ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

খালেদা আসলে নির্বাচন, গণতন্ত্র, তত্ত্বাবধায়ক কোনটাই চান না ॥ সৈয়দ আশরাফ

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ১ এপ্রিল ২০১৫

খালেদা আসলে নির্বাচন, গণতন্ত্র, তত্ত্বাবধায়ক কোনটাই চান না ॥ সৈয়দ আশরাফ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ স্থানীয় সরকারমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন সংক্রান্ত বেগম খালেদা জিয়ার দাবির সঙ্গে জনগণের চাওয়া-পাওয়ার সম্পর্ক থাকলে তা মানা হবে। কিন্তু খালেদা জিয়ার আচরণ থেকে এটা স্পষ্ট যে Ñনিবার্চন, গণতন্ত্র ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার; এর কোনটাই আসলে তিনি চান না। মধ্যবর্তী নির্বাচন বা তত্ত্বাধায়ক সরকারের দাবি থাকলে তিনি জ্বালাও-পোড়াওয়ের পথে চলতেন না। কোন রাজনৈতিক দল নির্বাচনের দাবি তুলে তার ভোটারদের পুড়িয়ে মারতে পারে না। বেগম জিয়ার চাওয়া হলো- ছলেবলে কৌশলে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করা এবং ১৯৭১ সালে বিভক্ত হওয়া তার সাধের পাকিস্তানকে জোড়া লাগানো। তিনি একাত্তর সালের মুক্তিযুদ্ধে পরাজিতদের প্রতিশোধ চান। কিন্তু দেশের আপামর মানুষ বাংলাদেশকে কোনদিন পাকিস্তানের মতো একটি অকার্যকর রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চায় না। মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘মুক্তিযোদ্ধা-পেশাজীবী জনতা ঐক্য মঞ্চের’ ব্যানারে আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সৈয়দ আশরাফ এসব কথা বলেন। পেট্রোলবোমা মেরে নিরীহ মানুষ হত্যা, জ্বালাও-পোড়াও, শিক্ষা, ব্যবসা-বাণিজ্য, পরিবহন, শিল্প-কারখানা ধ্বংসের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) হেলাল মোর্শেদ খানের (বীরবিক্রম) সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলিকুজ্জমান আহমদ, এবং ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সের সভাপতি একেএম হামিদ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে সৈয়দ আশরাফ আরও বলেন, বেগম জিয়া কোনদিন বাংলাদেশকে স্বীকার করেননি। পাকিস্তানকে রক্ষা করতে না পারাই তার জীবনের একমাত্র দুঃখ। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ছেলেমেয়েদের পরীক্ষার সঙ্গে, শিশু, কৃষক, শ্রমিক ও নিরীহ বাসযাত্রীদের সঙ্গে রাজনীতির কী সম্পর্ক। কেন তাদের পুড়িয়ে মারা হচ্ছে। আর যারা পুড়ে মরছে তাদের সবাই কী আওয়ামী লীগ করেন? খালেদা জিয়া নিজেকে মা দাবি করেন। অথচ সন্তান পুড়িয়ে মায়ের বুক খালি করতে তার বিবেকে বাধে না। নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, খালেদা জিয়া এখন লাইফ সাপোর্টে আছেন। সিটি নির্বাচনে যদি জনগণের সমর্থন লাভ করেন, তবে তাকে স্বাগত জানানো হবে। আর যদি জনগণ তাকে প্রত্যাখ্যান করে তবে খালেদার রাজনীতির ভবিষ্যত অনিশ্চিত। জামায়াত-বিএনপির চলমান সহিংসতা বন্ধে মুক্তিযোদ্ধা পেশাজীবী জনতাকে ঐক্যবদ্ধভাবে কঠোর ভূমিকা নেয়ার আহ্বানও জানান তিনি। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, খালেদা জিয়া জামায়াতের অঘোষিত আমির। চলমান সহিংসতাকে তিনি রাজনৈতিক রূপ দেয়ার অপচেষ্টা করছেন। অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলিকুজ্জমান বলেন, বর্তমান ষড়যন্ত্রের শিকড় অনেক গভীরে প্রোথিত। একে সমূলে উৎখাত করতে হলে তরুণ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে। একেএম হামিদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ সমুন্নত রাখতে দেশের পেশাজীবীরা একজোট হয়ে কাজ করবে। প্রতিটি গ্রাম ঘুুরে স্বাধীনতাবিরোধী ও পেট্রোলবোমা নিক্ষেপকারীদের তালিকা তৈরি করে সরকারের হাতে তুলে দেয়া হবে। সভাপতির বক্তব্যে হেলাল মোর্শেদ খান বলেন, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে ১১টি লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে পেশাজীবী ও মুক্তিযোদ্ধারা ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। চলমান সহিংসতা ও দেশবিরোধী কর্মকা- রুখতেও দেশজুড়ে তারা একত্রে কাজ করবেন।
×