ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পৌনে তিন হাজার প্রচার কমিটি, ব্যাপক কর্ম কৌশল গ্রহণ

আওয়ামী লীগ তিন সিটি নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবেই নিয়েছে

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ৩ এপ্রিল ২০১৫

আওয়ামী লীগ তিন সিটি নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবেই নিয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবেই নিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। তিন সিটিতে দল সমর্থিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের বিজয়ের লক্ষ্যে নির্বাচনী প্রচারের ব্যাপক কর্মকৌশল চূড়ান্ত করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। দলের সব পর্যায়ের নেতাদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে প্রায় পৌনে তিন হাজার প্রচার কমিটি। কেন্দ্রভিত্তিক এসব কমিটির উদ্যোগে সিটি কর্পোরেশন এলাকার প্রতিটি সংসদীয় আসনে পাঁচটি করে জনসভা করবে। এছাড়া কেন্দ্রীয় নেতাদের সমন্বয়ে গঠিত সংসদীয় আসনভিত্তিক কমিটি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের সার্বিক বিষয় তদারকি করবে। তবে আচরণবিধির কথা বিবেচনা করে সরকারের কোন মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রীকে এসব কমিটিতে রাখা হয়নি। তবে তিন সিটি এলাকাতেই কেন্দ্রীয় হাইকমান্ড থেকে দলের নির্দেশ অমান্যকারীদের তালিকা প্রস্তুত করে তাৎক্ষণিক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণেরও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এদিকে, নির্বাচনী আচরণবিধি মেনেই নির্বাচনী প্রচারের অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে ঘরোয়া বৈঠক শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে প্রতিদিনই দলের সর্বস্তরের নেতৃবৃন্দ ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সঙ্গে এ ঘরোয়া বৈঠক চলছে। বৃহস্পতিবার পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের সঙ্গে ঘরোয়া বৈঠক করেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। এ সময় সকল ভেদাভেদ ভুলে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল শক্তিকে আওয়ামী লীগ সমর্থিত একক প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার নির্দেশ দেয়া হয়। বৈঠকে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা ডাঃ দীপু মনি, ড. আবদুর রাজ্জাক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, সুজিত রায় নন্দী, তাসমিমা হোসেনসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। বৈঠকে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, সকল ভেদাভেদ ভুলে সিটি নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। নির্বাচনী আচরণবিধি মেনেই প্রচার চালাতে হবে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, তাতে জনগণ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দল সমর্থিত প্রার্থীকেই বিজয়ী করবে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে আনিসুল হককে। অন্যদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে সাঈদ খোকন এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে আ জ ম নাছির উদ্দিনকে একক প্রার্থী ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ ঘোষিত এই তিন প্রার্থীকে ১৪ দলীয় জোটের পক্ষ থেকেও পূর্ণ সমর্থন জানানো হতে পারে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। এই তিন মেয়র প্রার্থীর পক্ষে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দরা ঘরোয়া বৈঠক করছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দলের একক কাউন্সিলর প্রার্থী চূড়ান্ত না হওয়ায় নির্বাচনী প্রচার জোরালো হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা একক কাউন্সিলর প্রার্থী নির্ধারণের জন্য ইতোমধ্যে একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। কমিটিকে আগামী ৮ এপ্রিলের আগেই তালিকা প্রদানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ কমিটি এখন প্রতিটি ওয়ার্ডে একক কাউন্সিলর প্রার্থী চূড়ান্ত করার কাজ করছে। তবে প্রতিটি ওয়ার্ডে গড়ে ৭ জন করে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের সমর্থন প্রত্যাশী থাকায় একক প্রার্থী নির্ধারণ করতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে কমিটিকে। তবে দফায় দফায় বৈঠক করে ইতোমধ্যে একক কাউন্সিলর প্রার্থী প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছ কমিটি। দুই একদিনের মধ্যে একক কাউন্সিলর প্রার্থীর তালিকা দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জমা দেয়া হতে পারে। একই সঙ্গে ১৪ দলের শরিকরাও তাদের পছন্দের কাউন্সিলর প্রার্থীর একটি তালিকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দিবেন। এরপর ১৪ দল সমর্থিত একক কাউন্সিলর প্রার্থী ঘোষণা করবেন শেখ হাসিনা। আগামী ৮ এপ্রিলের আগেই এটা চূড়ান্ত করা হবে। পরে প্রচারণায় গঠিত কমিটি জোরালোভাবে নির্বাচনী আচরণবিধি মেনেই প্রচারের কাজ শুরু করবে।
×