ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আর্থিক প্রতিষ্ঠানে প্রধান নির্বাহী নিয়োগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা

প্রকাশিত: ০৬:১২, ২৭ মার্চ ২০১৫

আর্থিক প্রতিষ্ঠানে প্রধান নির্বাহী নিয়োগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীদের দাবির প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুরক্ষা নীতি (প্রধান নির্বাহী নিয়োগসংক্রান্ত নীতিমালা) প্রণয়ন করেছে। এখন থেকে বিভিন্ন তফসিলি ব্যাংকের নির্বাহীদের নিয়োগ বা অপসারণে যেভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতি নিতে হয় আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও ঠিক একই নীতি অনুসরণ করতে হবে। এ নীতিমালায় বলা হয়েছে, ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীদের নিয়োগ বা পুনঃনিয়োগের পূর্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে। এ নিয়োগের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে। আর অনুমোদন গ্রহণের লক্ষ্যে পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান কর্তৃক স্বাক্ষরিত প্রস্তাবের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সব তথ্য, নিয়োগের শর্তাবলী, নির্ধারিত প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ বেতন ভাতা এবং পর্ষদের অনুমোদনের অনুলিপি দাখিল করতে বলা হয়েছে। কার্যরত প্রধান নির্বাহীর চলতি মেয়াদ শেষ হওয়ার কমপক্ষে এক মাস পূর্বে নিয়োগ বা পুনঃনিয়োগের আবেদনপত্র কেন্দ্রীয় ব্যাংকে প্রদান করতে হবে। এছাড়া প্রতিষ্ঠান তথা জনস্বার্থে বাংলাদেশ ব্যাংক যে কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীর নিয়োগ বাতিল করতে পারবে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পূর্বানুমোদন ছাড়া প্রধান নির্বাহীকে তার পদ হতে বরখাস্ত, অব্যাহতি প্রদান বা অপসারণ করা যাবে না। কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীর পদ খালি রাখলে সেখানে কেন্দ্রীয় ব্যাংক একজন প্রশাসক নিয়োগ করতে পারবে, যার বেতন-ভাতা বহন করবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান। তবে প্রতিষ্ঠান চাইলে শূন্যপদে প্রধান নির্বাহী পদের অব্যবহিত নিচের পদ থেকে কোন যোগ্য কর্মকর্তাকে সর্বোচ্চ তিন মাসের জন্য ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী হিসেবে নিয়োগ দিতে পারবে। এ নীতিমালায় প্রধান নির্বাহীর সক্রিয়া কার্যকাল হবে সর্বোচ্চ ৬৫ বছর। আর নিয়োগ দিতে হবে তিন বছরের জন্য। যোগ্যতা হিসেবে পূর্ব অভিজ্ঞতায় কাজের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও আর্থিক সংহতি, অভিজ্ঞতা ও উপযুক্ততা, চারিত্রিক সংহতির বিষয়ে বেশ কিছু শর্তাবলী যোগ করা হয়েছে। বেতন-ভাতাদিরও নির্দিষ্ট একটা নিয়ম মেনে চলতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে তাদের। তবে চাকরি চলাকালীন নিয়োগে উল্লিখিত বেতন-ভাতার শর্ত পরিবর্তন করা যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। উল্লেখ্য, সম্প্রতি পিপলস লিজিং থেকে বেনামি সাত পরিচালক ৫০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। এর আরও অনেক প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন অনিয়মের তথ্য বেরিয়ে আসে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শনে। এসব অনিয়মে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায় প্রধান নির্বাহীদেরও। এতে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে অভিযোগ করেন তাদের দিয়ে পরিচালনা পর্ষদ এ ধরনের অনিয়মে সহযোগিতা করতে বাধ্য করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান নির্বাহীরা ব্যাংকের এমডিদের মতো সুরক্ষা দেয়ার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে অনুরোধ করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতেই এ নীতিমালা জারি করল বাংলাদেশ ব্যাংক।
×