ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

স্বল্প মূলধনী কোম্পানির আলাদা বাজার গঠনের উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০৬:০৮, ২৭ মার্চ ২০১৫

স্বল্প মূলধনী কোম্পানির আলাদা বাজার গঠনের উদ্যোগ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ স্বল্প মূলধনী কোম্পানিগুলোর জন্য স্টক এক্সচেঞ্জে আলাদা বাজার ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। ফলে তালিকাভুক্তিতে ন্যূনতম ৩০ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের শর্ত পূরণে ব্যর্থ কোম্পানিগুলোও শেয়ারবাজার থেকে পুঁজি সংগ্রহ করতে পারবে। এছাড়া বর্তমানে স্টক এক্সচেঞ্জের মূল তালিকার স্বল্প মূলধনী কোম্পানিগুলোকেও নতুন বাজারে নিয়ে আসা যাবে। শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, স্বল্প মূলধনী কোম্পানিগুলোর মূলধন সংগ্রহের জন্য আলাদা বাজারব্যবস্থা গঠনের লক্ষ্যে গতকাল ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সঙ্গে বিএসইসির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই বৈঠকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে দুই স্টক এক্সচেঞ্জকে এ সংক্রান্ত ধারণাপত্র পেশ করতে বলা হয়েছে। আগামী জুনের মধ্যেই এ সংক্রান্ত বিধিবিধান তৈরি করা হবে। ফেব্রুয়ারিতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) পর্ষদও স্বল্প মূলধনী কোম্পানিগুলোর জন্য আলাদা ব্যবস্থা গঠনের প্রস্তাব দেয়। অবশ্য শেয়ারবাজারে স্বল্প মূলধনী কোম্পানিগুলোর অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধির প্রবণতায় ২০১১ সাল থেকেই এসব প্রতিষ্ঠানের জন্য আলাদা বাজারব্যবস্থা গড়ে তোলার দাবি জানানো হয়। বছরদেড়েক আগেও একই ধরনের প্রস্তাব দেয় সিএসই। তবে সে সময় প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) আলাদা বোর্ড গঠনে প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা থাকায় বিষয়টি আর এগোয়নি। তবে গত ডিসেম্বরে ডিএসই তাদের ট্রেডিং সিস্টেম আধুনিকীকরণ করায় এ বাধা এ বিষয়ে সিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়ালি উল মারূফ মতিন বলেন, আমরা সর্বশেষ গত ১৯ ফেব্রুয়ারি স্বল্প মূলধনী কোম্পানিগুলোর জন্য আলাদা বাজারব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রস্তাব দিয়েছি। এটি কার্যকর হলে প্রচলিত ব্যবস্থায় যেসব কোম্পানি শেয়ারবাজার থেকে মূলধন সংগ্রহ করতে পারছে না, তাদের জন্য একটি সুযোগ তৈরি হবে। এটি হবে এক ধরনের প্রি-লিস্টিং ব্যবস্থা। ছোট ছোট কোম্পানি এ বাজার থেকে মূলধন সংগ্রহ করে যখন একটা পর্যায়ে আসবে এবং মূল বাজারে তালিকাভুক্তির শর্ত পূরণ করতে পারবে তখন তাদের সেখানে জায়গা করে দেয়া যাবে। পাশাপাশি বর্তমানের স্বল্প মূলধনী কোম্পানিগুলোর শেয়ার নিয়ে মূল বাজারে প্রায়ই যে অস্থিরতা তৈরি হয়, তাও বন্ধ হবে। প্রসঙ্গত, বর্তমানে ন্যূনতম ৩০ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধন না হলে কোন কোম্পানি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হতে পারে না। পরিশোধিত মূলধনের এ শর্তের কারণে দেশের অধিকাংশ কোম্পানিই শেয়ারবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহের সুযোগ পাচ্ছে না। অথচ বাজার থেকে মূলধন সংগ্রহ করতে পারলে তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণ যেমন সহজ হবে তেমনি কর্পোরেট সুশাসন পরিপালনেও এগিয়ে যাবে কোম্পানিগুলো। এখন কোম্পানিগুলো ব্যাংক থেকে বেশি সুদে ঋণ নিয়ে ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালাচ্ছে। বাজার সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বর্তমানে বাজারে প্রায়ই স্বল্প মূলধনী কোম্পানিগুলোর শেয়ারদরে অস্বাভাবিক হ্রাস-বৃদ্ধি দেখা যায়, যা বাজার অস্থিতিশীল করে। শেয়ার সংখ্যা কম থাকায় সহজেই এর দর প্রভাবিত করা যায়। এসব শেয়ারের কেনাবেচায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মৌলভিত্তি বিবেচনায় আসছে না।
×