ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জার্মানির জন্য পোশাক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশের আহ্বান

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ২৯ মার্চ ২০১৫

জার্মানির জন্য পোশাক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশের  আহ্বান

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ও কম্বোডিয়ার মতো দেশে জার্মানির জন্য পণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ করতে আহ্বান জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা করতে দেশটির তৈরি পোশাক ও জুতোর ব্র্যান্ডগুলোর প্রতি এই তালিকা প্রকাশ করার আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থাটি। গ্লোবাল সাপ্লাই চেইনে স্বচ্ছতার মাধ্যমে শ্রমিকদের অধিকার ও নিরাপত্তার প্রতি জার্মান পোশাক ব্র্যান্ডগুলোর শ্রদ্ধা দেখানো উচিত বলে মন্তব্য করেন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের জার্মানির পরিচালক ভেনজেল মিচালস্কি। তবে জার্মানির প্রধান ব্র্যান্ডগুলোর অন্যতম এ্যাডিডাস। এই ব্র্যান্ড ২০০৭ সাল থেকে তাদের পোশাক সরবরাহকারীদের তালিকা প্রকাশ করছে বলেও এইচআরডব্লিউর বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। সম্প্রতি সংস্থাটির এক প্রতিবেদনে কম্বোডিয়ায় পোশাক শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় সরকারী পদক্ষেপের ঘাটতির কথা উঠে এসেছে বলে বিবৃতিতে বলা হয়। যেসব কারখানায় এ্যাডিডাস, আরমানি, গ্যাপ, এইচএ্যান্ডএম, জো ফ্রেশ ও মার্কস এ্যান্ড স্পেনসারের মতো ব্র্যান্ডের পোশাক তৈরি করা কম্বোডিয়ার ওই সব কারখানার কর্মপরিবেশ ও শ্রমিক অধিকার নিয়ে ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর পদক্ষেপ নেয়ার প্রয়োজন রয়েছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, কম্বোডিয়ার অনেক কারখানায় শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটি ও অন্যান্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা আর তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে দুই বছরের কম মেয়াদের চুক্তিতে নিয়োগ দেয়া হয়। তাই চুক্তি অনুযায়ী মেয়াদ শেষে চাকরি হারানোর ভয়ে শ্রমিকরা নিজেদের অধিকার নিয়ে কথা বলতে পারেন না। জার্মানির অনেক ব্র্যান্ডই কম্বোডিয়ার ওই সব কারখানা থেকে পোশাক কিনলেও এ ব্যবস্থার অবসানে তারা কোন পদক্ষেপ নেয় না। মানবাধিকার সংস্থাটি বলছে, তৈরি পোশাক ব্র্যান্ডগুলোর দায়িত্ব পোশাক সরবরাহকারীদের তালিকা প্রকাশ করে তাদের সাপ্লাই চেইনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। পাশাপাশি সরবরাহকারী কারখানার কর্মপরিবেশ ও অন্যান্য সমস্যা সমাধানের বিষয়েও সতর্ক করতে হবে। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল বাংলাদেশের সাভারের রানা প্লাজা ধসের পর কারখানার কর্মপরিবেশ ও বিভিন্ন সমস্যাসহ সাপ্লাই চেইনের স্বচ্ছতার অভাব ধরা পড়ে। ওই ঘটনায় হাজারের বেশি পোশাক শ্রমিক নিহত এবং আহত হন কয়েক হাজার শ্রমিক। এইচআরডব্লিউর প্রতিবেদনে বলা হয়, যাই হোক বিপর্যয়ের আগে রানা প্লাজার সমস্যার দিকে নজর না দেয়ার পেছনে অন্যতম কারণ ছিল ব্র্যান্ডগুলোর সাপ্লাই চেইনের স্বচ্ছতার অভাব। রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপ থেকে পোশাক বের করে তাতে বিদেশী ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ড লেবেল সবার সামনে তুলে ধরে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন ও শ্রমিক অধিকার নিয়ে কাজ করে এমন অনেক সংগঠন। এ সময় তারা ওই সব ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠানের কাছে হতাহতদের জন্য ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি পোশাক খাতে সংস্কারের জন্য বিদেশী ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সহায়তার দাবি করে। রানা প্লাজায় জার্মানির অন্যতম পোশাক ব্র্যান্ড কেআইকের পোশাক তৈরি হচ্ছিল বলে অভিযোগ করে শ্রমিক সংগঠন ও শ্রমিক অধিকারকর্মীরা। তবে ২০১৪ সালের ২ এপ্রিল পোশাক ব্র্যান্ড কেআইকের এক বিবৃতিতে বলা হয়, রানা প্লাজার কোন কারখানার সঙ্গে তাদের সরাসরি কোন ব্যবসা ছিল না। হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে এক চিঠিতে রানা প্লাজায় হতাহতদের সহায়তায় গঠিত তহবিলে অর্থ দেয়ার কথা জানায় কেআইকে। এর আগে ২০১২ সালের নবেম্বরে বাংলাদেশের আশুলিয়ায় তাজরিন ফ্যাশনসে ঘটে আরেক ভয়াবহ অগ্নিকা-। ওই কারখানায় অগ্নিকা-ে শতাধিক শ্রমিক নিহত হন। শ্রমিকদের অভিযোগ, সেখানেও জামার্ন ব্র্যান্ড কেআইকের পোশাক তৈরি হচ্ছিল।
×