ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সামর্থ্যে আস্থা কিউই কোচের

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ২৩ মার্চ ২০১৫

সামর্থ্যে আস্থা কিউই কোচের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কোয়ার্টার বাধা পেরোনোর ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানেই সেমিফাইনাল খেলতে হচ্ছে সহআয়োজক নিউজিল্যান্ডকে! শনিবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৪৩ রানে বড় জয়ে শেষ চারে জায়গা করে নেয় ‘ব্ল্যাক ক্যাপসরা’। রবি-সোম দু’দিন পর কাল মঙ্গলবার প্রথম সেমিতে তাদের প্রতিপক্ষ হট ফেবারিট দক্ষিণ আফ্রিকা। অথচ অপর সেমির আগে ‘ডিফেন্ডিং’ চ্যাম্পিয়ন ভারত পাচ্ছে পুরো এক সপ্তাহ! বিশ্বকাপ সূচীর এমন বৈরিতা নিয়ে সমালোচনা হলেও এ নিয়ে একদমই ভাবতে চাইছেন না মাইক হেসন। নিউজিল্যান্ড কোচ বরং সেমির জন্য প্রস্তুত। ডাবল সেঞ্চুরিয়ান শিষ্য মার্টিন গাপটিল ও শেষ চারে জায়গা করে নেয়া অপর তিন দলেরও প্রশংসা করেন তিনি। ‘কোয়ার্টারের মাত্র ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে সেমিফাইনালে খেলা কিছুটা বিস্ময়কর বৈকি! অনেকে তাই-ই ভাবছে। কিন্তু আমি এসব নিয়ে একদমই মাথা ঘামাতে চাই না। এক মাস আগে যখন বিশ্বকাপ শুরু হয়েছিল, তখনই জানতাম কোন না কোন দল এই পরিস্থিতির মুখে পড়বে। আমরা সব ধরনের প্রতিকূলতা জয় করে এগিয়ে যেতে চাই। যেভাবে আগের ম্যাচগুলো থেকে সাফল্য তুলে এনেছি। লক্ষ্য একটাই, দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নেয়া। সে লক্ষ্যে ছেলেরা শারীরিক ও মানসিকভাবে পুরোপুরি প্রস্তুত।’ বলেন হেসন। এক মাসের বেশি সময় ধরে চলা বিশ্বকাপে শরীরিক সামর্থ্যে অন্য দলগুলোর চেয়ে নিউজিল্যান্ড বেশ এগিয়ে। মাঠেই তার প্রমাণ মিলছে। রোহিত শর্মা-মাহমুদুল্লাহদের যেখানে সেঞ্চুরির পর কেমন ক্লান্ত দেখিয়েছে, সেখানে কোয়ার্টারে অপরাজেয় ২৩৭ রানের ইনিংস খেলে মাইক্রোফোনের সামনে মার্টিন গাপটিল ছিলেন দারুণ সজীব ও স্বতস্ফূর্ত! মনেই হয়নি ইনিংসের আদ্যপান্ত ব্যাটিং করে এই মাত্রই ফিরেছেন। বর্ষীয়ান ড্যানিয়েল ভেট্টোরির শূন্যে লাফিয়ে এক হাতে নেয়া ক্যাচটিও ছিল দর্শনীয়! সব মিলিয়ে নিউজিল্যান্ড আসলেই দারুণ অবস্থায় রয়েছে। কোয়ার্টারের আগে গ্রুপ পর্বে যারা ছয় ম্যাচের তুলে নেয় দুর্দান্ত সব জয়। কিউই ক্রিকেটারদের এমন ‘দুই’ ফুসফুসের জীবনী শক্তি নিয়ে কোচ আস্বস্ত হতেই পারেন। গাপটিলের অপরাজেয় ২৩৭ রানের অবিশ্বাস্য ইনিংস নিয়ে হেসনের বক্তব্য, ‘গাপটিলের ইনিংসটা কেবল আমাকেই নয়, গোটা দেশকেই গর্বিত করেছে। সত্যি অসাধারণ ব্যাটিং করেছে। প্রথমে দেখে শূনে ভিত গড়ে এরপর আক্রমণে গিয়েছে। এটা ক্লেসিক্যাল ইনিংসের ঐতিহাসিক নিদর্শন। কদিন আগেও যখন ফর্মে ছিল না, তখন আমি ওকে মানসিক সাহস যুগিয়েছি। নেটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পরিশ্রম করে তার ফল পেয়েছে। গাপটিলকে দেখে অন্যদের শেখা উচিত। আমি তো মনে করি সেমিতে অন্য কোন ব্যাটসম্যান এমনি করে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে দিক!’ সেটি হলেই ভাল। কারণ সার্বিক শক্তির বিচারে প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা এগিয়ে। তার ওপর গত দশ বিশ্বকাপে ছয় সেমিতে গিয়েও শিরোপা অধরাই থেকে গেছে কিউইদের। সুতরাং ঘরের মাটিতে ফাইনালের টিকেট পেতে মাঠে সামর্থ্যরে বেশি দিতে হবে ব্রান্ডন ম্যাককুলামদের। একে একে বিদায় নিয়েছে দশ দল। যেখানে রয়েছে সাবেক চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা, কুলীন ইংল্যান্ড, চমকে দেয়া বাংলাদেশ। তবে সেরা দলগুলোই শেষ চারের লড়াইয়ে অবতীর্ণ হচ্ছে বলে মনে করেন হেসন। কিউই কোচ আরও বলেন, ‘অনেকেই মনে করছেন আসরের সেরা চার দলই সেমিতে উঠে এসেছে। আমি তাদের সঙ্গে একমত। ভারত-অস্ট্রেলিয়া সেরা ক্রিকেট খেলছে। দক্ষিণ আফ্রিকা নিজেদের দিনে ভয়ঙ্কর। তবে আমরা তাদের চাপে ফেলে সাফল্য তুলে নিতে প্রস্তুত।’ চাপে ফেলে সেরা সাফল্যÑ হেসনের এই বক্তব্যে ভিন্ন ইঙ্গিত খুঁজে পারেন। বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যর্থতার ইতিহাস সবার জানা। দারুণ সম্ভাবনা নিয়ে শুরুর পরও একাধিক বিশ্বকাপ ও আইসিসি টুর্নামেন্টের শেষ দিকে ছিটকে গেছে তারা। জিততে জিততে হেরে গেছে সব ম্যাচ! যে কারণে ‘চোকার্স’ তকমায় ভূষিত প্রোটিয়ারা! নকআউট, কোয়ার্টার, সেমির মতো লড়াইয়ে দলটির চাপ সহ্য করার সামর্থ্য নিয়ে রয়েছে বড় প্রশ্ন, সেদিক ইঙ্গিত করেই সাফল্য তুলে নিতে চান কিউই ‘বস’।
×