ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জাফর ওয়াজেদ

নির্বাচন পর্যবেক্ষণ বাণিজ্য আবারও

প্রকাশিত: ০৩:৪৪, ৩০ মার্চ ২০১৫

নির্বাচন পর্যবেক্ষণ বাণিজ্য আবারও

তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংস্থা নামধারীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। এদের দক্ষতা যোগ্যতা, কর্মকুশলতা নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়ে গেছে অতীতের মতোই। নির্বাচন একটি খেলা। এ খেলাটা একটা নিয়মের মধ্যে হতে হয়। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এ খেলায় অংশ নেয়। নির্বাচন কমিশন রেফারির মতো কাজ করে। নির্বাচনী পর্যবেক্ষকরা এ খেলা কতটুকু স্বচ্ছ ও সুন্দর হচ্ছে, তা দেখে প্রতিবেদন দেন। বাংলাদেশে কাদের দিয়ে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করা হয়- সে নিয়ে এন্তার অভিযোগ রয়েছে। নির্বাচন এলেই পর্যবেক্ষকদের হুড়োহুড়ি লেগে যায়। ২০০১ সালে জাতীয় ও স্থানীয় সরকারের বেশ কয়েকটি নির্বাচনে পর্যবেক্ষকদের নিরপেক্ষতা, যোগ্যতা নিয়ে নানান প্রশ্ন, অজস্র অভিযোগ উঠেছিল। অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন সংস্থার পর্যবেক্ষক নিয়োগ নিয়ে নানা অনিয়ম হয়। কোন কোন সংস্থা এক-দেড়শ’ বায়োডাটা জমা দিয়ে ইসি থেকে লক্ষাধিক পর্যবেক্ষক কার্ড নিয়ে যায়। আবার কিছু সংস্থার বিরুদ্ধে পর্যবেক্ষক কার্ড বাণিজ্য করার অভিযোগ আসে। এ সময় একাধিক মামলার দাগি আসামিও কার্ড পেয়ে পর্যবেক্ষক বনে যায়। বিদেশী সাহায্য সংস্থার মোটা অঙ্কের টাকা পকেটস্থ করতে কয়েকটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী সংস্থাও পর্যবেক্ষক সংখ্যা বাড়াতে আদাজল খেয়ে মাঠে নামে। এ দেশে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনগুলোতে নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের কার্যক্রমের সততা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল বহুবার। এই কার্যক্রম যেহেতু দাতাদের অর্থে পরিচালিত এবং এ কার্যক্রম করে থাকে মূলত এনজিওরা। আর এনজিও খাতে দুর্নীতি যেহেতু প্রকট, কাজেই নির্বাচন পর্যবেক্ষণ কার্যক্রমও স্বচ্ছতার অভাব সুস্পষ্ট। নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা নিশ্চিত করার জন্যই সাধারণত নির্বাচন পর্যবেক্ষণের অনুমতি দেয়া হয়। আর তা ফলপ্রসূ হওয়ার অন্যতম শর্ত হলো, পর্যবেক্ষকদের নিজেদের স্বচ্ছতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা নিশ্চিত করা নির্বাচন কমিশনের পর্যবেক্ষণ নীতিমালার মূল কথাই হচ্ছে, পর্যবেক্ষকদের দলনিরপেক্ষ হতে হবে এবং তাদের অবস্থানের কারণে নির্বাচন প্রক্রিয়া যেন বাধাগ্রস্ত না হয়, তা নিশ্চিত করা। নীতিতে রয়েছে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের সময় কোন পর্যবেক্ষক কোন রাজনৈতিক দলের পক্ষে কাজ করলে তাকে কালো তালিকাভুক্ত করা হবে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রশ্নটি বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে প্রবল বলেই এখানে পর্যবেক্ষণের তোড়জোড় বেশি। ইউরোপ-আমেরিকার নির্বাচনে এ সবের বালাই নেই। ভারতে বিদেশী পর্যবেক্ষকদের সুযোগ দেয়া হয় না। কিন্তু বাংলাদেশে সব সময় বিদেশীদের সাদরে গ্রহণ করা হয়। যারা নানা জ্ঞান ও পরামর্শ দিয়ে থাকে। নিজ দেশে পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি না থাকলেও বিদেশীরা এদেশের নির্বাচন নিয়ে ব্যাকুলতা প্রকাশ করে। কত কি সুবচন তারা