ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আর্সেনালে যাচ্ছেন না নেইমার

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ৩ এপ্রিল ২০১৫

আর্সেনালে যাচ্ছেন না নেইমার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সদ্যই একে অপরের মুখোমুখি হয়েছিলেন নেইমার ও এ্যালেক্সিস সানচেজ। আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে ব্রাজিল ও চিলির হয়ে খেলেন এ দুই তারকা। লন্ডনের এমিরেটস স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ওই ম্যাচ শেষে সানচেজ নেইমারকে আর্সেনালে খেলার আহ্বান জানান। চিলিয়ান তারকার আহ্বানে অবশ্য সাড়া দেননি বার্সিলোনা সুপারস্টার। ব্রাজিল অধিনায়ক স্পষ্টভাবেই আর্সেনালে যাওয়ার প্রস্তাব নাকচ করেছেন। গত রবিবার ব্রাজিল ও চিলির মধ্যকার ম্যাচে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন নেইমার ও সানচেজ। এই দুই তারকার বন্ধুত্ব দীর্ঘদিনের। কারণ এক সঙ্গে কাতালানদের হয়ে খেলেছেন তারা। কিন্তু গত মৌসুমে বার্সা ছেড়ে ইংলিশ ক্লাব আর্সেনালে যোগ দেন সানচেজ। যে কারণে প্রীতি ম্যাচের মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিন পর দেখা হয়েছে দুই বন্ধুর। তাইত ম্যাচ শেষে একান্ত আলাপনে মেতে ওঠেন দুই তারকা। সেই কথপোকথনেই নেইমারকে আর্সেনালে আসার আহ্বান জানান সানচেজ। এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পর নেইমারকে ঘিরে ধরেন সাংবাদিকরা। জবাবে ব্রাজিল অধিনায়ক বলেন, সানচেজের সঙ্গে আমার পরিচয়টা দীর্ঘদিনের। তাই সর্ম্পকটা বন্ধুত্বের। তার সঙ্গে বার্সিলোনায় আগে খেলতে ভাল লাগত। তবে এখন আমি বার্সিলোনায় বেশ ভাল আছি। এখানে খেলতে পেরে আমি খুব খুশি। বার্সাকে এখনও অনেক কিছু দেয়ার বাকি আছে। এই ক্লাবের হয়ে অনেক ট্রফি জেতাও বাকি আমার। তার মানে, সানচেজের কথাতে কানই দেননি বার্সা তারকা। ২০১৩ সালে স্বদেশী ক্লাব সান্টোস ছেড়ে বার্সিলোনায় নাম লেখানোর আগে নেইমারকে নিয়ে অনেক গুঞ্জন ছিল। কোন ক্লাবে নাম লেখাবেন তা নিয়ে ছিল সবার মধ্যেই কৌতূহল। সে সময় চেলসি, রিয়াল মাদ্রিদের মতো ক্লাবে যাওয়ার কথাও শোনা গিয়েছিল। কিন্তু নেইমার বেছে নেন বার্সাকেই। সময়ের অন্যতম সেরা এই তারকার বিস্ময়কর উত্থানের শুরু ২০০৩ সাল থেকে। ওই বছর তিনি কিশোর প্রতিভা হিসেবে কিংবদন্তি পেলের সাবেক ক্লাব সান্টোসে যোগ দেন। পেশাদার ফুটবলের সঙ্গে তখন থেকেই পরিচিতি ব্রাজিলের বর্তমান স্বপ্নদ্রষ্টার। ফলস্বরূপ অল্প সময়ের মধ্যেই নেইমারের সংসারের অভাব বিতাড়িত হয়। মাত্র ১৭ বছর বয়সেই কাড়ি কাড়ি অর্থের মালিক বনে যায় নেইমারের পরিবার। এরপর প্রত্যাশিতভাবেই নাম লেখান সান্টোসের মূল দলে। ফলাফল কি হয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না! ধারাবাহিক বিস্ফোরক পারফর্মেন্স প্রদর্শন করে নেইমার এখন বর্তমান বিশ্ব ফুটবলের সেরা তারকাদের একজন। ফুটবল যে নান্দনিক একটি শিল্প সেটা আর কয়জনই বা দেখাতে পেরেছেন! পেলে-ম্যারাডোনা, গ্যারিঞ্চা, ভাঁভা, বড় রোনাল্ডো, আধুনিক সময়ে মেসি-রোনাল্ডো। এর সঙ্গে অনেকে আগেই জুড়ে দিয়েছিলেন আরেকটি নাম ‘নেইমার।’ কিন্তু কে এই নেইমার? আর্জেন্টাইনরা এই বিস্ময় প্রতিভার খেলার নিখুঁত কৌশল দেখে তাদের চোখে সর্বকালের সেরা ম্যারাডোনার সঙ্গে সাদৃশ্য রেখে নাম দিয়েছিলেন ‘নেইম্যারাডোনা।’ আর ব্রাজিলিয়ানরা ডাকতে শুরু করেছিলেন ‘নতুন পেলে’ নামে। গত এক যুগ ধরে ব্রাজিলিয়ানরা যে ভরসা করার মতো কাউকে খুঁজেই পায়নি। এ কারণেই ‘কালোমানিক’ কিংবদন্তি পেলের মতোই ছায়াটা নেইমারের মধ্যে খুঁজে পাচ্ছিলেন ব্রাজিলের ফুটবলপ্রেমীরা। কিন্তু পাচ্ছিলেন না ভরসা। কিন্তু সব শঙ্কা দূর করে নেইমারই এখন ব্রাজিলের ফুটবলের স্বপ্নদ্রষ্টা। জাতীয় দলের জার্সিতে দুর্দান্ত ধারাবাহিকতা দেখানো এই তারকা ভবিষ্যতে পেলেকে ছাড়িয়ে যাবেন বলে অভিমত রেখেছেন সংখ্যাগরিষ্ঠ ফুটবল বিশেষজ্ঞরা।
×