ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

২৬ থেকে ২৮ এপ্রিলের এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ৩০ মার্চ ২০১৫

২৬ থেকে ২৮ এপ্রিলের এইচএসসি পরীক্ষা  স্থগিত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের কারণে আগামী ২৬ থেকে ২৮ এপ্রিলের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাগুলো স্থগিত করা হয়েছে। এ তিন দিনের পরীক্ষার নতুন সময়সূচী পরবর্তীতে জানানো হবে। এদিকে হরতাল অবরোধ যাই হোক আগামী বুধবার থেকে সারাদেশে নির্বিঘেœ এ পরীক্ষা শুরুর জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রস্তুত শিক্ষা প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এবার পরীক্ষা চলাকালে কেন্দ্রের আশপাশের সকল ফটোকটি মেশিন বন্ধ রাখা হবে। কড়া নজরদারিতে রাখা হচ্ছে ফেসবুক ও কোচিং সেন্টারগুলোকে। প্রশ্ন ফাঁস বা এ সংক্রান্ত গুজব সৃষ্টি করলে পাবলিক পরীক্ষা আইন অনুসারে নেয়া হবে কঠোর ব্যবস্থা। এছাড়া প্রশ্নপত্র প্রণয়ন এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের আত্মীয়-স্বজনদেরও মনিটরিংয়ের আওতায় রাখা হয়েছে। রবিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কমিটি বৈঠক শেষে এসব প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এসএসসি পরীক্ষা ‘সুষ্ঠু, নকলমুক্ত ও ইতিবাচক’ পরিবেশে সম্পন্ন করতে বসেছিল আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কমিটির জরুরী বৈঠক। বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা সংস্থাগুলোর সদস্যরা এসএসসি পরীক্ষার মতো এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাও সুষ্ঠুভাবে গ্রহণের দৃঢ় অবস্থানের কথা জানিয়েছেন। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে বৈঠকে ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব স্বপন কুমার সরকার, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ফাহিমা খাতুন, ঢাকা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুবকর সিদ্দিকসহ অন্যান্য বোর্ডের চেয়ারম্যান। আরও ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, কেবিনেট বিভাগ, তথ্য মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, মুদ্রণ ও প্রকাশনা অধিদফতরের মহাপরিচালক এ কে এম মাঞ্জুরুল ইসলাম, পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার শেখ মুহাম্মদ মাসুদ হাসান, সিটিএসবির এসএস মোহাম্মদ আজাদ মিয়া, র‌্যাব সদর দফতরের উপ-পরিচালক মেজর ইবনে মঞ্জুরুল খালিদ, পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত এসপি মুহাম্মদ উল্যা, সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি মোঃ মোখলেছুর রহমান, এডিসি মোহাম্মদ তারেক বিন রশিদ, ডিএমপির ডিসি-ডিবি শেখ নাজমুল আলম প্রমুখ। বৈঠক শেষে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের কারণে ২৬ থেকে ২৯ এপ্রিল এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাগুলো হবে না। নির্বাচন কমিশনের অনুরোধে এই সময়ে পরীক্ষা নেয়া হবে না। এই চার দিনের মধ্যে ২৬, ২৭ এবং ২৮ তারিখ পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। ২৯ তারিখ কোন পরীক্ষা নির্ধারিত ছিল না। নির্ধারিত সময় বুধবার থেকেই পরীক্ষা হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমি বিভিন্ন স্থানে ঘুরে শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছেন, সূচী অনুযায়ী পরীক্ষা নিতেই হবে। যা কিছু ঘটুক, নির্ধারিত সময় ১ এপ্রিল থেকে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এর কোনো ব্যত্যয় হবে না। এসএসসির মতো ফাঁকে ফাঁকে পরীক্ষা নিলে শেষ করতে দীর্ঘ সময় লেগে যাবে। নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্তে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমর্থন দিয়েছেন। অভিভাবকেরাও ফোন করে বলেছেন, বেস্ট ডিসিশন। এসএসসি পরীক্ষার সময় হরতাল না দেয়ার আহ্বানের কথা উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এতো চিৎকার করলাম, অন্তত পরীক্ষার আগে-পরে দুই ঘণ্টা হরতাল দেবেন না। কিন্তু তারা তা আমলে নেননি। বিএনপিকে উদ্দেশ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আর সর্বনাশের পথে যাবেন না। হাত গুটিয়ে নিন। দয়া করে সবাই সতর্ক থাকবেন, যেন নিরাপদে পরীক্ষা হয়। মন্ত্রী বলেন, এবার বিএনপি-জামায়াতের হরতাল-অবরোধের কারণে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা একটিও রুটিনমাফিক নেয়া সম্ভব হয়নি। এটি এ দেশের পাবলিক পরীক্ষার ইতিহাসে একটি নেতিবাচক উদাহরণ হয়ে থাকবে। তবে আমরা এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাগুলো রুটিনমাফিক নেব। এর কোনো ব্যত্যয় হবে না। তিনি সারাদেশে হরতাল-অবরোধের মধ্যে সুষ্ঠুভাবে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা গ্রহণ করায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান। একই সঙ্গে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে গ্রহণে সর্বস্তরের জনগণের প্রতি সর্বাত্মক সহযোগিতা করার আহ্বান জানান। মন্ত্রী আরও বলেন, হরতাল-অবরোধের কারণে এবারের পরীক্ষা নিয়ে পরীক্ষার্থী-অভিভাবকদের মতো তিনিও উদ্বিগ্ন। বাস্তবে অবরোধ-হরতাল হচ্ছে না। হরতাল-অবরোধের নামে মানুষ পোড়ান হচ্ছে। বিএনপির উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, মানুষ হত্যাকারী কর্মসূচী বন্ধ করেন। বৈঠকে পরীক্ষার সময় কেন্দ্রের আশপাশের সকল কোচিং সেন্টার ও ফটোকপির দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এসএসসির একটি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্রে ভুল ছিল জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এটা আমরা খতিয়ে দেখছি। তবে এ ভুলের জন্য শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। সে তার প্রাপ্য পাবে।
×