দেয়। পর্যবেক্ষণের ছদ্মাবরণে কোন দলের পক্ষে গোপন প্রভাব বিস্তারের সুযোগ নেয়। নির্বাচন কমিশন এদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার ব্যবস্থা নিয়েছে এমনটা শোনা যায়নি। পর্যবেক্ষণ শেষে বিভিন্ন পর্যবেক্ষক দল যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এতকাল, তাতে বস্তুনিষ্ঠতার ঘাটতি যেমন ছিল, তেমনি পক্ষপাতহীনও ছিল না। অথচ নিয়মানুযায়ী তা হওয়ার কথা ছিল না। বরং নির্বাচন নিয়ে বহু ভিত্তিহীন প্রশ্ন তুলেছে এ সব সংস্থা। গত শতকের আশির দশকে এদেশে পর্যবেক্ষণ প্রথা চালু হয়। সে সময় নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য বেশকিছু এনজিওর আবির্ভাব হয়েছিল। তারা বিদেশ হতে অর্থ সাহায্য পায়। কাগজে কলমে যত কর্মী দেখানো হয়েছিল, বাস্তবে সেই সংখ্যক কর্মীরা নিয়োজিত হয়নি। প্রশিক্ষণে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের নিয়োগ না দিয়ে, নিজেদের আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবদের নিয়োগ করার ঘটনাও রয়েছে। নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারীদের পর্যবেক্ষণে অবাধ স্বাধীনতা দেয়া হলেও তাদের দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, কর্মপরিকল্পনা যাচাই করা হয়নি। তারা অঘোষিত কাজ করছে কিনা তা কমিশনের পর্যবেক্ষণ করার কথা থাকলেও তা হয়নি। দাতা সংস্থার অর্থায়নে যে পর্যবেক্ষণ চালানো হয়, তার ওপর কমিশনের কোন পর্যবেক্ষণও ছিল না। দাতাদের কাছ থেকে নেয়া অর্থ কে কিভাবে ব্যয় করছে কিংবা ভোটাারদেরকে ভোটদানে উদ্বুদ্ধ করার নামে তাদেরকে কোন বিশেষ দলের পক্ষে বা কোন বিশেষ দলের বিপক্ষে উদ্বুদ্ধ করছে কিনা, সে বিষয়গুলো দেখ-ভাল করার কোন ব্যবস্থা ছিল না নির্বাচন কমিশনের। অধিকাংশ এনজিওর এ দেশে সুপ্ত রাজনৈতিক তৎপরতা রয়েছে, কাজেই তাদের নির্বাচনী কাজ করতে দেয়ার আগে তাদের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার কাজটিও করা হয়নি গত সময়ের নির্বাচনগুলোতে। সপ্তম, অষ্টম ও নবম সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষণে দাতার কী পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করেছে এবং সে অর্থ কীভাবে ব্যয়িত হয়েছে, পর্যবেক্ষকদের কাজ কেমন হয়েছে, কমিশন তাদের কাছ হতে কী ধরনের প্রতিবেদন বা ফিডব্যাক পেয়েছে তা আজও দেশবাসী জানেন না। তবে প্রকাশিত নির্বাচনকেন্দ্রিক গবেষণা থেকে জানা যায়, অতীতের নির্বাচনগুলোতে অনেক এনজিওই তাদের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করেনি। ৫ম সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম নিয়ে অভিযোগ উত্থাপিত না হলেও ৭ম ও ৮ম সংসদ নির্বাচন নিয়ে অভিযোগ ওঠে। নির্বাচন অনুষ্ঠান পর্যবেক্ষণের জন্য নির্বাচন এলে বেশকিছু এনজিওর আবির্ভাব ঘটে। তারা দাতাদের অর্থের ছড়াছড়ি দেখে এনজিওরা নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ভীড় জমায়। ২০০৭ সালের ২৫ আগস্ট একজন নির্বাচন কমিশনার বলেছিলেন, নির্বাচন অনুষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত এনজিওগুলো বিদেশ থেকে অর্থ সাহায্য এনে প্রয়োজনীয় এবং প্রতিশ্রুত কাজ করেছে না। ভোটার সচেতনতা সৃষ্টির জন্য এনজিওগুলো কোনও তৎপরতা চালায় না। ভোটার তালিকা প্রণয়নে সহযোগিতা করার জন্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে ৩৩টি এনজিওর লিখিত সমঝোতা হলেও তারা কোন প্রকার সহযোগিতা করে না। এ এনজিওগুলো অনেকটা ঠিকাদারদের মতো সংস্থা। এদের কোন সামাজিক দায়বদ্ধতা