ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ডিসি ও এসপির সঙ্গে ওরা গ্রামে ফিরেছে

তালতলীর ১৪ হিন্দু পরিবার ফিরে পেয়েছে বাস্তুভিটা

প্রকাশিত: ০৭:০৩, ১ এপ্রিল ২০১৫

তালতলীর ১৪ হিন্দু পরিবার ফিরে পেয়েছে বাস্তুভিটা

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী (বরগুনা), ৩১ মার্চ ॥ অবশেষে মঙ্গলবার বরগুনার তালতলী উপজেলার চন্দনতলা গ্রামের বিতাড়িত ১৪ হিন্দু পরিবার প্রশাসনের উদ্যোগে ভিটে মাটি ফিরে পেলেন। সন্ত্রাসীরা ওই গ্রামের হিন্দু পরিবারকে বিতাড়িত করে ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়েছিল। এ বিষয়ে গত রবিবার ও সোমবার দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকায় সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এতে স্থানীয় প্রশাসনের টনক নড়ে। মঙ্গলবার বরগুনা জেলা প্রশাসক মীর জহুরুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার মোঃ সাইফুল ইসলাম ওই গ্রামের গিয়ে বিতাড়িত পরিবারগুলোকে নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়ে তাদের ভিটেমাটি ফিরিয়ে দেন। ঘটনাস্থলে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তালতলী উপজেলার পচাঁকোড়ালিয়া ইউনিয়নের দুর্গম গ্রাম চন্দনতলা। ওই গ্রামে পৈত্রিক ভিটায় বংশ পরম্পরায় বসবাস করে আসছে ১৪ হিন্দু পরিবার। উত্তারাধিকারী সূত্রে সরকার বাড়ি বলে পরিচিত। ওদের সম্পত্তির ওপর লোলুপ দৃষ্টি পরে বিএনপি নেতা ও সন্ত্রাসী আবদুর রশিদ আকন, আ’লীগ নেতা আবদুস ছালাম ও যুবলীগ নেতা জাকির সরদারের। ওই পরিবারগুলোকে রাতের আঁধারে সন্ত্রাসীরা নির্যাতন করে তাড়িয়ে দেয়। এ বিষয়ে জনকণ্ঠ পত্রিকায় বারবার খবর প্রকাশিত হওয়ায় প্রশাসনের টনক নড়ে। মঙ্গলবার সকালে বরগুনা জেলা প্রশাসক মীর জহিরুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার সাইদুল ইসলাম গ্রাম ছাড়া ওই হিন্দু পরিবারগুলোকে সঙ্গে নিয়ে বরগুনা শহরে থেকে চন্দনতলা গ্রামে আসেন। অসহায় পরিবারগুলোকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়ে তাদের বাড়িতে তুলে দেয়। এ পরিবারগুলো বাড়িতে ফিরে এসে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। এ সময় জেলা প্রশাসকসহ উপস্থিত সকলে তাদের অশ্রুসিক্ত নয়নে বরণ করে নেয়। অশ্রুসিক্ত নয়নে শশী রানী, পিওবালা, শিখারানী, পিয়াবালা, পুষ্পরানী ও দিপালী রানী বলেন ‘মোরা মোর স্বামীর ভিটা ছাইর‌্যা যাইতে চাইনা, সন্ত্রাসীরা মোগো নির্যাতন কইর‌্যা বাড়ি থ্যাইক্যা তাড়াইয়্যা দেছে। মোরা অগো বিচার চাই’ প্রশাসন যে ব্যবস্থা হরছে হ্যাতে মোগো কোন দুঃখ নাই। কিন্তু হ্যারা চইল্লা গ্যালে মোগো কোন ক্ষতি না হললে অয়’। নির্যাতিত পরিবারের পক্ষে যাদব চন্দ্র সরকার ও শ্যামল চন্দ্র সরকার সন্ত্রাসীদের নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে বলেন ‘আমরা বাপ-দাদার ভিটা ছেড়ে যেতে চাই না। ওরা যে নির্যাতন করেছে তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।
×