আনোয়ার রোজেন ॥ মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে পূর্ব পাকিস্তানের গণমাধ্যমে স্বাধীনতাকামী কোটি জনতার আকাক্সক্ষার প্রতিফলনের কোন সুযোগ ছিল না। ২৫ মার্চের কালরাতেই ঢাকা থেকে প্রকাশিত প্রথম সারির একাধিক সংবাদপত্র অফিস পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর হামলার শিকার হয়। পরবর্তীতে হানাদার বাহিনী নিয়ন্ত্রিত রেডিও পকিস্তান, পাকিস্তান টেলিভিশনসহ বিভিন্ন সংবাদপত্রকে ব্যবহার করা হয় মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী প্রচার ও প্রকাশ মাধ্যম হিসেবে। এ অবস্থায় পাকিস্তানী অপপ্রচারের বিরুদ্ধে এবং দেশ ও দেশের বাইরে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠনের জন্য পত্রিকা প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেয় মুজিবনগর সরকার। সেই লক্ষ্যে ১৯৭১ সালের ১১ মে মাসে মুক্তিকামী জনতার মুখপত্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ‘জয় বাংলা’ পত্রিকা।
মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে দেশে-বিদেশে জনমত গড়ে তুলতে সাপ্তাহিক ‘জয় বাংলা’ পত্রিকা রাখে অসামান্য ভূমিকা। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসে মুক্তাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে সীমিত প্রচার সংখ্যায় প্রায় শতাধিক পত্রিকা আত্মপ্রকাশ করে। কিন্তু সেগুলোর প্রকাশনা ছিল অনিয়মিত। এদিক থেকে সাপ্তাহিক জয় বাংলা ব্যতিক্রম। ১৯৭১ সালের ১১ মে থেকে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩৪টি সংখ্যার প্রতিটি প্রকাশ হয় নিয়মিতভাবেই। ওই বিরুদ্ধ সময়ে মুক্তিকামী জনতার কণ্ঠস্বরে পরিণত হওয়া আট পৃষ্ঠার পত্রিকাটির প্রচার সংখ্যা ছিল ৩০ হাজার পর্যন্ত। মুক্তিযুদ্ধের ১১টি সেক্টর, সাবসেক্টর, মুক্তাঞ্চল এবং ভারতের শরণার্থী শিবিরগুলোতে ‘জয় বাংলা’ পাওয়া যেত। এমনকি পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও মেঘালয়ের মানুষও ‘জয় বাংলা’ পড়তেন। বাংলাদেশের পত্রিকা হিসেবে তাদের কাছে এটির আলাদা কদর ছিল। আবার প্রবাসী সরকারের পক্ষ থেকে নিবন্ধনপ্রাপ্ত প্রথম পত্রিকাও এটি, যার নম্বর-১। সে হিসেবে ‘জয় বাংলা’ই সরকার অনুমোদিত বাংলাদেশের প্রথম পত্রিকা।
প্রকাশের পর থেকে জয় বাংলার প্রভাব হয়ে ওঠে তাৎপর্যপূর্ণ। কেবল ‘জয় বাংলা’ পত্রিকা রাখার ‘অপরাধে’ বহু নিরীহ মানুষকে হত্যা ও তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয় রাজাকার, আলবদররা। ‘জয় বাংলা’ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে বিদেশী গণমাধ্যমের কাছেও। আন্তর্জাতিক মহলে যুদ্ধের সর্বশেষ সংবাদ জানাতে এসব গণমাধ্যম বিভিন্ন সময় বরাত দিয়েছে জয় বাংলা পত্রিকার। অথচ পরবর্তীতে দেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাসের প্রতিচ্ছবি এ পত্রিকাটির তেমন খোঁজখবর রাখেনি কেউ। যথাযথভাবে সংরক্ষণের অভাবে স্বাধীনতার মাত্র ৪৪ বছরেই বিস্মৃতির অতলে হারিয়ে গেছে সরকারী অনুমোদনপ্রাপ্ত স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সংবাদপত্র। মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক এ প্রামাণ্য দলিলের বিভিন্ন সংখ্যা আজ লুপ্তপ্রায়।
দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দলিল সংরক্ষণের মূল দায়িত্ব বাংলাদেশ জাতীয় আর্কাইভসের। কিন্তু রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত এ প্রতিষ্ঠানের সংগ্রহে জয় বাংলা পত্রিকার মূল কপি আছে মাত্র ১৮টি। মুজিবনগর সরকারের ‘জয় বাংলা’ ছাড়াও একই নামে আরও তিনটিসহ মুক্তিযুদ্ধকালে কমপক্ষে ৭০টি পত্রিকা প্রকাশের তথ্য পাওয়া যায়। এসব পত্রিকার প্রায় সব ক’টি ছিল সাপ্তাহিক ও সাইক্লোস্টাইলভিত্তিক (হাতে লেখা)। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের বিভিন্ন ব্যক্তি ও রাজনৈতিক দলের উদ্যোগে এগুলো প্রকাশিত হয়। জাতীয় আর্কাইভসে ওইসব পত্রিকার অধিকাংশেরই কোন কপি সংরিক্ষত নেই। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে বিচ্ছিন্নভাবে জয় বাংলাসহ মুক্তিযুদ্ধকালীন অন্যান্য পত্রিকার হাতে গোনা ক’টি কপি সংরক্ষিত আছে। ৮ বছর আগে একটি সৃজনশীল প্রকাশনী সংস্থা মুজিবনগর সরকার প্রকাশিত ‘জয় বাংলা’ পত্রিকার বিভিন্ন সংখ্যার হুবহু সংকলন একত্রে প্রকাশ করে। অবশ্য সেটিরও ছাপা কোন কপি বর্তমানে বাজারে অবশিষ্ট নেই। পৃষ্ঠপোষকতা না পাওয়ায় প্রকাশনা সংস্থাও এ ব্যাপারে আর কোন উদ্যোগ নেয়নি। শুধু সংরক্ষণের ক্ষেত্রেই নয়, মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের সংবাদপত্রের ভূমিকার ইতিহাস পাঠদানের ক্ষেত্রেও উপেক্ষিত ‘জয় বাংলা’। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে ইতিহাসের পাঠ্যবইতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের প্রসঙ্গটি এলেও জয় বাংলা পত্রিকার নামটি কোথাও উল্লেখ নেই। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সিলেবাস ও গবেষণা কার্যক্রমেও অবহেলিত মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের সংবাদপত্রের ইতিহাস।
এ প্রসঙ্গে সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ও মুক্তিযুদ্ধকালে জয় বাংলা পত্রিকার ১১ নম্বর সেক্টরের সংবাদদাতা হারুন হাবীব জনকণ্ঠকে বলেন, ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র’ ও ‘জয় বাংলা’ পত্রিকা; দুটোই ছিল মুজিবনগর সরকারের মুখপত্র। ঘুরেফিরে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কর্মীরাই কাজ করতেন জয় বাংলা পত্রিকায়। স্বাধীনতার পরে বিজয়ের আনন্দে তাদের অনেকেই হয়ত পত্রিকাটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব তাৎক্ষণিকভাবে উপলব্ধি করতে পারেননি। তাই পত্রিকার কপি সংরক্ষণের ব্যাপারেও মনোযোগ দেননি কেউ। আর স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় জাতির জনককে সপরিবারে হত্যা করে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ফের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা কুক্ষিগত করে। তারা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণের পরিবর্তে কৌশলে দীর্ঘ সময় ধরে সেগুলো নিশ্চিহ্ন করার ব্যবস্থা করেছে। সেই ধারাবাহিকতা বন্ধ হলেও এখনও মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন দলিল সংরক্ষণে সরকারের যথেষ্ট অবহেলা রয়ে গেছে।
