নিজস্ব সংবাদদাতা, লালমনিরহাট, ২৯ মার্চ ॥ শান্ত শব্দ দূষণমুক্ত পরিবেশে ধর্মীয় ভাবধারায় শনিবার দিনব্যাপী ৩শ’ বছরের পুরনো সিন্দুরমতি মেলা শেষ হয়েছে। জেলা প্রশাসনের কঠোর উদ্যাগের কারণে মেলায় বহু বছর পর জুয়া, অশ্লীল নৃত্য ও মাইক বাজানো নিষিদ্ধ ছিল। তীর্থযাত্রী ও হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ বহু বছর পর এমন শান্ত পরিবেশে পুজো অর্চনা করতে পেরে মহাখুশি। খুশি সিন্দুরমতি গ্রামের সাধারণ মানুষরাও। কারণ এ বছর নানা কারণে তাদের জনদুর্ভোগে পড়তে হয়নি। এবারে সিন্দুরমতি মেলায় লাখো তীর্থভ্রমণে আসা মানুষের ঢল নামে। বহু বছর পর সিন্দুরমতি পুজো ও মেলা তাঁর নিজস্বতা ফিরে পেয়েছে। চৈত্র মাসে কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারীর ব্রহ্মপুত্র নদে শুক্রবার পুণ্যস্নান অনুষ্ঠিত হয়। এই পুণ্যস্নানের পরদিন সিন্দুরমতি পুজো ও মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে প্রায় ৩শ’ বছর ধরে। চিলমারীর পুণ্যস্নান ও সিন্দুরমতি পুজো উপলক্ষে বৃহস্পতিবার হতেই হিন্দুধর্ম বিশ্বাসীরা দূরদূরান্ত থেকে আসতে শুরু করে। এমনকি ভারতের দার্জিলিং, পশ্চিমবঙ্গ, কুচবিহার, শিলিগুড়ি হতেও হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা এসে ভিড় করে। তারা রংপুর, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটের হোটেল মোটেল ও পর্যটন কেন্দ্রে উঠে। স্বল্প আয়ের কেউ কেউ আবার সিন্দুরমতি পুকুরপাড়ে ও মন্দিরের পাশে তাঁবু খাটিয়ে রাত যাপন করছে। হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসীগণের বংশপরম্পরায় ধর্মবিশ্বাস সিন্দুরমতি পুকুরের পানিতে স্নান করলে পাপ মোচন হয়ে যায়। এক দিনের এ ঐতিহাসিক মেলায় উঠেছিল রকমারি মিষ্টান্ন, বিশাল বিশাল দেশী মাছ, গৃহস্থালি পণ্যসহ নিত্যপণ্য। দা, ছুরি, কাস্তে, কুড়াল, উরুন গাইন, ডালি, কুলা, খাটপালং, লেপতোষক, চাদর, পোশাক সামগ্রী হতে শুরু করে রয়েছে বাদ্যযন্ত্রের সমাহার। ঢোল, খোল, তবলা, মারমনি, দোতরা, একতারা, বেঞ্জু এবং বাঁশ ও বেতের তৈরি কুটির শিল্প সামগ্রী। এভাবে এই মেলা গ্রামীণ অর্থনীতিতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষে ভূমিকা রাখছে।