ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

দিনে ক্ষতি ৩ লাখ টাকা

যশোরের চাঁচড়া মৎস্য পল্লীতে বেচাকেনায় ধস

প্রকাশিত: ০৭:০৬, ২৮ মার্চ ২০১৫

 যশোরের চাঁচড়া মৎস্য পল্লীতে   বেচাকেনায়  ধস

‍স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ডাকা টানা হরতাল ও অবরোধের কারণে যশোরের চাঁচড়া মৎস্য পল্লীতে বেচাকেনায় ধস নেমেছে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতা না আসায় প্রতিদিন অন্তত ৩০ লাখ টাকার ক্ষতি হচ্ছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। আবার যারা আসছেন তারা অধিক পিকআপ ভাড়ার কারণে মাল না কিনে ফিরে যাচ্ছেন। এভাবে চলতে থাকলে এ শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত প্রায় দেড় লাখ পরিবার পথে বসবে বলে তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা। ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সারাদেশে চাহিদার মোট আমিষের শতকরা ৪০ থেকে ৫০ ভাগ যশোর থেকে পূরণ হয়ে থাকে। যশোর চাঁচড়া মৎস্য পল্লীর ৪২টি হ্যাচারি মালিক ও পাঁচ হাজার মৎস্য চাষি সাদা মাছের রেণু (এক দিন বয়সী) ও পোনা (ছোট মাছ) উৎপাদন করে সারাদেশে সরবরাহ করেন। এতে প্রতিবছর ৫০০ থেকে ৭০০ কোটি টাকার লেনদেন হয় এই মৎস্য পল্লীতে। যশোর বাবলাতলা মৎস্য চাষি সমিতির উপদেষ্টা নজরুল ইসলাম বলেন, চাঁচড়া মৎস্য পল্লীতে উৎপাদিত পোনা মাছ বিক্রির জন্য প্রতিদিন সকালে যশোরের শংকরপুর নতুন বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন বাবলাতলায় হাট বসে। এই হাটে সারাদেশের বিভিন্ন এলাকার ঘের মালিকরা পোনা মাছ কিনতে আসেন। তবে হরতাল-অবরোধে বাইরের ব্যবসায়ীরা তেমন না আসায় বেচাকেনা অনেক কমে গেছে। তিনি বলেন, হরতাল-অবরোধের আগে বাবলতালা হাটে প্রতিদিন কমপক্ষে ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকার পোনা মাছ কেনাবেচা হতো। কিন্তু এখন তা অর্ধেকে নেমে এসেছে। সেই সঙ্গে কমেছে মাছের দামও। এতে চাষিদের পাশাপাশি পথে বসার উপক্রম হয়েছে এ হাটের ৭০ থেকে ৮০ ব্যবসায়ীর। চাঁচড়া রাজবাড়ী এলাকার মৎস্য চাষি শরীফুল ইসলাম বলেন, হরতাল-অবরোধের মধ্যে গাড়ি চলাচল করলেও নাশকতার ভয়ে অন্যান্য জেলা থেকে তেমন ক্রেতা আসছে না। ফলে পোনা মাছের দাম একেবারেই কমে গেছে। ২০০ থেকে ২৫০ গ্রাম ওজনের চিতল মাছের পোনা স্বাভাবিক সময়ে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি করা হতো। কিন্তু এখন প্রতি পিস চিতল বিক্রি হয়েছে মাত্র ১০০ টাকায়। এতে চাষিরা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এছাড়াও ১০০ টাকার প্রতি কেজি (৪০-৫০ পিস) সিলভার কার্প পোনা ৭০ টাকা, ১৩০ টাকার কেজি (১০ পিস) জাপানী পুঁটি ১০০ টাকা, ২০০ টাকা দরের গ্লাসকার্র্প কেজি প্রতি (১০-১৫ পিস) ১৫০ টাকা, ১৩০ টাকার প্রতি কেজি (১৫ পিস) কাতলা পোনা ৯০ টাকায়, তিন হাজার টাকার বিভিন্ন ধরনের রেণু পোনার কেজি ১৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাগুর- তেলাপিয়াসহ সব ধরনের পোনার ক্রেতা না থাকায় দাম কমেছে। মণিরামপুরের কপালিয়া থেকে আসা পোনা মাছ ব্যবসায়ী বিপুল মলিক বলেন, আমরা এই হাট থেকে পোনা কিনে মংলা-বাগেরহাট এলাকায় নিয়ে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করি।
×