ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সুয়ারেজের গোলে জয় বার্সিলোনার

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ২৪ মার্চ ২০১৫

সুয়ারেজের গোলে জয় বার্সিলোনার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ মর্যাদার এল ক্ল্যাসিকোতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদকে ২-১ গোলে হারিয়ে শিরোপার গন্ধ পেতে শুরু করেছে বার্সিলোনা। রবিবার রাতে ন্যুক্যাম্পে অনুষ্ঠিত স্প্যানিশ লীগার ম্যাচে ক্যাটালানদের জয়ের নায়ক উরুগুইয়ান তারকা লুইস সুয়ারেজ। বার্সার জয়সূচক গোলটি করেন তিনিই। এর আগে স্বাগতিকদের এগিয়ে নিয়েছিলেন ফরাসী ডিফেন্ডার জেরেমি ম্যাথুউ। ফিফা সেরা ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো গোল করেও রিয়ালের হার এড়াতে পারেননি। গুরুত্বপূর্ণ এই দ্বৈরথ জিতে শিরোপা পুনরুদ্ধারের পথে অনেকটাই এগিয়ে গেল বার্সিলোনা। দ্বিতীয় স্থানে থাকা রিয়ালের চেয়ে এখন তারা ৪ পয়েন্ট এগিয়ে। ২৮ ম্যাচে বার্সার ৬৮ পয়েন্টের বিপরীতে রিয়ালের পয়েন্ট ৬৪। লীগে দুই দলের আরও বাকি ১০টি করে ম্যাচ। ছোট দলগুলোর বিরুদ্ধ হোঁচট না খেলে বার্সার চ্যাম্পিয়ন হওয়া সময়ের ব্যাপার বলে মনে করছেন অনেকে। বার্সার মাঠে ম্যাচের শুরু থেকেই অবশ্য আধিপত্য বিস্তার করে খেলতে থাকে অতিথি রিয়াল। ম্যাচের ১২ মিনিটে প্রথম সুযোগ পায় কার্লো আনচেলোত্তির দল। কিন্তু ভাগ্য সহায় ছিল না। বামপ্রান্ত থেকে করিম বেঞ্জামার ক্রসে রোনাল্ডো পা লাগালেও বল ক্রসবারে লেগে প্রতিহত হয়। রিয়াল না পারলেও প্রথম সুযোগেই এগিয়ে যায় বার্সিলোনা। ১৯ মিনিটে লিওনেল মেসির ফ্রি-কিকে হেড করে দলকে এগিয়ে দেন ফরাসী ডিফেন্ডার জেরেমি ম্যাথিউ। ৩১ মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন নেইমার। ব্রাজিলিয়ান তারকার ব্যর্থতার পরপরই পাল্টা আক্রমণ থেকে সমতাসূচক গোল করে রিয়াল। লুকা মডরিচের বাড়ানো বল নিয়ন্ত্রণে না নিয়ে সঙ্গে লেগে থাকা ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিয়ে ব্যাকহিল করেন বেঞ্জামা। দ্রুত ছুটে এসে বল জালে জড়ান রোনাল্ডো। লা লীগায় সি আর সেভেনের এটি ৩১তম গোল। ৩২ গোল নিয়ে শীর্ষে আছেন মেসি। প্রথম গোল হজমের পর থেকেই বার্সার রক্ষণভাগে আক্রমণের ঢেউ বইয়ে দেয় রিয়াল। প্রথমার্ধে স্বাগতিকদের রক্ষণভাগে রীতিমতো ছত্রভঙ্গ করে অতিথিরা। সেই মুহূর্তে ম্যাচের ৪০ মিনিটে জালে বল পাঠান গ্যারেথ বেল। উদ্শুরু করে দেন। কিন্তু তাঁর উল্লাস থামিয়ে দেয় লাইন্সম্যানের পতাকা। ওয়েলস তারকা নাকি অফসাইড ছিলেন। কিন্তু আসলেই কি বেলের গোলটি অফসাইডে ছিল। এ নিয়ে রীতিমতো বিতর্কের ঝড় চলছে সমর্থকদের মধ্যে। বিরতির আগে আরও একটি সুযোগ পেয়েছিলেন বেল কিন্তু কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন। বিরতির পর ৫৬ মিনিটে আবারও এগিয়ে যায় বার্সা। দানিয়েল আলভেসের পাঠানো বল দক্ষতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দ্রুত ডি বক্সে ঢুকে ডান পায়ের কোনাকুনি শটে ইকার ক্যাসিয়াসকে পরাস্ত করেন সুয়ারেজ। এই গোল হজমের পর রিয়াল আর তেমন সুযোগ পায়নি। উল্টো ব্যবধান বাড়ানোর অনেক সহজ সুযোগ পেয়েও ব্যর্থ হন মেসি-নেইমাররা। স্নায়ুচাপ বাড়ানো এই ম্যাচে মোট ১১ বার রেফারিকে হলুদ কার্ড দেখাতে হয়। রিয়ালের ৬ জন আর বার্সিলোনার ৫ জন হলুদ কার্ড পান। দলের জয়সূচক গোলটিকে বার্সার হয়ে নিজের ‘সেরা গোল’ হিসেবে অভিহিত করেছেন সুয়ারেজ। ম্যাচ শেষে সাবেক লিভারপুল তারকা বলেন, অবশ্যই এ গোলটি বার্সার হয়ে আমার সেরা গোল। এই গোল বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে প্রতিপক্ষের কারণেই। রিয়ালের বিরুদ্ধে গোল করাটা অবশ্যই বাড়তি কিছু। উচ্ছ্বসিত বার্সা তারকা আরও বলেন, ‘রিয়ালের রক্ষণের ফাঁকা জায়গা বেশ দ্রুত কাজে লাগাতে হয়েছে। বলটি ধরেই আমি রিয়াল ডিফেন্ডারদের বোকা বানিয়েছি, তাঁরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই। ভাগ্যও আমাকে সহায়তা করেছে।’ বার্সা কোচ লুইস এনরিকের কণ্ঠেও স্বস্তির সুর। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, ‘এল ক্ল্যাসিকোয় গোল কতে পারে খুব কম খেলোয়াড়ই। লুইস সুয়ারেজ সেরাদের ওই ছোট দলেই। এজন্য বার্সিলোনা তাকে দলে নিয়েছে। আমরা তাঁকে মর্যাদা দিয়েছি, তাঁর প্রতি আস্থা রেখেছি। সেই প্রতিদানটা সে দিয়েছে। বার্সায় যোগ দেয়ার পর থেকেই সে পরিশ্রম করে চলেছে।’
×