ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

টুর্নামেন্ট সেরা মিচেল স্টার্ক

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ৩০ মার্চ ২০১৫

টুর্নামেন্ট সেরা মিচেল স্টার্ক

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ রেকর্ড পঞ্চমবারের মতো বিশ্বকাপ ক্রিকেটের শিরোপা জিতল অস্ট্রেলিয়া। ঘরের মাটিতে এবার ফেবারিট হিসেবেই ট্রফি পুনরুদ্ধার করে মাইকেল ক্লার্কের দল। ফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে বিজয় কেতন ওড়ায় তারা। ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য এটি খুব বেশি চমকের খবর নয়! তবে একাধিক জায়গায় ঠিকই চমক দেখিয়েছে অসিরা। তাবত সব তারকাদের পেছনে ফেলে টুর্নামেন্টের সেরা হয়েছেন তরুণ মিচেল স্টার্ক। আসরজুড়ে অবিশ্বাস্য বোলিংয়ের পুরস্কার পেয়েছেন ২৫ বছর বয়সী বাঁহাতি পেসার। ৮ ম্যাচে কিউই তারকা ট্রেন্ট বোল্টের সঙ্গে যৌথ সর্বাধিক ২২ উইকেট নিয়ে আসরের সেরা নির্বাচিত হন স্টর্ক। ২০১০ সালে অভিষেক হলেও গত বিশ্বকাপে ছিলেন না। এমন কি ২০১১ সালের পুরোটাই ছিলেন দলের বাইরে। পরের দুই বছর খেলেছেন বেশকিছু ম্যাচ। কিন্তু ঠিক আজকের স্টার্কের ছায়া তাতে ছিল না। ওই সময়টায় দলের হয়ে বল হাতে ছড়ি ঘুরিয়েছেন প্যাট কুমিন্স-মিচেল জনসনরা। গত বছর জিম্বাবুইয়ে সফর দিয়ে নতুন করে দৃষ্টি কাড়েন। বিশ্বকাপের ঠিক আগে কার্লটন মিড ত্রিদেশীয় ওয়ানডেতে রীতিমতো ঝড় তোলেন তিনি। কিন্তু সেটা বিশ্বকাপের মতো বড় আসরেই এভাবে বয়ে আনবেন, এমনটা হয়ত অনেকেই ভাবেননি। স্টার্ক যেন নিজের ভাবনাকেই ছাড়িয়ে গেছেন! বাঁহাতি পেসারদের ভিড়ে অস্ট্রেলিয়াকে স্বপ্নের এক বিশ্বকাপই উপহার দিয়েছেন তিনি। গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচটি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়। ফাইনাল পর্যন্ত বাকি আট ম্যাচের বল হাতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন স্টার্ক। ম্যাচের পর ম্যাচ প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের জন্য হয়ে উঠেছেন আতঙ্কের নাম। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম সেই ম্যাচ হয়ে ফাইনাল পর্যন্ত সুপার স্টার্কের বোলিংÑ ২/৪৭, ৬/২৮, ২/১৮, ২/২৯, ৪/১৪, ২/৪০, ২/২৮ ও ২/২০!! মোট ২২ শিকারে ইকোনমিক মাত্র ৩.৫০। অবিশ্বাস্য বললেও কম বলা হবে। ইতিহাসে অসিদের পঞ্চম বিশ্বকাপ জয়ের সঙ্গে সঙ্গে অবধারিতভাবে উচ্চারিত হবে স্টার্কের নাম। দুরন্ত গতির সঙ্গে অবিশ্বাস্য সব সুইং। ইয়র্কারের সঙ্গে নিখুঁত লেন্থ। সব মিলিয়ে বিশ্বকাপে স্টার্কের বোলিং যেন দর্শনীয় শিল্প। অবিশ্বাস্য ব্যাটিং করে সেরার দৌড়ে ছিলেন শ্রীলঙ্কান তারকা কুমার সাঙ্গাকারা, কিউই মার্টিন গাপটিল, এমনকি ফাইনালে উঠে আসা নিউজিল্যান্ড পেসার বোল্টও। কিন্তু তাদের টেক্কা দিয়ে সেরাদের সেরা হন স্টার্ক। টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার গ্রহণে তাই যারপরনাই আনন্দিত তিনি। ‘আমার জন্য এটা এ্যামাজিং এক বিশ্বকাপ। নিউজিল্যান্ড ভাল খেলেছে। তবে ফাইনালের দিনটি ছিল আমাদের। দলের শিরোপা উদ্ধারে ভূমিকা রাখতে পেরে দারুণ খুশি আমি।’ বলেন তিনি। ১৯৭৫ সাল থেকে বিশ্বকাপের যাত্রা শুরু হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার দেয়া হয় ১৯৯২ থেকে। দল ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হলেও সেবার ৪৫৬ রান করে টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার তুলে নেন কিউই অধিনায়ক মার্টিন ক্রো। কেবল ক্রো নয়, এরপর আরও দুবার এমন দুজন সেরা হয়েছেন, যাদের দল চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। ’৯৯-এ দক্ষিণ আফ্রিকার ল্যান্স ক্লুজনার, পরের বার শচীন টেন্ডুলকর। কাপ জয়ের পশাপাশি আসর সেরা হওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে সনাথ জয়সুরিয়া (১৯৯৯), গ্লেন ম্যাকগ্রা (২০০৭) ও যুবরাজ সিংয়ের (২০১১)। এবার তাদের কাতারে নাম লেখালেন ৪১ ওয়ানডের ক্যারিয়ারে ৮৩ উইকেট শিকারি মিচেল স্টার্ক।
×