁছেছে তাতে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে বিচিত্র দৃষ্টিভঙ্গিও দৃশ্যমান- যার মধ্যে আছে সৌদি আরবের সতর্ক আশাবাদ, ইরানের অভ্যন্তরীণ ভিন্নমত এবং ইসরাইলের প্রকাশ্য বিরোধিতা- এসবই ওয়াশিংটন যে সম্ভাব্য কঠিন কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে তার গুরুত্বকেই তুলে ধরে। এই চ্যালেঞ্জ এমনকি তার কিছু ঘনিষ্ঠতম মিত্রের কাছ থেকেও আসছে। এছাড়া এই প্রশ্নও উঠছে যে, এই সমঝোতায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের ৩৫ বছরেরও বেশি সময়ের বিচ্ছিন্নতা কাটিয়ে সামনের দিকে যাওয়ার যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে তারই প্রেক্ষিতে এই অঞ্চলের রাজনৈতিক গতি-প্রকৃতি কিভাবে নতুন করে বিন্যস্ত হবে। খবর ওয়াশিংটন পোস্টের। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ইরানকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের সক্ষমতা ও অন্যান্য পরমাণু প্রযুক্তি রেখে দেয়ার সুযোগ দেবে এমন যে কোন চুক্তির বিরোধিতায় তার অটল অবস্থান বজায় রেখে বলেছেন, এই চুক্তি ইসরাইলের অস্তিত্বকে বিপন্ন করবে এবং একটি ইরানী পরমাণু বোমা তৈরির পথকে সুগম করবে। নেতানিয়াহু বলেন, ‘এই কাঠামো চুক্তি ইরানের পরমাণু কর্মসূূচীকে বৈধতা দেবে, ইরানের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করবে এবং মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ও তার বাইরে ইরানের আগ্রাসন ও সন্ত্রাসী তৎপরতাকে বৃদ্ধি করবে।’ সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান কম সংঘাতমূলক দিকের ওপর জোর দিয়ে প্রেসিডেন্ট ওবামাকে বলেন, তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, চুক্তি এতদাঞ্চলে ‘স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা’ জোরদার করবে। গত বৃহস্পতিবার ইরানের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি ঘোষণার পর বাদশাহ সালমানের মন্তব্য সৌদি আরব বা তাঁর পারস্য উপসাগরীয় শরিক দেশগুলোর বড় ধরনের নীতি পরিবর্তনের কোন আভাস দেয় না। তবে শুক্রবার সরকারী সৌদি প্রেস এজেন্সি বাদশাহ সালমানের যে বিবৃতি প্রকাশ করেছে তাতে চুক্তির পূর্ণ অনুমোদনের বিষয়টি অনুপস্থিত ছিল- যাতে ইরানকে উপকৃত করতে পারে বলে অনুমিত যে কোন পদক্ষেপের ব্যাপারে উপসাগরীয় দেশসমূহ ও বৃহত্তর মধ্যপ্রাচ্যে অস্বস্তির বিষয়টিই প্রতিফলিত হয়। তেহরানে প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি টেলিভিশনে প্রদত্ত ভাষণে ইরানীদের উদ্দেশে বলেন, ইরানের সঙ্গে আলোচনাকারী ছয় প্রধান বিশ্বশক্তি এখন এ বিষয়টি মেনে নিয়েছে যে, ইরান এখন নিজের মাটিতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারবে- এতদিন বিশ্বশক্তিগুলো যে পদক্ষেপকে পরমাণু অস্ত্র বিস্তারের ঝুঁকি হিসেবে দেখে এসেছে। কিন্তু ইরান অবিচলভাবে বলে এসেছে যে, পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তির একটি স্বার্থরক্ষাকারী দেশ হিসেবে ইরানকে এই অধিকার দেয়া হয়েছে।
×