ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সিটি নির্বাচনও হবেই রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি এখন বিলুপ্তির পথে ॥ নাসিম

প্রকাশিত: ০৬:১০, ৪ এপ্রিল ২০১৫

সিটি নির্বাচনও হবেই রাজনৈতিক দল হিসেবে  বিএনপি এখন বিলুপ্তির পথে ॥ নাসিম

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি এখন বিলুপ্তির পথে রয়েছে। তাদের ডাকা হরতাল-অবরোধ জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। বিএনপি নেত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সুযোগে কোন ষড়যন্ত্র করবেন না। ৫ জানুয়ারির মতো এ নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হবেই। যতই চক্রান্ত করেন, দুনিয়ার কোন শক্তি নেই এই নির্বাচন বানচাল করার। মানুষকে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দেয়ার চক্রান্তের বিরুদ্ধে বাংলার জনগণ ভোটের মাধ্যমে জবাব দেবে। শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ইউনাইটেড ইসলামী পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি আরও বলেন, সিটি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ হবে। জনগণ যে রায় দেবে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল তা মেনে নেবে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার নির্বাচনে আসাকে স্বাগত জানাই। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ না নিয়ে উনি যে ভুল করেছিলেন তার মাসুল তাঁকে দিতে হচ্ছে। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বিএনপি-জামায়াত ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে একাত্তরের মতো নারী-শিশুসহ সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মারছে। তাদের বিরুদ্ধে সকলকে সোচ্চার হতে হবে। খালেদা জিয়ার উদ্দেশে তিনি বলেন, কোর্টে যাবেন ভাল কথা। আইনের কাছে আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত ভাল লক্ষণ। আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছে, গণতন্ত্র অবশ্যই রক্ষা করবে। ইসলামী চিন্তাবিদদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। ইসলাম যে শান্তির ধর্ম তা প্রতিষ্ঠায় কাজ করুন। ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে কেউ যাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য সবাইকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, পেট্রোলবোমা মেরে যে গণহত্যা করা হচ্ছে, সেটাকে জায়েজ করার জন্য হরতাল-অবরোধের নামে রাজনৈতিকভাবে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়া হচ্ছে। নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, খালেদা জিয়া এখন মানুষ নয়, দানব হিসেবে নিজেকে আত্মপ্রকাশ করেছেন। দেশের অসংখ্য মানুষ হত্যা করে চলেছেন। শুধু ধর্ম নয়, যে কোন বিষয়ে বাড়াবাড়ি করলে তার পরিণতি ভয়াবহ হবে। খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, ইসলামে রাষ্ট্রদ্রোহীদের ক্ষমা নেই। মানুষকে ধর্মের নামে যারা ধোঁকা দিতে চায় আর মিথ্যা কথা বলে মানুষ পুড়িয়ে মারে, তাদের কোন অবস্থাতেই ক্ষমা করা যায় না। প্রধানমন্ত্রী তাদের যে বিচার করছেন, এটা ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে ন্যায্য বিচার। ইউনাইটেড ইসলামী পার্টির চেয়ারম্যান মাওলানা ইসমাইল হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য আমিনুল ইসলাম আমিনসহ সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। সেনা মোতায়েনের দাবি অযৌক্তিক- সুরঞ্জিত ॥ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এমপি বলেছেন, আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের কোন প্রয়োজন নেই। বিএনপির এ দাবি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। আওয়ামী লীগ সরকার আমলেই সেনাবাহিনী ছাড়া অনুষ্ঠিত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের জয়ী হওয়ার কথা তুলে ধরেন তিনি। শুক্রবার রাজধানীর আইডিইবি মিলনায়তনে নৌকা সমর্থক গোষ্ঠী আয়োজিত চলমান রাজনীতি বিষয়ক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, সিটি নির্বাচনে সেনাবাহিনী কেন মোতায়েন করতে হবে? তাদের কি নির্বাচন পরিচালনা করার জন্য প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে? তিনি বলেন, সেনাবাহিনীকে যত্রতত্র ব্যবহার করা যাবে না। বিএনপি সিটি নির্বাচনগুলোতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের কথা বললেও মূলত বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির ক্ষেত্রে প্রধান বাধা। কারণ খালেদা জিয়া একদিকে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন, অন্যদিকে হরতাল-অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছেন। অবিলম্বে হরতাল-অবরোধ তুলে নেয়ার জন্য তিনি খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান জানান। খালেদা জিয়ার মামলা প্রসঙ্গে সুরঞ্জিত বলেন, আদালতে বিচারাধীন মামলা সম্পর্কে সরকারের কিছু করার নেই। এটা আদালতের ব্যাপার। তবে আইনের সুফল পেতে হলে খালেদা জিয়াকে অবশ্যই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। তিনি বলেন, বিএনপির মধ্যে লুকিয়ে থাকা সন্ত্রাসী ও নাশকতাকারীরা সাময়িকভাবে ব্যর্থ হলেও তারা এখনও সুযোগের সন্ধানে রয়েছে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ডাঃ এমদাদুল হক সেলিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেনÑ আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য সতীশ চন্দ্র রায়, নৌকা সমর্থক গোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবীর মিজিসহ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
×