ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ভেট্টরির সম্মানে বিশ্বকাপ জিততে চান ম্যাককুলাম

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ২৬ মার্চ ২০১৫

ভেট্টরির সম্মানে বিশ্বকাপ জিততে চান ম্যাককুলাম

জিএম. মোস্তফা ॥ ছয়বার বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলেছে নিউজিল্যান্ড। কিন্তু দুর্ভাগ্য ব্ল্যাক ক্যাপসদের। সেই বাধা পেরুতে বার বারই ব্যর্থ হয়েছে তারা। অবশেষে বিশ্বকাপের একাদশতম আসরে ফাইনালের গেরো কাটল ব্রেন্ডন ম্যাককুলামের দল। প্রথমবারের মতো স্বপ্নের ফাইনালের টিকেট নিশ্চিত করল কিউইরা। আর প্রথমবার ফাইনালে উঠেই স্বপ্নের শিরোপা ছুঁয়ার স্বপ্ন দেখছে নিউজিল্যান্ড। বিশেষ করে দলের সেরা তারকা ড্যানিয়েল ভেট্টরির জন্য বিশ্বকাপ জিততে মরিয়া ব্ল্যাক ক্যাপসরা। বিশ্বসেরা ড্যানিয়েল ভেট্টরির বর্তমান বয়স ৩৬। যে কারণে সম্ভবত এটাই তার ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপ। তাই ড্যানিয়েল ভেট্টরিকে চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য হিসেবেই বিদায় দিতে চান ব্রেন্ডন ম্যাককুলাম। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সম্ভবত নিউজিল্যান্ডের মাটিতে এটাই ভেট্টরির শেষ ম্যাচ। গত রাতটা (মঙ্গলবার) তার সঙ্গেই কেটেছে। আর এই রাতের স্মৃতি কখনই ভুলা যাবে না। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জেতায় আমরা একটি বেশি ম্যাচ পেয়েছি। তার শেষটাও রূপকথার মতো করে করতে চাই। এরপর আমরা বিয়ার উৎসব করব।’ একাদশতম বিশ্বকাপটা দারুণ কেটেছে ভেট্টরির। এই টুর্নামেন্টেই প্রথম কিউই বোলার হিসেবে ৩০০ উইকেট নেয়ার কৃতিত্ব অর্জন করেন তিনি। ক্রিকেট ইতিহাসের ১২তম বোলার হিসেবে তিনি এই অভিজাত ক্লাবের সদস্য হন। আর স্পিনারদের মধ্যে পঞ্চম। গ্রুপ পর্বে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচেই এই মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। এবারের বিশ্বকাপে ৮ ম্যাচে ১৫ উইকেট দখল করেছেন ভেট্টরি। ফাইনালে এই সংখ্যাটাকে নিশ্চিত আরও বাড়িয়ে নিতে চাইবেন এই কিউই অলরাউন্ডার। তার আগে ১১ বোলার ৩০০ কিংবা তার বেশি উইকেট শিকারের কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। যার মধ্যে নিউজিল্যান্ডের নেই একজনও। পাঁচ শ’ উইকেটের কোটা পেরিয়েছেন কেবল শ্রীলঙ্কার মুত্তিয়া মুরালিধরন (৫৩৪) এবং পাকিস্তানের ওয়াসিম আকরাম (৫০২)। বিশ্বকাপে সপ্তম প্রচেষ্টায় প্রথম ফাইনালে উঠল নিউজিল্যান্ড। যে কারণে ম্যাচের শেষে আবেগ, উচ্ছ্বাসে ভেসে যান ম্যাককুলাম, গাপটিল ও ইলিয়টরা। কিউই অধিনায়ক মনে করছেন, দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডকে ফাইনালে তুলা মানেই তার দেশের ক্রিকেট এক অনন্য উচ্চতায় উঠে যাওয়া। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বার বার একটা কথাই বলছি, খেলোয়াড় হিসেবে আমাদের জীবনের এটা অসাধারণ মুহূর্ত। এই সাফল্য, এই অভিজ্ঞতা আমরা উপভোগ করছি। এটা এক অস্বাভাবিক উচ্চতায় পৌঁছে যাওয়া। এ জন্য শুধু দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরাই নন, সাধারণ মানুষও আমাদের সমর্থন, শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। যারা মাঠে এসেছিলেন, শুধু তারাই নন, মাঠের বাইরেও দেশজুড়ে অসংখ্য মানুষ আমাদের পাশে ছিলেন। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। আমাদের স্বপ্নের ভাগীদার তারাও।’ এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘স্বপ্নটা আমাদের আরও বড়। আর তা হলো বিশ্বকাপ জেতার স্বপ্ন। এবার সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য এগোতে হবে। বিশ্বকাপ জিততে পারলে সেটা হবে আরও সুন্দর মুহূর্ত। আমাদের অপেক্ষা এখন শুধুই বিশ্বকাপের জন্য।’ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দারুণ জয়ে সতীর্থদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ব্রেন্ডন ম্যাককুলাম। তার মতে, ‘অসাধারণ এক ইনিংস! অবিশ্বাস্য ইনিংস! ম্যাচ জেতানো ইনিংস ইলিয়টের! মনে থাকবে কোরির (এ্যান্ডারসন) সঙ্গে ওর দুর্দান্ত জুটিটাও। ঠা-া মাথায় ম্যাচটা বের করে নিয়ে এলো। ওদের এই অর্জন অসাধারণ। আসলে দল হিসেবেও আমরা ভাল খেলেছি। এ রকম বড় ম্যাচে জয়ের জন্য একটা দল হিসেবেই খেলতে হয়। এই জয় কারও একার নয়, আমাদের দলের।’ দ্বিতীয় সেমিফাইনালে আজ স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি ভারত। এই ম্যাচে জয়ী দলই নিউজিল্যান্ডের প্রতিপক্ষ। তবে ম্যাককুলাম কাকে চান ২৯ মার্চ মেলবোর্নের ফাইনালে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এসব নিয়ে ভাবছি না। আর ভেবেই বা কী হবে। অস্ট্রেলিয়া ও ভারত, দুটোই শক্তিশালী, সংগঠিত দল। সুতরাং যেই ফাইনালে উঠুক, কঠিন লড়াই হবে। সেটাই মাথায় রাখতে হবে আমাদের।’
×