ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আইসিসি থেকে পদত্যাগ

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ৪ এপ্রিল ২০১৫

আইসিসি থেকে পদত্যাগ

আইসিসি সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন আ হ ম মোস্তফা কামাল। দায়িত্ব পাওয়ার নয় মাসের মধ্যে তিনি তাঁর এই পদ থেকে পদত্যাগ করলেন। সদ্যসমাপ্ত বিশ্বকাপ ক্রিকেটের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলায় দেশের বিপক্ষে আম্পায়ারের পক্ষপাতদুষ্ট আম্পায়ারিংয়ের জন্য সারাবিশ্বে তোলপাড় শুরু হয়। খেলাটি ছিল বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে। ক্রিকেট বিশ্ব বলছে ওই ম্যাচে আম্পায়ারদের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল না। তাই ১৯ মার্চ অনুষ্ঠিত ম্যাচটি নানা কারণে আলোচনায় এসেছে। সেই খেলায় বাংলাদেশ হেরে যায় মূলত এ কারণেই এই মন্তব্য অনেকের। ওই ম্যাচকে কেন্দ্র করে আইসিসি সভাপতি হিসেবে পরিকল্পনামন্ত্রী মোস্তফা কামাল এ ব্যাপারে তাঁর অবস্থান তুলে ধরে নিজস্ব কিছু মন্তব্য করেছিলেন। মন্তব্যের পাশাপাশি নিজের কিছু পর্যবেক্ষণও তুলে ধরেছিলেন তিনি। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেছিলেন, ‘আম্পায়ারদের ভুল মেনে নিতে তাঁর আপত্তি নেই। কিন্তু ভুলটা শোধরানোর জন্য প্রযুক্তির সহায়তা না নেয়াতে তাঁর আপত্তি ছিল। আম্পায়ারও মানুষ- তাঁরও ভুল হতে পারে। বিচার-বিশ্লেষণ ভুলও হতে পারে। কিন্তু আমার যেটা পর্যবেক্ষণ ছিল সেটা হলো সেইদিন যদি প্রযুক্তি পূর্ণমাত্রায় ব্যবহার করতে পারতাম তাহলে আম্পায়ারদের সিদ্ধান্ত কতটা সত্য বা অসত্য সেগুলো ভালভাবে জানতে পারতাম। যে কারণে আম্পায়ারদের সিদ্ধান্তগুলো ছিল বিতর্কিত- এক পেশে।’ এই মন্তব্যের জন্য তাঁকে আইসিসি চেয়ারম্যান ও কর্তাব্যক্তিদের পক্ষ থেকে এক জরুরী বৈঠক ডেকে ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছিল। এ ব্যাপারে অনড় অবস্থানে থাকেন তিনি। যে কারণে বিশ্বকাপ ফাইনালে আইসিসি সভাপতি হিসেবে তাঁকে বাদ দিয়ে আইসিসি কর্তৃপক্ষ সংগঠনটির চেয়ারম্যানকে দিয়ে ট্রফি তুলে দেয়ার পর্বটি সম্পাদন করে। যা ক্রিকেট সংবিধানের পুরোপুরি পরিপন্থী। মোস্তফা কামালের এই পদত্যাগের মাধ্যমে ক্রিকেট বিশ্বে বাংলাদেশ মেরুদ- সোজা করে দাঁড়ানোর স্বকীয়তা আরও দৃঢ় হলো। বিশ্বকাপ শেষে দেশে ফিরে বুধবার বিমানবন্দরে তিনি তাঁর নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন। বিমানবন্দরে নিজের পদত্যাগের কারণ ব্যাখ্যা করে সাবেক আইসিসি সভাপতি গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, ক্রিকেট খেলাটি হয় আইনের মাধ্যমে, একটি সংবিধানের মাধ্যমে। এখানে কার কী কর্তব্য এবং সভাপতি হিসেবে আমার কী দায়িত্ব সে কথাও স্পষ্ট করে উল্লেখ রয়েছে। এখন সংবিধান মোতাবেক এর অনুচ্ছেদ ৩.৩ (বি) ধারা মোতাবেক আইসিসির যেসব ওয়ার্ল্ড ইভেন্টগুলো হয় সেখানে সমস্ত ইভেন্টে ট্রফি দেয়ার একমাত্র দায়িত্ব সভাপতির। আইসিসি চেয়ারম্যানকে দিয়ে ২৯ মার্চ মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড খেলা শেষে চ্যাম্পিয়ন দলের অধিনায়কের হাতে ট্রফি তুলে দিয়ে ক্রিকেটে এক ন্যক্কারজনক অধ্যায়ের সূচনা করেছে। যা বিশ্ব ক্রিকেটের স্বার্থে কোনভাবেই প্রত্যাশিত হতে পারে না। যে কোন আন্তর্জাতিক খেলা বিভিন্ন দেশের মানুষ অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গে লক্ষ্য করে। সাম্প্রতিককালে একটি অতি জনপ্রিয় খেলা হচ্ছে ক্রিকেট। এটা পরিচ্ছন্ন খেলা। এই খেলাটি কোন কারণে বিতর্কিত হোক, অপরিচ্ছন্নতাযুক্ত হোক তা কেউ প্রত্যাশা করে না। আজকের প্রযুক্তির যুগে বিশ্ব যখন হাতের মুঠোয় তখন এই প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত হলে এই ধরনের বিতর্কের স্থান থাকে না। এতে কোন ধরনের অনভিপ্রেত পরিস্থিতিরও সৃষ্টি হওয়ার সুযোগ থাকে না।
×