ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ব্যবসায়ীরা মূসক আইনে ভ্যাটের হার ১২% করার পক্ষে

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ৩১ মার্চ ২০১৫

ব্যবসায়ীরা মূসক আইনে ভ্যাটের হার ১২% করার পক্ষে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এফবিসিসিআই সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন বলেন, বর্তমান সরকার ব্যবসায়ীবান্ধব সরকার। নতুন মূল্য সংযোজন কর আইন পাস করার পরও ব্যবসায়ীদের মতামত নিয়ে তাতে সংশোধনী আনে। বাংলাদেশে অর্থনৈতিক অভ্যুদয় ঘটেছে। দেশ আর আগের মতো নেই, বাংলাদেশ এখন সমৃদ্ধির দেশ। এই উন্নয়নকে কেউ থামিয়ে রাখতে পারবে না। নতুন এই মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইনের ফলে কর ব্যবস্থা আরও ডিজিটাল হবে। তবে এই আইনে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ১৫ শতাংশ নির্ধারণ না করে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে মিল রেখে তা ১২ শতাংশ করা দরকার। বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটেছে। গ্রামেও এখন বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। শুধু শহুরে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কর আদায়ের চিন্ত বাদ দিয়ে গ্রামের ব্যবসায়ীদের দিকেও নজর দিতে হবে। সোমবার রাজধানীর পুলিশ স্টাফ কলেজের পিএসসি কনভেশন হলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কাস্টমস এক্সসাইজ ভ্যাট ও মূসক ঢাকা পশ্চিম অঞ্চলের উদ্যোগে আয়োজিত ‘মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন- ২০১২, করদাতা উদ্বুদ্ধকরণ বিষয়ক’ সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) সভাপতি বলেন, নতুন ভ্যাট আইন নিয়ে শুরু থেকেই ব্যবসায়ীরা দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিলেন। ছোট ব্যবসায়ীদের ঝামেলামুক্ত করতে ৩৬ লাখ টাকা পর্যন্ত টার্নওভার ট্যাক্স মওকুফের দাবি ছিল। আর পণ্যের ওপর ঢালাওভাবে ১৫ শতাংশ ভ্যাট ব্যবসায়ীদের ওপর অতিরিক্ত বোঝা। দেশের ব্যবসায়ীরা বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে মিল রেখে ভ্যাটের এ হার ১২ শতাংশ করার পক্ষে। কাজী আকরাম আরও বলেন, ১৯৯১ সাল থেকে ব্যবসায়ীরা বিদ্যমান আইনে ভ্যাট দিয়ে অভ্যস্ত। হঠাৎ করে নতুন আইন দেখলে সবাই ভয় পাবে-এটা স্বাভাবিক বিষয়। এক্ষেত্রে করদাতাদের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করলে তাদের ভ্যাট দিতে সমস্যা হবে না। অনুষ্ঠানে এনবিআরের সদস্য (মূসক বাস্তবায়ন ও আইটি) ফিরোজ শাহ আলম বলেন, ব্যবসায়ীরা যেন সহজে ভ্যাট দিতে পারেন এজন্যই নতুন ভ্যাট আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। এ আইনে পুরোনো জটিলতা দূর হবে। নতুন আইনে ছোট ব্যবসায়ীদের কথা মাথায় রেখে ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত টার্নওভার ট্যাক্স মুক্ত করা হয়েছে। ৮০ লাখের বেশি টার্নওভারে ভ্যাট দিতে হবে। তাই ব্যবসায়ীরা ভ্যাট পরিশোধে ঝামেলায় পড়বেন না। এছাড়া নতুন আইনে রিটার্ন জমা দেয়া, রিফান্ড পাওয়া, ভ্যাট দেয়াসহ সব কাজ অনলাইনে করা যাবে। কাস্টমস এক্সসাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট ঢাকা পশ্চিম অঞ্চলের কমিশনার সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) আইন, ২০১২-এর আইনসমূহ সংক্ষেপে উপস্থাপন করেন যুগ্ম কমিশনার শামীম আরা বেগম। নতুন এই আইনের ফলে অতি সহজেই অনলাইনে কর প্রদান থেকে শুরু করে কর সংক্রান্ত সকল তথ্য জানা যাবে। এখন থেকে মূল্য ঘোষণার ক্ষেত্রে আগের ঝামেলা থাকছে না। মূসক দফতরে দৌড়াদৌড়ি না করে ঘরে বা অফিসে বসে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করা যাবে। কর সম্পর্কিত সকল তথ্য জানার জন্যে থাকছে কন্ট্রাক সেন্টার। বার্ষিক টার্নওভার ৩০ লাখ টাকার নিচে হলে কর দিতে হবে না। এছাড়াও বার্ষিক টার্নওভার ৮০ লাখ টাকার নিচে হলে ৩ শতাংশ টার্নওভার ট্যাক্স প্রদান করলেই হবে ও অনলাইন পেমেন্টের মাধ্যমে ভ্যাট পরিশোধ করা যাবে। প্রসঙ্গত, আইনটির খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পেয়েছে। আগামী অর্থবছরের শুরুতে এটি পাস হতে পারে। ওই সেমিনারে এনবিআরের কর্মকর্তা ও বিভিন্ন ব্যবসায়িক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। করদাতা ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা প্রশ্নোত্তর পর্বের উন্মুক্ত অলোচনায় অংশ নেন। এক্সসাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের অতিরিক্ত কমিশনার মোঃ মোস্তবা আলী করদাতাদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন।
×