নেই। পুরো নির্বাচনকে তারা ব্যবসায়ের দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখে। যেখানে টাকার বিনিময়েই সার্ভিস ডেলিভারি করা হতো। সপ্তম সংসদ নির্বাচনে এনজিও জোট ফেয়ার ইলেকশন মনিটরিং এ্যালায়েন্স তথা ফেমার নির্বাচন পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম নিয়ে সমালোচনা ও বিতর্ক ওঠে। একটি বিশেষ দলের প্রতি বিশেষত জামায়াত-বিএনপির প্রতি পক্ষপাতিত্ব প্রমাণিত হয়। নির্দলীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী জোট পরিচয় দিলেও ওই নির্বাচনে ফেমার কার্যক্রম নিরপেক্ষ ছিল না। নির্বাচনের পর বিএনপিও জামায়াত তাদের পরাজয়ের কারণ নির্ণয়ের সময় এনজিওদেরকে দায়ী করেছিল। অথচ এনজিওগুলো ছিল তাদের প্রচারণার কাজ করেছে। অষ্টম সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী এনজিওগুলোর রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা আরও নগ্নভাবে প্রকাশ পায়। আওয়ামী লীগ অষ্টম সংসদ নির্বাচনকালে ৮টি এনজিওর বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনে এদেরকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের অনুমতি না দেয়ার জন্য কমিশনকে বলেছিল। অপরদিকে বিএনপিও কয়েকটি এনজিওর বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনেছিল। রাজনৈতিক আবরণ পরিহিত এনজিওরা তাদের অবস্থান হতে নড়েনি। দেশীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের ব্যাপারে অনেক রাজনৈতিক দলের আপত্তি দীর্ঘদিনের। বিশেষ করে ২০০১ সালের নির্বাচনে অনেক সংস্থার কর্মীদের বিশেষ বিশেষ রাজনৈতিক দলের কর্মীর মতো তৎপরতা থেকে এই আপত্তি ওঠে। এরপর ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারির বাতিল নির্বাচনকে সামনে রেখে কিছু পর্যবেক্ষক সংস্থার কাজ ছিল দলীয়। গত কয়েকটি নির্বাচনকে সামনে রেখে গঠিত পর্যবেক্ষক সংস্থার অনেকগুলো বিশেষ রাজনৈতিক দলের আনুকূল্যে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। এরা নিজেরাই পরস্পর পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগের তীর ছুড়েছিল। ২০০১ সালে এ সব সংস্থার কর্মীদের পরিচয়পত্র প্রদান নিয়ে জটিলতা, সমালোচনা তীব্র হয়ে ওঠেছিল। এদের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করার মতো কোন সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক কাঠামো ছিল না। এদের যে জনবল তা-ও প্রশিক্ষিত জনবল ছিল না। সর্বোপরি এ সব সংগঠনের আদর্শ ও উদ্দেশ্য নির্বাচন পর্যবেক্ষণ বা গণতন্ত্র উন্নয়নে সহায়ক নয়। এদের মূল উদ্দেশ্য ছিল, এক ধরনের বাণিজ্য সাধন। এরা মূলত কিছু নাগরিক সুবিধাবাদীদের এক ধরনের বিদেশী অর্থ লোপাটের আখড়া। দাতাদের থেকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য পাওয়া অর্থসাহয্যের বড় অংশ নিজেরা ব্যয় করে। কিছু বেকার ও দলীয় লোকদের কাজে নিয়োগ দেয় এরা। ২০০১ হতে সংগঠনগুলো বিএনপি-জামায়াত সরকারের আনুকূল্য পেয়েছে। বিশেষ করে সংগঠন প্রধানদের স্বজনরা সরকারের কাছ থেকে অবৈধ সুযোগ-সুবিধা নিয়েছে। সত্যিকার অর্থে গণতন্ত্রে উন্নয়ন ও নির্বাচন পদ্ধতির স্বচ্ছতা তৈরির কাজ যদি এই সংগঠনগুলো করতো, তবে তারা দেশে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে পর্যবেক্ষক গড়ে তুলতো। নিজেরা দেশীয় মাপে অর্থ ব্যয় করতো। মূলত এরা যেমন দলীয়, তেমনি নির্বাচনী বাণিজ্যের অংশে পরিণত। এরা নিরপেক্ষভাবে পর্যবেক্ষণের দাবি করলেও বাস্তবে তারা তা করে না। দাতাদের খায় তাই দাতাদের