ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

পরাজিত শক্তিকে বিনাশ করতে নতুন প্রজন্মের প্রতি আহ্বান

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ২৪ মার্চ ২০১৫

পরাজিত শক্তিকে বিনাশ করতে নতুন প্রজন্মের প্রতি আহ্বান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিকাশ ও জাতীয় পতাকার চেতনায় নতুন প্রজন্মকে উজ্জীবিত করতে অনুষ্ঠিত হলো জাতীয় পতাকা উৎসব। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কবিতা আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা আর পতাকা মিছিলের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জাতীয় পতাকা উৎসব উদযাপন কমিটি। সোমবারের এই আয়োজনে জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে অংশ নেন হাজারো মানুষ। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী জামায়াত আইএস ও আল কায়েদার মতো আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সহায়তা নিয়ে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। বক্তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে একাত্তরের পরাজিত শক্তিকে চিরতরে বিনাশ করতে নতুন প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানান। ১৯৭১-এর ২৩ মার্চ স্বাধীনতাকামী বাঙালীরা পাকিস্তানের পতাকা পুড়িয়ে উত্তোলন করে বাংলাদেশের মানচিত্রখচিত লাল-সবুজ পতাকা। আমাদের দায়িত্ব থাকবে জাতীয় পতাকাকে সমুন্নত রাখা। দেশবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকা। সকলে নিজ নিজ জায়গা থেকে দায়িত্ব পালন করতে পারলে সোনার বাংলা গড়ে তোলা কোন বিষয় নয়। এজন্য দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তাঁরা। ঐতিহাসিক দিনটির স্মরণে সকাল থেকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় পতাকা উৎসব উদযাপন কমিটি আয়োজিত পতাকা উৎসবে যোগ দেয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম একাত্তরের মতো আবারও সবাইকে একত্রিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে সামনে এগিয়ে নেয়ার আহ্বান জানান। মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তিকে দানবের সঙ্গে তুলনা করে তাদের হটানোর ঘোষণা দেন তিনি। নতুন প্রজন্মকে সঠিক ইতিহাস জেনে নিজেদের জীবন গড়ারও আহ্বান জানান আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। পরে বাংলাদেশ পুলিশ ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে জাতীয় পতাকা মিছিল উদ্যানের চারদিকে প্রদক্ষিণ করে। এছাড়া অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, সকলে মিলে দেশটাকে এগিয়ে নিতে হবে। কেউ যেন দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করতে না পারে সেদিকে নজর রাখতে হবে। সোনার বাংলা আর সোনার মানুষ গড়ে তুলতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। স্বাধীনতা আন্দোলন যখন তুঙ্গে, তখন ১৯৭১-এর ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় প্রথমবারের মতো স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ও ছাত্রলীগের ডাকে ২৩ মার্চ সারাদেশে এই পতাকা উত্তোলন করা হয়। সেই দিনটিকে স্মরণ করে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজন করা হয় পতাকা উৎসব। সকাল ১০টার মধ্যেই উদ্যান ছেয়ে যায় লাল-সবুজ পতাকায়। জাতীয় সঙ্গীত দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। উদ্বোধন ঘোষণা করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী। উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মাহফুজা খানমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেনÑ আইজিপি একেএম শহীদুল হক, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এমএ হান্নান, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সভাপতি মে. জে. (অব) কেএম শফিউল্লাহ, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের চেয়ারম্যান মে. জে. (অব) হেলাল মোর্শেদ, মুজিবনগর সরকারের গার্ড অব অনার প্রদানকারী মহকুমা পুলিশ সুপার মাহবুবউদ্দিন আহমেদ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. হারুন-অর রশিদ, জবির ভিসি ড. মীজানুর রহমান, স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকার নকশাকার শিবনারায়ণ দাস প্রমুখ।
×