ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মতিঝিলে চাঞ্চল্যকর সুমি হত্যা, আরও ২ আসামি গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ২৪ মার্চ ২০১৫

মতিঝিলে চাঞ্চল্যকর সুমি হত্যা, আরও ২ আসামি গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর মতিঝিলে সাত টুকরো করে সুমি ওরফে শিমু হত্যার আলোচিত ঘটনায় আরও দুইজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এ নিয়ে হত্যাকা-ে জড়িত আট জনের মধ্যে সাত জন গ্রেফতার হলো। সাত আসামির মধ্যে ইতোমধ্যেই চারজন আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। আসামিদের মধ্যে অন্যতম প্রধান খুনী মন্টি ইতোমধ্যে র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। গত ১০ মার্চ ফকিরাপুলের কালভার্ট রোডের গলির কালভার্ট রোডের হোটেল উপবনের উত্তর পাশ থেকে মানুষের একটি হাত ও একটি কর্তিত পায়ের খ-াংশ উদ্ধার করে পুলিশ। তল্লাশির একপর্যায়ে পাশের ১৬৭/১ এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের পাশে ওয়াসা ভবনের পাকা দেয়ালের কাছ থেকে অজ্ঞাত মানুষের একটি পা, একটি হাত ও শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন একটি বাহু উদ্ধার হয়। পরে পানির ট্যাঙ্কের টিনের চালার ওপর থেকে বিছানার চাদর পেঁচানো মানুষের দেহ উদ্ধার হয়। ১৯৩/১ ফকিরাপুল আহসান মঞ্জিলের সপ্তম তলার সিঁড়ি থেকে উদ্ধার হয় পুড়িয়ে ফেলা মানুষের মাথা। পরে সব অঙ্গগুলো একত্রিত করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর নিহত নারী শিমু ওরফে সুমি (২৪) বলে শনাক্ত হয়। এ ঘটনায় মতিঝিল থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। বর্তমানে মামলাটি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত করছে। এ ঘটনায় জাহাঙ্গীর হোসেন সোহেল ওরফে বাংলা সোহেল ও মোবারকউল্লাহ মন্টি র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়। গত ২২ মার্চ রাতে শাহজাহানপুরে র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মন্টি মারা যায়। রবিবার রাতে ডিবি পুলিশের মতিঝিল জোনাল টিমের সহকারী কমিশনার জুয়েল রানার নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে গ্রেফতার হয় সুজন (২৩) ও সুমন ওরফে তোতলা সুমন (২৪)। তাদের কাছ থেকে রক্তমাখা কাপড়-চোপড়, খুনের কাজে ব্যবহৃত চাপাতি ও ছুরি উদ্ধার হয়। ইতোপূর্বে সুমি খুনের ঘটনায় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে সাইদুল ইসলাম, হানিফ, রাতুল ও নুরুন্নবী শাওন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়। সোমবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির যুগ্ম-কমিশনার মনিরুল ইসলাম গ্রেফতারকৃতদের বরাত দিয়ে জানান, শিমু ওরফে সুমি ও তার স্বামী নাসিরউদ্দিন মূলত মাদক ব্যবসায়ী ছিল। তাদের একটি চক্র আছে। গ্রেফতারকৃতরা সেই চক্রেরই সদস্য। মাদক ব্যবসার পাশাপাশি সুমি ও তার স্বামী পুলিশের সোর্স হিসেবেও কাজ করত। সম্প্রতি সুমির স্বামী ইয়াবাসহ গ্রেফতার হয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের রায়ে একবছরের সাজা খাটছে। সুমির ধারণা, তাদের সহযোগীরাই তার স্বামীকে ধরিয়ে দিয়েছে। এমন ঘটনার পর থেকেই শত্রুতার সূত্রপাত। সুমি ও সহযোগীদের ধরিয়ে দিতে মরিয়া হয়ে ওঠে। সহযোগীরা প্রায় প্রতিদিনই ফকিরাপুলের যে বাড়িতে সুমি খুন হয়, সেই বাড়ির ছাদে বসে ইয়াবা সেবন করত। সহযোগীরাদেরও সুমি ধরিয়ে দিতে পারে এমন সন্দেহ করছিল।
×