ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশ সফরে সাঈদ আজমল

প্রকাশিত: ০৬:৪৫, ৪ এপ্রিল ২০১৫

বাংলাদেশ সফরে সাঈদ আজমল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অপেক্ষার পালা শেষ হলো সাঈদ আজমলের। আসন্ন বাংলাদেশ সফরে পাকিস্তান দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে অবৈধ বোলিং এ্যাকশনের দায় মাথায় নিয়ে বেশ কিছুদিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে থাকা তুখোড় এই স্পিনারকে। পাশাপাশি ইনজুরি কাটিয়ে ফিরেছেন পেসার জুনায়েদ খান, রাখা হয়েছে তারকা অলরাউন্ডার মোহাম্মদ হাফিজকেও। শুক্রবার সফরের জন্য দল ঘোষণা করে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি)। গত বছর আগস্টে শ্রীলঙ্কা সফরে কলম্বো টেস্ট ও ডাম্বুলায় ওয়ানডেতে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেন সমসাময়িক ক্রিকেটের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর স্পিনার আজমল। ওই সিরিজেই গল টেস্টে তার বোলিং এ্যাকশন নিয়ে সন্দেহ পোষণ করে রিপোর্ট করেন ফিল্ড আম্পায়ার ইয়ান গোল্ড ও ব্রুস অক্সেনফোর্ড। নিয়ম অনুযায়ী আম্পায়ার সন্দেহ পোষণ করার ২১ দিনের মধ্যে আইসিসির এ্যাকশন সংশোধনীতে পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয় ক্রিকেটারকে। ২৫ আগস্ট অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেনে এ্যাকশন পরীক্ষায় অংশ নেন, এবং তাতে উতরে যেতে ব্যর্থ হলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধ (বোলিং করা থেকে) হন ৩৭ বছর বয়সী ডানহাতি অফস্পিনার। ঘটনাটি তখন বিশ্ব ক্রিকেটে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি করে। ৩৩ ম্যাচে ৬২ উইকেট নিয়ে ২০১৩ সালে সবার ওপরে ছিলেন আজমল। ওই বছর মাত্র ৮ টেস্টে শিকার ৩৯ উইকেট। সে ধারা অব্যাহত ছিল নিষিদ্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত। উভয় ঘারনায় উঠে আসেন আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষদের কাতারে। এমন পারফর্মারের নিষেধাজ্ঞায় আচমকা হতভম্ব পিসিবি তার এ্যাকশন সংশোধনের জন্য সাবেক গ্রেট সাকলাইন মুস্তাককে নিয়োগ দেয়। কমিটি গঠন করে চলে নিবিড় অনুশীলন। উদ্দেশ্য, যে করেই হোক বিশ্বকাপের আগে তাকে দলে ফিরে পাওয়া। যে জন্য তাকে বিশ্বকাপ দলেও রেখেছিল পিসিবি। কিন্তু শেষ মুহূর্তে নিজেকে সরিয়ে নেন তিনি। অবশ্য ৭ ফেব্রুয়ারি বিশ্বকাপ শুরুর ঠিক সাত দিন আগে আইসিসি কর্তৃক নিষেধাজ্ঞা মুক্ত হন আজমল! প্রায় আট মাস পর বাংলাদেশ সফরেই পুনরায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের স্বাদ পেতে যাচ্ছেন সাড়ে পাচ বছরের ক্যারিয়ারে ৩৫ টেস্টে ১৭৮ ও ১১১ ওয়ানডেতে ১৮৩ উইকেট শিকারি ঘূর্ণি তারকা। অন্যদিকে তারকা অলরাউন্ডার হাফিজের এ্যাকশন নিয়ে সর্বপ্রথম প্রশ্ন ওঠে গত বছর অক্টোবরে চ্যাম্পিয়ন্স লীগ টি২০ খেলার সময়। পরে টেস্টেও সেটি পরিলক্ষিত হলে ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধ হন তিনি (কেবল বোলিং করার ক্ষেত্রে)। ব্যাটসম্যান হিসেবে বিশ্বকাপের দলে থাকলেও ইনজুরির জন্য শেষ মুহূর্তে ছিটকে যান। আগামী ৯ তারিখ ভারতে আইসিসির অফিসিসিয়াল পরীক্ষায় উতরে গেলেই কেবল অলরাউন্ডার হাফিজকে বাংলাদেশ সফরে মাঠে দেখা যাবে। আর ইনজুরি থেকে সেরে ওঠায় প্রত্যাশিতভাবে থাকছেন পেসার জুনায়েদ খান। প্রত্যাবর্তন হচ্ছে ফাওয়াদ আলমেরও। বিশ্বকাপ খেলে ওয়ানডে থেকে বিদায় নেন মিসবাহ-উল হক ও অভিজ্ঞ তারকা শহীদ আফ্রিদি। ব্যাট হাতে ইউনুস খান ছিলেন জঘণ্য! সুতরাং ভবিষ্যতের দল তৈরিতে এদের পরিবর্তে তরুণদের প্রাধান্য দেয় পিসিবি। যেখানে ওয়ানডেতে সামনের সারিতে থাকবেন সরফরাজ আহমেদ, উমর আকমল, আহমেদ শেহজাদরা। ওয়ানডে অধিনায়ক করা হয়েছে আজহার আলীকে। ৩০ বছর বয়সী আজহার পাকিস্তানের হয়ে সর্বশেষ ওয়ানডে খেলেছেন ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে। রঙ্গিন পোশাকে অভিজ্ঞতাও খুব বেশি নয়। খেলেছেন মাত্র ১৪ ম্যাচ। তবু খেলোয়াড় ও বোর্ডের সঙ্গে সম্পর্ক ভাল হওয়ায় ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে আজহারকেই বেছে নেয় পিসিবি। অবশ্য টেস্টে মিসবাহ ও টি২০তে অধিনায়ক হিসেবে থাকছেন আফ্রিদি। ১৩ তারিখ বাংলাদেশে আসবে পাকিস্তান। ১৭ তারিখ থেকে ৩ ওয়ানডে, ১ টি২০ ও ২ টেস্টের দ্বিপক্ষীয় সিরিজে অংশ নেবে আজহার, আফ্রিদি ও মিসবাহর দল। টেস্ট দল ॥ মিসবাহ (অধিনায়ক), বাবর আজম, হাফিজ, সামি আসলাম, শফিক, আজহার, ইউনুস, হারিছ সোহেল, আজমল, ইয়াসির শাহ, জুলফিকার, সরফরাজ, ওয়াহাব, জুনায়েদ, সোহেল খান, রাহাত। ওয়ানডে দল ॥ আজহার (অধিনায়ক), আসলাম, সরফরাজ, হাফিজ, শফিক, ফাওয়াদ, রিজওয়ান, হারিছ, আজমল, ইয়াসির, ওয়াহাব, রাহাত, এহসান, সোহেল খান। টি২০ দল ॥ আফ্রিদি (অধিনায়ক), শেহজাদ, সরফরাজ, হাফিজ, মুক্তার আহমেদ, শোহাইব মাকসুদ, হারিছ, রিজওয়ান, আজমল, সাদ নাসিম, সোহেল তানভির, ওয়াহাব, সোহেল খান, গুল, জুনায়েদ।
×