ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ফাইনালের নায়ক জেমস ফকনার

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ৩০ মার্চ ২০১৫

ফাইনালের নায়ক জেমস ফকনার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ডেভিড ওয়ার্নার, শেন ওয়াটসন, মিচেল জনসন, মাইকেল ক্লার্কÑ কত সব বড় বড় নাম। অথচ বড় মঞ্চের নায়ক বনে গেলেন ‘ছোট’ একজন! মাত্র ৪৪ ম্যাচের অভিজ্ঞতায় মেলবোর্নের গ্র্যান্ড ফাইনালে ম্যাচসেরা জেমস ফকনার। অনায়াসে জয়ের পথে কাল তাকে ব্যাটিংয়ে নামতে হয়নি, বল হাতেই চমক দেখালেন ২৪ বছর বয়সী অলরাউন্ডার। নিউজিল্যান্ড ইনিংসের মেরুদ- ভেঙ্গে দেয়া তিন উইকেট নিয়ে নিজের নামটি ইতিহাসে খোদাই করে নিলেন ফকনার। তিন উইকেট নিয়েছেন দলটির ‘নাম্বার ওয়ান’ পেসার জনসনও। টুর্নমেন্টসেরা মিচেল স্টার্ক ২ শিকারের পথে ৮ ওভারে রান দিয়েছেন মাত্র ২০। এরপর বিদায়ী ম্যাচে অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক খেলেন ৭৪ রানের দারুণ ইনিংস। তবু কেন ম্যাচসেরা ফকনার? উত্তরটা সহজ। নিউজিল্যান্ড ব্যাটিংয়ের প্রাণ তিন তারকা রস টেইলর (৪০) গ্র্যান্ট ইলিয়ট (৮৩) ও কোরি এ্যান্ডরসনকে (০) তুলে নিয়ে মূলত তিনিই খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেন। ফল- মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারেনি কিউইরা, অলআউট হয়েছে মাত্র ১৮৩ রানে। সুতরাং গুরুত্বের বিচারে ফকনারকে ম্যাচসেরা হিসেবে বেছে নিতে অফিসিয়ালদের খুব বেগ পেতে হয়নি। দলীয় ৩৯ রানে তিন টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান মার্টিন গাপটিল, ব্রেন্ডন ম্যাককুলাম ও কেন উইলিয়ামসনকে হারিয়ে বড় ধাক্কা খায় কিউইরা। সেখান থেকেই দলকে টেনে তুলছিলেন টেইলর-ইলিয়ট। চতুর্থ উইকেটে ১১১ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েন তারা। প্রধান দুই পেসার স্টার্ক-জনসনকে স্বচ্ছন্দে খেলছিলেন। কিছুটা হলেও চিন্তার ভাঁজ অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক ক্লার্কের কপালে। তখনই ফকনারের দুর্দন্ত স্পেল। ১৪৯/৩ থেকে মুহূর্তে ১৫০/৫-এ পরিণত হয় নিউজিল্যান্ড! টেইলর ও ইলিয়টকে উইকেটের পেছনে ব্র্যাড হ্যাডিনের সহায়তায় তুলে নেয়ার পর রানে খাতা খোলার আগেই ‘ডেঞ্জারম্যান’ এ্যান্ডারসনকে পরিষ্কার বোল্ড করে সাজঘরে পাঠান ফকনার। বদলে যায় ম্যাচের চিত্র। ফকনারের দেখানো পথেই দুরন্ত বোলিংয়ে কিউইদের মাত্র ১৮৩ রানে গুড়িয়ে দেয় অসিরা। ৯ ওভারে ৩৬ রানে ৩ উইকেট নিয়ে নায়ক বনে যান তিনি। এটি অবশ্য তার ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং ফিগার নয়। ৪ উইকেট নিয়েছেন দু’বার। ৩ উইকেট ছয়বার। মাত্রই ২০১৩ সালে দলে সুযোগ পাওয়া ফকনারের ৪৪ ওয়ানডেতে শিকার সংখ্যা ৬০। অধিনায়ক ক্লার্কের মতো ইনজুরির জন্য বিশ্বকপের প্রথম থেকে খেলতে পারেননি। ৬ ম্যাচে উইকেট নিয়েছেন ১০। তবু আজ তিনি ইতিহাস। অস্ট্রেলিয়ার পঞ্চম বিশ্বকাপ জয়ের পথে ফাইনালের ম্যাচসেরা। পঞ্চম শিরোপা জয়ের পথে আগের শেষ তিন বিশ্বকাপের ফাইনালে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন শেন ওয়ার্ন (১৯৯৯), রিকি পন্টিং (২০০৩) ও এ্যাডাম গিলক্রিস্ট (২০০৭), ক্যারিয়ারে উষালগ্নেই সেই সব কিংবদন্তিদের কাতারে নাম লেখালেন জেমস ফকনার। স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত তিনি, ‘মেলবোর্নে ৯০ হাজার দর্শকের সামনে ফাইনালে এমন অর্জনের অনুভূতি সত্যি ভাষায় প্রকাশের নয়। গত কয়েক বছর অনেক পরিশ্রম করেছি, এটা তারই ফসল। টস জিতে অধিনায়ক নিশ্চই আমার ওপর ভরসা করে বোলিং নেননি! তবু সঠিক সময়ে সেরা কাজটা করতে পেরে ভাল লাগছে। প্রতিপক্ষ যখন ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে গিয়ে রান তুলতে চেয়েছে, তখনই উইকেট পেয়েছি, এটা ভাগ্যের সহায়তা ছাড়া সম্ভব ছিল না। ক্লার্কের নেতৃত্ব, সবার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এ অর্জন সম্ভব হয়েছে।’
×