স্টাফ রিপোর্টার ॥ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকেরাই সালাহউদ্দিন আহমেদকে তুলে নিয়ে গেছে বলে আবারও অভিযোগ করেছেন তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আমার স্বামীকে ১২ দিন ধরে খুঁজে পাচ্ছি না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে তুলে নিয়ে গেছে। আমিসহ আমার ছেলে-মেয়েরা এক অসম্ভব অস্থিরতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছি। আমি বিনীতভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবারও আবেদন জানাচ্ছি, তিনি যেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেন- যেভাবে তারা আমার স্বামীকে তুলে নিয়ে গেছে, অক্ষত অবস্থায় আমার স্বামীকে তারা যেন ফিরিয়ে দেয়। আমাকে মানসিক অস্থিরতা থেকে রেহাই দেন।’ রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে বিএনপি সমর্থিত নাগরিক সমাজ এর ব্যানারে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে হাসিনা আহমেদ বলেন, ছেলে-মেয়েরা জানতে চায়, কখন তাদের বাবা ফিরে আসবে। সবাই সহযোগিতা করলে তিনি স্বামীকে ফিরে পাবেন এবং ছেলে-মেয়েরা তাদের বাবাকে ফিরে পাবে বলেও প্রকাশ করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া। এতে সালাহ উদ্দিন আহমেদের সন্ধান, গ্রেফতার-গুম-খুন বন্ধ করা ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় দ্রুত সংলাপ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবিতে তাদের উদ্বেগের কথা প্রকাশ করেন বিএনপি সমর্থিত নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ।
গত ৫ জানুয়ারি থেকে বিএনপির ডাকা দেশব্যাপী লাগাতার অবরোধ সফল করতে অজ্ঞাত স্থান থেকে সালাহ উদ্দিন আহমেদের নামে বিবৃতি আসছিল। গত ১১ মার্চ সালাহ উদ্দিনের স্ত্রী হাসিনা আহমেদ দাবি করেন, তাঁর স্বামী উত্তরার একটি বাসায় গোপনে অবস্থান করে দলীয় কর্মকা- চালাচ্ছিলেন। গত ১০ মার্চ রাতে ডিবি পরিচয়ে তাঁর স্বামীকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। যদিও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তরফ থেকে সালাহ উদ্দিনকে আটক বা গ্রেফতার করা হয়নি বলে দাবি করা হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত স্বামীর হদিস জানতে তিনি হাইকোর্টের শরণাপন্ন হন। আগামী ৮ এপ্রিল এ সংক্রান্ত শুনানি রয়েছে।
সরকারের পক্ষ থেকে সেই অভিযোগ নাকচ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সালাহ উদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়নি। তবে তাকে আটক করতে খুঁজছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। স্বামীর খোঁজে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে এর আগে বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি দেন হাসিনা আহমেদ।
স্বামীকে ফিরে পেতে উচ্চ আদালতে রিট আবেদনও করেছেন তিনি। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে আদালতকে বলা হয়েছে, পুলিশ সালাহ উদ্দিনকে গ্রেফতার করেনি। তার কোন খোঁজও পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে আগামী ৮ এপ্রিল হাইকোর্টে আবার শুনানির তারিখ রাখা হয়েছে। অন্যদের মধ্যে সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী গিয়াস উদ্দিন আহমেদ, শাহ মোঃ খসরুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাবেক সহসভাপতি আখতার আহমেদ খান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সিরাজ উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক সৈয়দ মোহাম্মদ আকরাম হোসেন, প্রয়াত চাষী নজরুল ইসলামের স্ত্রী জ্যোৎস্না চাষী সংসদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
ফের স্ত্রীর অভিযোগ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকেরাই সালাহউদ্দিনকে নিয়ে গেছে
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: