ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

চসিক নির্বাচন

নাশকতার মামলা সত্ত্বেও বিএনপি-জামায়াতের কাউন্সিলররা ফের প্রার্থী

প্রকাশিত: ০৫:২৪, ৩০ মার্চ ২০১৫

নাশকতার মামলা সত্ত্বেও বিএনপি-জামায়াতের  কাউন্সিলররা ফের প্রার্থী

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ আসন্ন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে ঘিরে নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে এখন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা যাচাইয়ের আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় বইছে। কিন্তু গত সেশনে থাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াতের কাউন্সিলরদের মধ্যে অনেকের বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগে মামলা রয়েছে। গত তিন মাসে পেট্রোলবোমা হামলাসহ নাশকতার ঘটনায় কয়েক জামায়াত-বিএনপি কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে মামলা থাকায় তারা পলাতক রয়েছেন বলে থানাগুলো থেকে জানা গেছে। এছাড়াও নাশকতার ঘটনায় গ্রেফতার অবস্থায় চট্টগ্রাম কারাগারে রয়েছেন এক কাউন্সিলর। প্রশ্ন উঠেছে, দেশে উচ্ছৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টির পেছনে যারা গত তিন মাস ধরে কাজ করেছেন তারা পলাতক থাকলেও নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য মনোনয়নপত্র গ্রহণ ও জমা করেছেন। অভিযোগ উঠেছে জনপ্রতিনিধি হিসেবে এ সব কাউন্সিলর পুনরায় নির্বাচিত হলে নাশকতা অব্যাহত থাকবে। ফলে যানমালের নিরাপত্তা থাকবে না ও ভুলুণ্ঠিত হবে সাধারণের চলাফেরা। জানা গেছে, নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে ২০১৪-১৫ সেশন পর্যন্ত নির্বাচিত ৪১ জন পুরুষ কাউন্সিলের মধ্যে ৩ জন ব্যতীত বাকি ৩৮ জনই জামায়াত ও বিএনপি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আগামী ২৮ এপ্রিলে অনুষ্ঠিতব্য চসিক নির্বাচনে মেয়র পদে ১৩ ও কাউন্সিলর পদে ৩৫৯ জন প্রার্থী লড়বেন বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে। এর মধ্যে ৭১ নারী কাউন্সিলর ও ২৮৮ জন পুরুষ কাউন্সিলর হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। তবে অভিযোগ উঠেছে গত তিন মাসে দেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দেয়া ও পেট্রোলবোমা হামলার মাধ্যমে নাশকতা সৃষ্টিকারীদের উস্কানিদাতা এবং অর্থের যোগাদাতা হিসেবে খ্যাত এ সব কাউন্সিলররা পুনরায় মনোনয়নপত্র গ্রহণ ও জমাদান করেছেন। ২৯ মার্চের শেষ দিনে দেখা গেছে গত সেশনে নির্বাচিত ও নাশকতার ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে যে সব কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে উচ্ছৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টির ঘটনায় মামলা ছিল তাদের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি ও আত্মীয়-স্বজন মনোনয়নপত্র গ্রহণ ও জমা দিয়েছেন। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির পক্ষ থেকে গত সেশনে কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন মোঃ শাহজাহান, মাহবুবুল আলম, মোঃ আজম, হাসান রিটন, এসএম ইকবাল, আবদুস সাত্তার সেলিম, বাবুল হক হাজী, জাফরুল ইসলাম, মোঃ আবু তৈয়ব, ইয়াছিন চৌধুরী, আবদুল মালেক, নিয়াজ মোহাম্মদ খান, আবদুস সবুর লিটন, মোঃ সেকান্দর, শহিদুল ইসলাম, দিদারুল ইসলাম, ইসমাইল হোসেন বালি, হাসান মুরাদ, সরফরাজ কাদের ও নুরুল আবছার। এদিকে, জামায়াতের পক্ষ থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন সামসুজ্জামান হেলালী ও মাহফুজুল আলম। সিএমপির ১৬টি থানা সূত্রে জানা গেছে, ৪১টি ওয়ার্ডে গত ৫ জানুয়ারি থেকে প্রায় তিন মাসের নাশকতার ঘটনায় জামায়াত ও বিএনপির ৭ ওয়ার্ড কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। বিস্ফোরক আইনসহ হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় এ সব কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর তারা পলাতক রয়েছেন। এর মধ্যে চসিকের ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাহাবুবুল আলম নাশকতার মামলায় চট্টগ্রাম কারাগারে রয়েছেন। নাশকতার মামলায় পলাতক থাকা অন্যান্যরা হচ্ছেনÑ বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর মোঃ আজম, হাসান রিটন, আবদুস সাত্তার সেলিম ও ইসমাইল হোসেন বালি। জামায়াতপন্থী কাউন্সিলর সামসুজ্জামান হেলালী ও মাহফুজুল আলম পলাতক রয়েছেন। এ বিষয়ে সিএমপির এক উর্ধতন কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে জানিয়েছেন, গত সেশনে থাকা বিএনপি ও জামায়াতের কাউন্সিলরদের মধ্যে কেউ কেউ নাশকতার ঘটনার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। ফলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। এমনকি একজন কাউন্সিলর চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযোগ অব্যাহত রয়েছে। নাশকতার ঘটনায় ও নাশকতামূলক কর্মকা-ে অর্থের যোগানদাতা এবং ইন্ধনদাতা হিসেবে এ সব কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। তবে তাদের বিরুদ্ধে এখনও চার্জশীট তৈরি হয়নি।
×