ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

রাজধানীতে অজ্ঞান পার্টির সংঘবদ্ধ চক্রটি এখন তৎপর

প্রকাশিত: ০৬:২৪, ৪ এপ্রিল ২০১৫

রাজধানীতে অজ্ঞান পার্টির সংঘবদ্ধ চক্রটি  এখন তৎপর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গরম বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা। অজ্ঞানপার্টি মূলত একটি বিশাল সংঘবদ্ধ চক্র। এ চক্রে চোর, ডাকাত, খুনী ও অনেক অসাধু স্বর্ণ ব্যবসায়ী জড়িত। অজ্ঞান করার কাজে ব্যবহৃত পাকিস্তানের তৈরি আমদানি নিষিদ্ধ এটিভেন ট্যাবলেট বিক্রিকারীদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। এটিভেন ট্যাবলেটটি বিমানবন্দর ও পাকিস্তান-ভারত স্থল সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। বুধবার অজ্ঞান পার্টির তিন মহিলা সদস্যসহ সাত জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। সাজাপ্রাপ্তরা এমন তথ্য দিয়েছে গোয়েন্দাদের। গত মঙ্গলবার রাজধানী থেকে পুলিশের হাতে গ্রেফতারকৃত অজ্ঞান পার্টির সদস্য শাহ আলম (৪০), রুবেল (২০), জামাল (২৭) ও কাবিলাকে (৪২) নয় মাসের এবং মোছাঃ সুফিয়া (৩৫), মোছাঃ রওশন আরা (৪০) ও মোছাঃ নার্গিসকে (৩৮) ছয় মাসের করে কারাদ- দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। সাজাপ্রাপ্তদের কাছ থেকে মানুষ অজ্ঞান করার মলম ও এপিট্রা নামক ট্যাবলেট উদ্ধার হয়েছে। গরমের সময়ে অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা বেশি থাকে। গরমের কারণে অনেক মানুষই কোমলপানীয়, ডাব, শরবত, আইসক্রীমসহ ঠা-া জাতীয় খাবার খেতে পছন্দ করে। সুযোগটিকে কাজে লাগায় অজ্ঞানকারীরা। যদিও রোজা, ঈদ, পুজো ও বিভিন্ন জাতীয় উৎসবেও তারা তৎপর থাকে। অজ্ঞানকারীরা ফুটপাত, লঞ্চঘাট, রেল ও বাসস্টেশন, হাট-বাজারসহ নানা জনবহুল জায়গায় হকার হিসেবে অবস্থান করে। কোমলপানীয়, ডাব, আইসক্রীম বা অন্যকোন তরল বা নরম খাবার কিনতে যাওয়া ব্যক্তিকে তারা প্রথমে টার্গেট করে। পোশাক পরিচ্ছদ দেখে ক্রেতার কাছে টাকা পয়সা থাকতে পারে এমন অনুমান করে নেয়। এরপর যখনই ওই ক্রেতা কোন তরল বা নরম জাতীয় খাবার কিনে তার সঙ্গে চেতনানাশক এপিট্রা বা এটিভেন নামক ট্যাবলেটের গুঁড়ো চোখের পলকে মিশিয়ে দেয়। এসব চেতনানাশক ওষুধ সাধারণত ডাবের পানি, জুস, চা, কফি, পান, খেজুর, ঝালমুড়ি, শক্তিবর্ধক হালুয়া, ক্রিম জাতীয় বিস্কুট, চকলেট, রঙ্গিন পানীয়ের সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হয়। আবার কখনও অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা যাত্রী হিসেবে লঞ্চ, বাস বা ট্রেনে উঠে সরাসরি যাত্রীর সঙ্গে সখ্যতা করে খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে দেয়। ট্যাবলেট মিশ্রিত খাবার খাওয়ার ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যেই যেকোন মানুষ অচেতন হতে বাধ্য। যদি মাত্রা বেশি হয় সেক্ষেত্রে ৫ থেকে ৭ মিনিটের মধ্যেই মানুষ অচেতন হয়ে পড়ে। এরপর অজ্ঞানকারীরা ওই ব্যক্তির সঙ্গে থাকা মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়। অজ্ঞানকারীরা সাধারণত দুইটি দলে কাজ করে। প্রথম দলের সদস্যরা শুধু টার্গেটকৃত ব্যক্তিকে অচেতন করার ওষুধ খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে দেয়। আর দ্বিতীয় ধাপের সদস্যরা অচেতন করার ওষুধযুক্ত খাবার খাওয়া ব্যক্তির গতিবিধির ওপর নজর রাখে। যখনই অচেতন হয়ে পড়ে তখনই সঙ্গে থাকা মালামাল সুকৌশলে নিয়ে সটকে পড়ে।
×