আগারাগাঁওয়ের জাতীয় আর্কাইভস ভবনে গিয়ে সংরক্ষিত সংবাদপত্রের ক্যাটালগ থেকে জানা যায়, ১৯৭১ সালের ৯ জুন থেকে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত মুজিবনগর সরকার প্রকাশিত সাপ্তাহিক জয় বাংলার মাত্র ১৮টি সংখ্যার কপি সংরক্ষণের তথ্য উল্লেখ আছে। অথচ এই সময়ে পত্রিকাটির ২৯ টি সংখ্যা প্রকাশ হয়। তবে কোন্ কোন্ সংখা সংরক্ষণে আছে সে বিষয়ে স্পষ্ট কোন তথ্য ক্যাটালগে নেই। আর তারিখ অনুযায়ী প্রথম পাঁচটি সংখ্যার কোন অস্থিত্বই নেই আর্কাইভসে। মুক্তিযুদ্ধকালে প্রকাশিত মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের অন্যান্য পত্রিকার সংরক্ষণের চিত্রও করুণ। মাত্র ৪৪ বছর আগের পত্রিকাগুলো কেবল গবেষকদের জন্য সংরক্ষিত, সাধারণ মানুষের সেগুলো দেখার কোন সুযোগ নেই। অথচ আর্কাইভস ভবনের দেয়ালে প্রায় ২৫০ বছর আগের (১৭৬০ সালে) চট্টগ্রামে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির খাজনা আদায়ের দুর্লভ দলিল পর্যন্ত প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আর্কাইভসের কর্মকর্তা ও গবেষক আলী আকবর জনকণ্ঠকে বলেন, ৪৪ বছর আগের হলেও জয় বাংলা ও এর সমকালীন অন্যান্য সংবাদপত্র দুষ্প্রাপ্য দলিলে পরিণত হয়েছে। তাছাড়া কপিগুলোও খুব একটা ভাল অবস্থায় নেই।
সেগুনবাগিচায় বেসরকারী উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের দোতলায় ‘জয় বাংলা’ পত্রিকার একটিমাত্র পৃষ্ঠা প্রদর্শনীর জন্য রাখা হয়েছে। এটি পত্রিকার আট নম্বর পৃষ্ঠা। পৃষ্ঠাজুড়ে ছাপানো হয়েছে ৬টি ছবি। উপরে পৃষ্ঠাজুড়ে বড় কালো অক্ষরে শিরোনাম লেখা হয়েছে, ‘দিকে দিকে ওড়ে মুক্তি পতাকা, মুক্তি বাহিনী তুলে আওয়াজ, শহীদ হওয়ার দিন চলে গেছে, সকলেই গাজী হবে যে আজ’। শিরোনামের নিচে লেখা গাফ্ফার চৌধুরী। বর্ণনায় লেখা হয়েছে ‘সম্প্রতি বাংলাদেশের মুক্তাঞ্চলে মুক্তিবাহিনীর ক্যাডেট অফিসারদের ট্রেনিং সমাপ্তির অনুষ্ঠানে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ ও প্রধান সেনাপতি কর্নেল ওসমানিসহ বাংলাদেশের বিশিষ্ট সরকারী, বেসরকারী ও সামরিক নেতৃবৃন্দ যোগদান করেন। এই অনুষ্ঠানের চিত্র পরিচিতি উপরে দেয়া হলো:......’।
প্রথম ছবির ক্যাপশনে লেখা আছে, ‘ক্যাডেট অফিসারদের গার্ড অব অনার পরিদর্শন করছেন অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম’। দ্বিতীয় ছবির ক্যাপশন এ রকম : ‘ট্রেনিং সমাপ্ত ক্যাডেট অফিসারদের সাড়িতে ক্যাডেট অফিসাররূপে বাম থেকে প্রথম; বঙ্গবন্ধুর বড় ছেলে শেখ কামাল’। এভাবে প্রতিটি ঐতিহাসিক ছবির পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে। একেবারে নিচের দিকে লেখা, ‘সম্পাদকম-লীর সভাপতি আবদুল মান্নান, মুজিবনগর, জয় বাংলা প্রেস থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষে আবদুল মান্নান কর্তৃক মুদ্রিত ও প্রকাশিত।’ তবে পৃষ্ঠার কোথাও তারিখ উল্লেখ না থাকায় এটি ঠিক কোন্ সংখ্যার পৃষ্ঠা তা বোঝার উপায় নেই। জাদুঘর কর্তৃপক্ষও পরিচিতিতে পত্রিকাটির সংশ্লিষ্ট সংখ্যার প্রকাশকাল উল্লেখ করেনি। এ বিষয়ে স্বাধীন বাংলা বেতারের সাংবাদিক কামাল লোহানী (জয় বাংলা পত্রিকাতেও কিছুদিন কাজ করেছেন) জনকণ্ঠকে বলেন, শুরুরদিকে প্রতিটি সংখ্যায় প্রকাশক হিসেবে আবদুল মান্নান তার ছদ্মনাম ‘আহমদ রফিক’ উল্লেখ করতেন। কিন্তু সেপ্টেম্বর মাসের (পত্রিকার ২০ তম সংখ্যা, ২৪ সেপ্টেম্বর ১৯৭১) সংখ্যাগুলোতে নিজের আসল নামটি প্রকাশক হিসেবে মুদ্রণ করেন। এ থেকে ধারণা করা যায়, পত্রিকার পৃষ্ঠাটি সেপ্টেম্বর বা তার পরের মাসের কোন সংখ্যার। জাদুঘরের অফিস সূত্রে জানা গেছে, জয় বাংলাসহ মুক্তিযুদ্ধের আরও কয়েকটি পত্রিকার মূল্যবান কিছু কপি তাদের সংগ্রহে রয়েছে। কিন্তু স্থানাভাবে সেগুলো প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা যায়নি।
