ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ব্রাজিলের রেকর্ড টানা অষ্টম জয়

প্রকাশিত: ০৬:৪৪, ৩১ মার্চ ২০১৫

ব্রাজিলের রেকর্ড টানা অষ্টম জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অপ্রতিরোধ্য যাত্রা অব্যাহত রেখেছে রেকর্ড সর্বোচ্চ পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। ২০১৪ সালে নিজ দেশে বিশ্বকাপ জিততে ব্যর্থ হওয়া দেশটি বিশ্বকাপ পরবর্তী সব ম্যাচেই জয় পেয়েছে। রবিবার রাতে আন্তর্জাতিক প্রীতিম্যাচে চিলিকে ১-০ গোলে হারায় ব্রাজিল। নিরপেক্ষ ভেন্যু লন্ডনের এমিরেটস স্টেডিয়ামে সেলেসাওদের হয়ে জয়সূচক গোলটি করেন তরুণ মিডফিল্ডার রবার্টো ফিরমিনো। এটি নেইমার, রবিনহো, থিয়াগোদের টানা অষ্টম জয়। আগের ম্যাচে ব্রাজিলের কাছে হার মানা ফ্রান্সও জয়ের ধারার ফিরেছে। ১৯৯৮ বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়নরা ২-০ গোলে পরাজিত করে ডেনমার্ককে। পরশুর আরেক ম্যাচে ইকুয়েডরের বিরুদ্ধে ১-০ গোলের জয় পায় মেক্সিকো। আগের ম্যাচেই ফ্রান্সকে হারিয়ে ১৯৯৮ বিশ্বকাপের ফাইনালে হারের প্রতিশোধ নেয় কার্লোস দুঙ্গার দল। টানা সাত ম্যাচ জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে চিলির বিরুদ্ধে মাঠে নামেন নেইমার, থিয়াগো, কাউটিনহোরা। এদের পাশাপাশি সেলেসাও কোচ একঝাঁক নতুনদেরও সুযোগ করে দেন। ম্যাচে জয় পেলেও সেটি অনেকটা সৌভাগ্যপ্রসূত এসেছে। কেননা ব্রাজিলের চেয়ে স্পষ্ট আধিপত্য বিস্তার করে খেলে এ্যালেক্সিস সানচেজের চিলি। ব্রাজিল-চিলি ম্যাচে জমজমাট লড়াই হবেÑ এমনটাই আশা করেছিলেন ফুটবলপ্রেমীরা। কিন্তু তেমনটি হয়নি। বিশেষ করে দুঙ্গার দলের সাম্বা ছন্দের দেখা মেলেনি। এমিরেটস স্টেডিয়ামে শুরু থেকেই কুৎসিত ফ্টুবল খেলতে থাকে দুই দল। এক্ষেত্রে এগিয়ে থাকে পেলের দেশই! প্রথম ২৫ মিনিটে ছিল ফাউলের ছড়াছড়ি, ধাক্কাধাক্কি, গ-গোল! ছিল না ফুটবল রোমাঞ্চ। এরপর দুই দলই গুছিয়ে খেলার চেষ্টা করতে থাকে। ২৭ মিনিটে প্রথম ভাল সুযোগ পায় ব্রাজিল। কিন্তু নেইমারের ফ্রিকিক অল্পের জন্য গোলপোস্টের বাইরে দিয়ে যায়। প্রথমার্ধের বাকি সময়ে কোন দলই তেমন ভাল সুযোগ সৃষ্টি করতে পারেনি। প্রথম ৪৫ মিনিটে তিনজন খেলোয়াড় হলুদকার্ড দেখেন। এর মধ্যে ৪৪ মিনিটে প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডার গঞ্জালো জহারাকে ফাউল করে হলুদকার্ড পান সুপারস্টার নেইমার। বিরতির পর শুরু থেকেই বল দখলে এগিয়ে থাকে চিলি। কিন্তু গোল করার মতো কার্যকরী সুযোগ সৃষ্টি করতে পারেননি সানচেজ, ভিদালরা। এরই মধ্যে ৭২ মিনিটে বদলি খেলোয়াড় রবার্টো ফিরমিনোর গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। ডিফেন্ডার ড্যানিলোর লম্বা পাস ডি বক্সের মধ্যে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে গোলরক্ষক ক্লডিও ব্রাভোকে কাটিয়ে বল জালে জড়ান হোফেনহিয়েমের মিডফিল্ডার। ৮৯ মিনিটে ভলি করে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পেয়েছিলেন ৬০ মিনিটে কাউটিনহোর বদলি হিসেবে নামা রবিনহো। কিন্তু তার ভলিটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় অল্পের জন্য। শেষপর্যন্ত এক গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে দুঙ্গার দল। আগের ম্যাচে ফ্রান্সকে হারানোর পর ব্রাজিল কোচ কার্লোস দুঙ্গা বলেছিলেন, দল সংঘবদ্ধ হয়ে উঠছে। বিশ্বকাপের পর দল পুরনো ছন্দ ফিরে পেয়েছে। চিলির বিরুদ্ধে ম্যাচের পর কিছুটা সুর পাল্টিয়েছেন ১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক। দুঙ্গা বলেন, ম্যাচটি আমরা প্রত্যাশামতো খেলতে পারিনি। তবে দল ঠিক পথেই আছে। তিনি আরও বলেন, বিশ্বকাপের পর থেকে তারা (খেলোয়াড়েরা) যেভাবে পরিস্থিতির মোকাবেলা করেছে, তাতে আমি খুশি। তারা কঠিন পরিশ্রম করছে। ব্রাজিল দলে খেলার সময় তাদের কি দায়িত্ব, এটা তারা জানে। অতীতে যা হয়েছে তা বদলাতে তারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তাই আমি খুশি। ব্রাজিল কোচ আরও বলেন, আসছে কোপা আমেরিকা কাপে সাফল্য পাওয়া সহজ হবেনা। এজন্য আমাদের সেরাটাই দিতে হবে। ঘরের মাঠে ডেনমার্ককে ২-০ গোলে হারিয়েছে ১৯৯৮ সালের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। গত বৃহস্পতিবার রাতে ব্রাজিলের বিরুদ্ধে এগিয়ে যেয়েও ৩-১ গোলে হেরেছিল ২০১৬ সালের ইউরোর স্বাগতিকরা। ড্যানিশদের বিরুদ্ধে প্রথমার্ধেই গোল দুটি পায় দিদিয়ের দেশমের দল। ম্যাচের ১৪ মিনিটে ডি বক্সের মধ্যে থেকে হাফ ভলিতে স্বাগতিকদের এগিয়ে দেন আলেকসান্দ্র লাকাজেট্টে। জাতীয় দলের হয়ে ছয় ম্যাচ খেলে এটি তার প্রথম গোল। ৩৮ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা আর্সেনালের স্ট্রাইকার অলিভিয়ের জিরুড। বিরতির পর দুই দলই সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়। দলের পারফর্মেন্সে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ফরাসী কোচ দেশম। তিনি বলেন, ব্রাজিলের কাছে হারের পর জয়টি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ছেলেরা ভাল খেলেই জিতেছে।
×