ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

অস্ট্রেলিয়া-ভারত সেমিফাইনাল আজ

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ২৬ মার্চ ২০১৫

অস্ট্রেলিয়া-ভারত সেমিফাইনাল আজ

শাকিল আহমেদ মিরাজ ॥ এ যেন ফাইনালের আগে আরেক ফাইনাল। একদিকে চারবারের চ্যাম্পিয়ন স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া, অন্যদিকে শিরোপাধারী ভারত। বিরাট কোহলি বনাম গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, মহেন্দ্র সিং ধোনি বনাম মাইকেল ক্লার্ক। মাঠ ও মাঠের বাইরে বিশ্ব ক্রিকেটকে শাসন করা প্রধান মোড়লের সঙ্গে তাদেরই দোসর অস্ট্রেলিয়ার লড়াই! ১১তম বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনাল ঘিরে বইছে অন্যরকম এক উন্মাদনা। রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষায় বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গন। সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে দুই পরাশক্তির মধ্যকার দ্বিতীয় সেমিফাইনাল শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে নয়টায়। ক্রিকেট যুদ্ধে ফয়সালা, কে হচ্ছে রবিবারের ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের প্রতিপক্ষ। চারবারের চ্যাম্পিয়ন (১৯৮৭, ১৯৯৯, ২০০৩ ও ২০০৭) অস্ট্রেলিয়া এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম ফেবারিট। ঘরের মাটিতে ফেবারিটের মতো না হলেও অনেকটা দাপটের সঙ্গেই গ্রুপ পর্ব পোরোয় মাইকেল ক্লার্কের দল। নাটকীয় ম্যাচে ১ উইকেটে হারে নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে। বৃষ্টির জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে পায়েন্ট ভাগাভাগি করা অসিরা ৪ জয়ে ৯ পয়েন্ট নিয়ে পুল ‘এ’ এর দ্বিতীয় দল হিসেবে কোয়ার্টারে ওঠে। সেখানে ৬ উইকেটের বড় ব্যবধানে পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিয়ে পায় শেষ চারের টিকেট। সেমিতে এই প্রথম দেখা হলেও বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত ১০ ম্যাচের ৭টিতে জিতে পরিসংখ্যানে এগিয়ে অসিরা। আসর শুরুর আগে টেস্ট ও ওয়ানডেতে চ্যাম্পিয়নদের বিধ্বস্ত করে তারা। এটি মানসিকভাবে এগিয়ে রাখছে অসিদের। বড় ম্যাচে চাপ সহ্য করে অস্ট্রেলিয়ার সাফল্য পরীক্ষিত। ‘সবাই দেখেছে, ছেলেরা পুরো টুর্নামেন্টে চাপ সামলেই সেরাটা দিয়ে এসেছে। কোয়ার্টারে পাকিস্তানের বিপক্ষে আমরা যেভাবে খেলেছি সেটি দারুণ এক অনুপ্রেরণার, আনন্দের।’ বলেন অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক। চারবারের চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় তাদের ওপর দেশবাসীর প্রত্যাশা অনেক সেটিও বোঝেন তিনি। তিনি আরও জানান, ‘কারণ আমরা র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর দল। তার ওপর দেশের মাটিতে খেলছি। পারফর্ম করলে আপনার কাছে প্রত্যাশা বাড়বেই।’ বড় ম্যাচের অভিজ্ঞতা পার্থক্য গড়ে দিতে পারে বলে মনে করেন ক্লার্ক। বলেন, ‘এটা বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল। অভিজ্ঞতার সঙ্গ তারুণ্য মিলিয়ে যে স্কোয়াড, তাতে জয় পেতে খুবই আশাবাদী আমি।’ দীর্ঘ অস্ট্রেলিয়া সফরের ভরাডুবি পেছনে ফেলে বিশ্বকাপের শুরুতে বদলে যায় ভারত। মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে চ্যাম্পিয়নের মতো খেলেই অপরাজিত দল হিসেবে টানা দ্বিতীয় শিরোপার কাছাকাছি দুইবারের শিরোপাধারীরা (১৯৮৩ ও ২০১১)। চিরশত্রু পাকিস্তানকে ৭৬ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে বিশ্বকাপ শুরু। ১৩০ রানে দক্ষিণ আফ্রিকাকে, আমিরাতকে ৯ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারায় ৪ উইকেটে। গ্রুপের শেষ দুই ম্যাচে দুর্বল আয়ারল্যান্ডকে ৮ ও জিম্বাবুইয়েকে ৬ উইকেটে উড়িয়ে দিয়ে শতভাগ সাফল্য নিয়ে শেষ আটে উঠে আসে ধোনিবাহিনী। বাংলাদেশের বিপক্ষে কোয়ার্টারে জিতেও বিশ্বকাপ ইতিহাসের বড় কলঙ্কে নাম লেখায় তারা! অনেকটা ‘পাতানো’ ম্যাচের আদলে আম্পায়ারদের সহায়তায় ১০৯ রানের জয় নিয়ে সেমিতে উঠে আসে ক্রিকেটের মোড়লরা! মাঠে ভারতের বড় ভরসা ব্যাটিং। বিশ্বসেরা লাইনআপে আছেন শিখর ধাওয়ান, বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মাদের মতো উইলোবাজ। কথা হচ্ছে সিডনির পিচ নিয়েও। এমনিতে অস্ট্রেলিয়ার অন্য ভেন্যুগুলোর তুলানায় এখানে কিছুটা হলেও স্পিনাররা সুবিধা পেয়ে থাকেন। তবে ঘরের মাটিতে ভারত-বধের জন্য কিউরেটরের কাছে গতি আর বাউন্সই চাইবেন ক্লার্করা! সে যাই হোক। জিততে মরিয়া চ্যাম্পিয়নরা। সংবাদ মাধ্যমকে ওপেনার রোহিত যেমন বলেন, ‘কোন ধরনের উইকেট পাব তা নিয়ে ভাবছি না আমরা। উইকেট যেমনই হোক ভাল করতে আত্মবিশ্বাসী। ইতোমধ্যে সাত ম্যাচে প্রতিপক্ষের ৭০ উইকেট তুলে নিয়েছি। পেসারদের পাশাপাশি স্পিনাররাও ভাল করছে। উইকেট যেমনই হোক, অস্ট্রেলিয়াকে হারাতে প্রস্তুত আমরা।’ ব্যাট-বলের পাশাপাশি মাঠে প্রতিপক্ষকে সেøজিংয়ে (গালাগাল) কাবু করতে অসিদের জুড়ি মেলা ভার। কয়েক অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার এরই মধ্যে আগাম সেøজিংয়ের হুমকিও দিয়ে রেখেছেন! এ প্রসঙ্গে রোহিতের বক্তব্য, ‘সেøজিং যতক্ষণ সীমারেখার মধ্যে থাকবে, ততক্ষণ আমাদের সমস্যা নেই। সব জয় করেই জিততে তৈরি।’
×