অঘোষিত সঙ্কেত অনুসরণ করেই এরা কাজ করেছে। ২০০৮ সালে নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী ৩৩টি সংগঠনের ফোরাম ‘ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপ’-এর (ইডাব্লিউজি) দুটি সংগঠন ওই ফোরামের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। অভিযোগ করেছিল, নিবন্ধন ও ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে ইডাব্লিউজি নির্বাচন কমিশনের ঠিকাদার কাজ করছে। অর্থলোলুপতার জন্যই তারা এ কাজ করছে। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে এক ধরনের সম্পর্ক রেখে নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সম্ভব নয়। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বেসরকারী সংস্থা এশিয়ান ফাউন্ডেশন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ও জনসচেতনতামূলক কাজের জন্য ইডাব্লিউজিকে ৪২ লাখ ডলার প্রদান করেছিল। এর অর্ধেক অংশ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ও অপরাংশ জনসচেতনতা কাজের জন্য দেয়া হয়। ২০০৭ সালে বাতিল হওয়া ২২ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ইডাব্লিউজি গঠন হয়। ওই নির্বাচন না হওয়ায় এর সদস্য এরা পরে ভোটার নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় জড়িয়ে পড়ে। এরা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করে এজন্য। ফলে এরা কমিশনের অংশে পরিণত হয়। যা নির্বাচন পর্যবেক্ষণের নিরপেক্ষতাকে ক্ষুণœ করেছে। এদের অনেকেরই আবার নির্বাচন পর্যবেক্ষণের অভিজ্ঞতা ছিল না। এরা মূলত ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম, মানবাধিকার, পরিবেশ এবং অন্য বিষয়ে কাজ করে। ২০০৮ এর ২৯ ডিসেম্বরের নির্র্বাচনে সারাদেশে তারা এক লাখ ৮১ হাজার পর্যবেক্ষক নিয়োগ দিয়েছে বলে দাবি করে। কিন্ত বাস্তবে তা ছিল না। অথচ দাতাদের কাছ থেকে অর্থ নিয়েছিল। ২৫ বছরের নিচে পর্যবেক্ষক নিয়োগ দান দেয়ার বিধানও মানেনি। ১৮ বছর বয়সী স্কুলছাত্রদের নিয়োগ দেয়। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নির্বাচনের আগে ২৪টি পর্যবেক্ষক সংস্থার বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছিল। এর মধ্যে তালেয়া রেহমানের ডেমোক্রেসি ওয়াচের বিরুদ্ধে তার বাসভবনে বিএনপি-জামায়াত জোটের সভা এবং খালেদাকে পুষ্প দিয়ে তালেয়ার অভ্যর্থনা জানানোর ঘটনা নজরে আনে। কিন্তু বিএনপি তালেয়ার সংস্থাকে বহাল রাখার অনুরোধ জানায়। ফেমার বিরুদ্ধে অভিযোগও রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার। আর বিএনপি মন্ত্রী মইন খানের খান ফাউন্ডেশনকে অনুমতি দিতে নিষেধ করেন। কমিশন ফেমাকে বাদ দেয়। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে এনজিওগুলোর তৎপরতা শুরু চোখে আঙ্গুল দিয়ে অতীতের ঘটনা ও দৃশ্যাবলী সামনে নিয়ে আসে। পর্যবেক্ষকদের ভোটকেন্দ্রের বুথে প্রবেশাধিকার ভোটারদের প্রভাবিত করেÑ তাই তাদের বুথে প্রবেশ সঙ্গত নয়। কমিশন সঠিক সিদ্ধান্ত নিলে, ভুঁইফোঁড় এবং অদক্ষ পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলো ঝরে যাবে। কমিশনের উচিত নয়, নির্বাচন বাণিজ্যের সুযোগ করে দেয়া। কারণ এ সব অর্থ কোন না কোনভাবে নির্বাচনে প্রভাব ফেলে। দলীয় সংস্থাকে নিরপেক্ষ মর্যাদা কমিশন দিলে তা নির্বাচন পরিবেশকে কলুষিত করবে। ২০০১ হতে যে ভুল করে আসা হযেছে, তা শোধরানো জরুরী। নির্বাচনে বিদেশী দাতাদের অর্থ ব্যবহারের হিসেবটাও কমিশন রাখবেন এটা নির্বাচনের স্বার্থেই করা সঙ্গত।
×