ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

লাঙ্গলবন্দের পুণ্যস্নান

প্রকাশিত: ০৬:১৮, ২৮ মার্চ ২০১৫

লাঙ্গলবন্দের পুণ্যস্নান

সব ধর্মের মধ্যেই নিজস্ব কিছু ধর্মীয় রীতিনীতি ও আচার-আনুষ্ঠানিকতা থাকে। হিন্দুধর্মের তেমনি এক ধর্মীয় অনুষ্ঠান হচ্ছে লাঙ্গলবন্দের পুণ্যস্নান। প্রতিবছর চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টম তিথিতে ব্রহ্মপুত্র নদীর তীরে এই স্নানউৎসব হয়। প্রায় ১৫ লাখের বেশি পুণ্যার্থী স্নানের মধ্য দিয়ে পাপ মোচনের লক্ষ্যে ব্রহ্মপুত্র তীরে আসেন। এবারও পুণ্যার্থীদের জন্য প্রস্তুতি নেয়া হয়েছিল। লাঙ্গলবন্দের তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে প্রায় ১৬টি ঘাটে স্নানের ব্যবস্থা করে আয়োজকরা। স্নানউৎসব ঘিরে ব্রহ্মপুত্র নদীর তীরে মহিলাদের কাপড় বদলানোর কক্ষ, বিশুদ্ধ পানির জন্য ৫০টি টিউবওয়েল, ৭০টি টয়লেট এবং ৩৫টি সেবাকেন্দ্র ও বিনামূল্যে খাবার আয়োজন ছিল। হে মহাভাগ ব্রহ্মপুত্র, ‘হে লৌহিত্য তুমি আমার পাপ হরণ কর’ এই শ্লোক উচ্চারণ করে দূর্বাঘাস, বেলপাতা, কলা, আম, ডাব ও ফুল দিয়ে পাপ মোচনের বাসনায় ব্রহ্মর কাছে কৃপা প্রার্থনার মধ্য দিয়ে স্নান সমাপ্ত করে। কিন্তু ২৭.০৩.২০১৫ তারিখ শুক্রবার সকাল ৫টা ৪৮ মিনিট ৪৭ সেকেন্ডে যে ১৬টি ঘাটে স্নান শুরু হয় তার মধ্যে ‘রাজঘাটে’ স্নানের সময় পুণ্যার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়। সকাল ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে এই ঘাটে প্রচ- ভিড় লক্ষ্য করা যায় এবং একপর্যায়ে পদদলিত হয়ে ১০ জনের মৃত্যু হয়। এদের মধ্যে ৭ জন নারী ও ৩ জন পুরুষ। সবার বয়স পঞ্চাশোর্ধ্ব। আহত হয়েছে বেশ কয়েকজন। সব ধরনের প্রস্তুতি, ভলেন্টিয়ার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা থাকার পরও এই মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটে। ধর্মীয় এই আনুষ্ঠানিকতা পালনে মৃত্যুর বিষয়টি দুঃখজনক। ভবিষ্যতে যেন এই ধরনের বেদনাদায়ক ঘটনা না ঘটে তাই স্নানার্থীদের সচেতন হতে হবে। নিয়ম শৃঙ্খলার মধ্যে পুণ্যস্নান সমাপ্ত করতে হবে। প্রয়োজনে ঘাটের সংখ্যা আরও বাড়ানো যেতে পারে। ভাবিষ্যতে লাঙ্গলবন্দ স্নানউৎসব উদ্যাপন কমিটি স্নানের বিষয়টি নির্বিঘেœ করার পদক্ষেপ নেবেন এই প্রত্যাশা রইল। তবে স্নানার্থীদের সচেতন হওয়া প্রয়োজন। নাজনীন বেগম আসাদ এভিনিউ, ঢাকা।
×