জয় বাংলা পত্রিকার ঐতিহাসিক গুরুত্ব উপলব্ধি করে সৃজনশীল প্রকাশনা সংস্থা ঐতিহ্য। তারা ২০০৭ সালের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় জয় বাংলা পত্রিকার বিদ্যমান কপিগুলো ডিজিটাল ফরমেটে হুবহু সংকলন করে একত্রে প্রকাশ করে। ব্যয় বেশি হওয়ায় প্রথম সংস্করণে মাত্র শ’দুয়েক কপি প্রকাশ করা হয়। প্রতি কপির দাম ছিল আড়াই হাজার টাকা। তবে বর্তমানে ওই সংকলনের কোন কপি বাজারে অবশিষ্ট নেই। পৃষ্ঠপোষক না পাওয়ায় বইটি দ্বিতীয়বার প্রকাশের বিষয়ে আর কোন উদ্যোগ নেননি বলে প্রতিবেদককে জানিয়েছেন ঐতিহ্যের প্রকাশক আরিফুর রহমান নাঈম।
শিক্ষা ব্যবস্থার বিভিন্ন স্তরের পাঠ্যবইয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসই সার্বিকভাবে অবহেলিত। এর মধ্যে ওই সময়ে প্রকাশিত সংবাদপত্রের ঐতিহাসিক ভূমিকার উল্লেখ নেই বললেই চলে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে ইতিহাসের পাঠ্যবইতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের প্রসঙ্গ কিছুটা এলেও জয় বাংলা পত্রিকার নামটি কোথাও উল্লেখ নেই। এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ও মুক্তিযুদ্ধকালীন গণমাধ্যম বিষয়ক গবেষক অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থার বিভিন্ন স্তরে শারীরিক শিক্ষা, ধর্মশিক্ষা, ইংরেজী ভাষা শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে; অথচ মুক্তিযুদ্ধের সার্বিক ইতিহাস পাঠে কোন বাধ্যবাধকতা নেই! জাতি হিসেবে এটি বিরাট লজ্জার। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে সর্বস্তরে মুক্তিযুদ্ধের পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাবটিও ছয় বছর ধরে ঝুলে আছে। কোন অগ্রগতি হয়নি। সরকার মুখে মুখে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস চর্চায় যতটা তৎপর, কাজের বেলায় ততটা নয়।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সিলেবাস ও গবেষণা কার্যক্রমেও মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের সংবাদপত্রের ইতিহাস অবহেলিত। এ প্রসঙ্গে নিজের এক নিবন্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক (সুপারনিউম্যারারি) ড. সাখাওয়াত আলী খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গণযোগাযোগ বা সাংবাদিকতা বিভাগের সিলেবাসে দেশের সাংবাদিকতার ইতিহাস সংক্রান্ত একটি কোর্স থাকে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই সেসব কোর্সে মুক্তিযুদ্ধকালীন পত্র-পত্রিকার ইতিহাস তেমন গুরুত্বের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত হয় না। জীবন বাজি রেখে করা মুক্তিযুদ্ধকালীন সাংবাদিকতার এই ইতিহাস ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে। তাই এগুলোর সংরক্ষণ জরুরী। বিশেষ করে গণমাধ্যমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের এবং ইতিহাসের গবেষকদের এ ব্যাপারে আরও তথ্য সংগ্রহ করা উচিত।