ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ৩০ মার্চ ২০২৪, ১৬ চৈত্র ১৪৩০

যবিপ্রবিতে বিক্ষোভ করায় ১০শিক্ষার্থী বহিষ্কার

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ২৯ মার্চ ২০১৫

যবিপ্রবিতে বিক্ষোভ করায় ১০শিক্ষার্থী  বহিষ্কার

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ ছাত্র খুনের আসামি যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদকের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার ও ভিসির অপসারণসহ বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে। শনিবার বেলা ১১টায় রাজনীতি নিষিদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যবিপ্রবি ছাত্রলীগের উদ্যোগে বিক্ষোভ শেষে এ দাবি জানানো হয়। ২৪ মার্চ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জামিনে মুক্তি হওয়ার পর ছাত্রলীগ এ দাবি করল। একই সঙ্গে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ দাবি বিবেচনায় নিতে আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে। এদিকে, এই বিক্ষোভের ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জরুরী সভা করে ঘটনা তদন্তে ৯ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। একই সঙ্গে ১০ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যবিপ্রবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সঞ্জয় ব্যানার্জি বাপ্পা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সমিতি, বঙ্গবন্ধু পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠন রয়েছে। কিন্তু ছাত্রলীগের কমিটি মেনে নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এজন্য ছাত্রলীগকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতি করার সুযোগ দেয়া, সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ বহিষ্কৃতদের ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দেয়া, ভিসির অপসারণ, নতুন হল স্থাপন, পরিবহন সুবিধা বাড়ানো, ক্যাম্পাসে ওয়াই ফাই চালু এবং চিকিৎসা সুবিধা বৃদ্ধির জন্য ডাক্তার নিয়োগ দাবিতে বিক্ষোভ করে ছাত্রলীগ। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ দাবি বিবেচনায় নিতে হবে। তা হলে ধারাবাহিক কঠোর কর্মসূচী দেয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। মিছিলে নেতৃত্ব দেন যবিপ্রবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রাশেদুজ্জামান রাজন, সহ-সভাপতি শাকিল আহম্মদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওহেদুজ্জামান, হেলাল উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফরমান মাহমুদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সিমন আল হিমেল, সমাজকল্যাণ সম্পাদক মোস্তাফা তারেক প্রমুখ। এদিকে, যবিপ্রবিতে বিক্ষোভের পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জরুরী সভা করেছে। যবিপ্রবির জনসংযোগ দফতরের সহকারী পরিচালক হায়াতুজ্জামান মুকুল জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির ঘটনার পর জরুরী সভা করা হয়েছে। সভায় ঘটনা তদন্তে ৯ সদস্যের একটি কমিটি ঘটনা করা হয়েছে। পাশাপাশি এই বিশৃঙ্খলায় জড়িত অভিযোগে ১০ ছাত্রকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের নাম রবিবার প্রকাশ করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, যবিপ্রবি ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হলেও গত বছর ১৬ মে সুব্রত বিশ্বাসকে সভাপতি ও এসএম শামীম হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে ছাত্রলীগের কমিটি গঠন হয়। এ নিয়ে অন্তর্কোন্দলে জড়িয়ে পড়ে ছাত্রলীগ। এর জের ধরে গত বছর ১৪ জুলাই খুন হন পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের মেধাবী ছাত্র নাইমুল ইসলাম রিয়াদ। এরপর ১৩ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় রিজেন্ট বোর্ডের সভায় রিয়াদ খুনের ঘটনায় যবিপ্রবি ছাত্রলীগের সভাপতি সুব্রত বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক শামীম হোসেনকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়। এছাড়া পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ফয়সাল তানভীরকে দুই বছর ও শারীরিক শিক্ষা বিভাগের ছাত্র আজিজুল ইসলামকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। এরপর থেকে যবিপ্রবি ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের কোন কর্মকা- দেখেনি শিক্ষার্থীরা। ২৪ মার্চ যবিপ্রবি ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জামিনে জেল থেকে মুক্তি পান। এদিন তাদের জেলগেটে সংবর্ধনা দেয়া হয়। আর এর তিন দিন পর ২৭ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার দাবি জানায় ছাত্রলীগ।
×