ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ভারত-অস্ট্রেলিয়া সেমি নিয়ে আগাম উত্তেজনা

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ২৪ মার্চ ২০১৫

ভারত-অস্ট্রেলিয়া সেমি নিয়ে আগাম উত্তেজনা

জাহিদুল আলম জয় ॥ বাতাসে এখন বারুদের গন্ধ। চলমান বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ভারতÑঅস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় সেমিফাইনালের আগে জমে উঠেছে কথার লড়াই। কে কিভাবে প্রতিপক্ষকে ‘কাবু’ করতে পারে সেই প্রতিযোগিতায় এখন ক্লার্ক, ওয়ার্নার, ম্যাক্সওয়েল, ধোনি, কোহলি, রোহিতরা। সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে বৃহস্পতিবারের আগুন লড়াই জিতে ফাইনাল মঞ্চে নাম লেখাতে প্রস্তুত সাবেক ও বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। মহেন্দ্র সিং ধোনির দলের লক্ষ্য, ২০০৩ বিশ্বকাপের ফাইনালে হারের প্রতিশোধ নিয়ে শিরোপা ধরে রাখার পথে এগিয়ে যাওয়া। আর অস্ট্রেলিয়ার লক্ষ্য, বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে শিরোপা পুনরুদ্ধারের পথে এক পা দিয়ে রাখা। ফাইনাল মহারণের টিকেট কাটতে দু’দলই এখন হিসাব-নিকাশে ব্যস্ত। কিভাবে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা যায় সে মন্ত্র জপশে ধোনি ও ক্লার্ক বাহিনী। অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক ও ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ভক্তদের উদ্দেশে বলেছেন, আপনারা মাঠে আসুন। আপনাদের সমর্থন আমাদের প্রয়োজন। আশা করছি আপনাদের মুখে হাসি ফোটাতে পারব। ধোনির দলের জন্যও অনুপ্রেরণার কমতি নেই। এসসিজিতে যেতে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন ভারতীয় সমর্থকরা। জানা গেছে, সেমির দ্বৈরথে হয়তবা স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার চেয়েও ভারতের সমর্থনের পাল্লা বেশি হতে পারে! সেটা যাই হোক, ম্যাচটি কিন্তু ফাইনালের আগে আরেক ফাইনালে রূপ নিতে যাচ্ছে। ২০০৩ বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল এই দুই পরাশক্তি। দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের নিউ ওয়ান্ডারার্স স্টেডিয়ামে সেবারের ফাইনালে সৌরভ গাঙ্গুলীর ভারতকে উড়িয়ে দিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল রিকি পন্টিংয়ের অস্ট্রেলিয়া। প্রথমে ব্যাট করে অধিনায়ক পন্টিংয়ের হার না মানা বিস্ফোরক ১৪০ রানের সুবাদে অস্ট্রেলিয়া জড়ো করেছিল ৩৫৯ রানের পাহাড়। জবাবে ৩৯.২ ওভারে ২৩৪ রানে গুটিয়ে যায় ভারতের ইনিংস। ১২৫ রানের বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছিল অসিরা। এক যুগ পর ওই হারের প্রতিশোধ নেয়ার মোক্ষম সুযোগ এসেছে ভারতের সামনে। মঞ্চটা ফাইনাল না হলেও সেমিফাইনাল। এ কারণে জিততে মুখিয়ে ভারতীয় শিবির। দলের অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি বলেছেন, অস্ট্রেলিয়া কঠিন প্রতিপক্ষ। তাদের হারাতে আমাদের সেরাটাই দিতে হবে। তবে আমি আশাবাদী তাদের হারাতে। শিরোপা ধরে রাখার জন্য আর মাত্র দুটি জয় প্রয়োজন। সবাই এজন্য প্রস্তুত। ২০০৩ বিশ্বকাপের ফাইনালে হারের দৃশ্য ভুলিনি। দলের বেশিরভাগ সদস্য টিভির সামনে ওই দৃশ্য দেখেছিল। এ কারণে মুখিয়ে আছে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ভাল করতে। স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়াও সাফল্যের ধারা ধরে রাখতে আশাবাদী। এই সিডনিতেই ২০০৮ সালে টেস্ট সিরিজে ভারতীয় স্পিনার হরভজন সিংয়ের সঙ্গে বদানুবাদে জড়িয়েছেন অস্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ডার এ্যান্ড্রু সাইমন্ডস। সাইমন্ডসকে ‘বানর’ বলে নিষিদ্ধও হয়েছিলেন ভাজ্জি। শেষ চারের ম্যাচের আগে ঘুরেফিরে আসছে ওই স্মৃতিও। আরও একটি মজার দৃশ্যের অবতারণা হতে চলেছে। অস্ট্রেলিয়ার তারকা ব্যাটসম্যান গ্লেন ম্যাক্সওয়েল খেলবেন তার আইপিএল বন্ধুদের বিরুদ্ধে। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে (আইপিএল) খেলার সুবাদে অনেক ভারতীয় ক্রিকেটারের সঙ্গেই সখ্য গড়ে উঠেছে ম্যাক্সওয়েলের। সে সব বন্ধুর বিরুদ্ধে মাঠে লড়াই করাটা বেশ কঠিন বলে মনে করেন অসি এই অলরাউন্ডার। এ প্রসঙ্গে ম্যাক্সওয়েল বলেন, তাদের বিরুদ্ধে খেলা কঠিন হবে। কারণ তারা বন্ধু হওয়া সত্ত্বেও মাঠে আপনাকে লড়াই করতে হবে। আপনাকে এভাবে খেলার চেষ্টা করতে হবে যেভাবে আপনি আপনার সবচেয়ে বড় শত্রু বিরুদ্ধে সব সময় খেলেন। ম্যাক্সওয়েলের অফস্পিন বোলিংও নাকি ভারতের জন্য কাঁটা হতে পারে। ভারতের বিশ্বখ্যাত ব্যাটসম্যানদের থামাতে নাকি তিনি রণকৌশল আটছেন। ম্যাক্সওয়েল এ প্রসঙ্গে বলেছেন, আমি বিশ্বকাপে বেশ কয়েকটা উইকেট নিয়েছি। যেটা খুব ভাল ব্যাপার। আমার তো মনে হয় মাইকেল ক্লার্ক যে কাজটা আমাকে যখন দিচ্ছে, আমি ঠিকঠাকভাবে করে দিচ্ছি। অস্ট্রেলিয়ার বোলিং কোচ জন ডেভিডসনের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনাও হয়েছে ম্যাক্সওয়েলের। কিন্তু ব্যাটিং নয়, স্পিন বোলিং নিয়ে। বিষয়টা এরকমÑ ও আমাকে বলল, একদম ঠিকঠাক বল করছ। মানে ব্যাপারটা কোনভাবেই আর রান আটকানোয় আটকে নেই। প্রথম সারির স্পিনার যা করে, সেটাই করতে হবে আমাকে। ধাওয়ান, রোহিত, রায়না, কোহলিদের আটকানোর মন্ত্রও নাকি পেয়ে গেছেন ম্যাক্সওয়েল। দেখা যাক, মাঠের লড়াইয়ে কি হয়!
×