ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

কুড়িগ্রামে বিবর্ণ হচ্ছে গাছপালা

মরে যাচ্ছে নদ-নদী

প্রকাশিত: ০৩:৩৩, ২৩ মার্চ ২০১৫

মরে যাচ্ছে নদ-নদী

স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম ॥ কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ধরলা, দুধকমোরসহ ১৬টি নদ-নদীর বিশাল জলরাশি এখন নেই। বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে বয়ে যাওয়া নদীগুলো এখন প্রায় পানিশূন্য। যেদিকে তাকানো যায় শুধু বালি আর বালি। বর্তমানে সব নদীর চিত্র একইরকম। কুড়িগ্রামের নদী তীরবর্তী এলাকায় নদীর পানি শূন্য হয়ে পড়ার বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। উজান থেকে প্রায় ২ বিলিয়ন টন পলি বাংলাদেশে প্রবেশ করে। তার মধ্যে ৮০ শতাংশ পলি কুড়িগ্রামের বিভিন্ন নদী দিয়ে আসে। ফলে নদীগুলো দ্রুত ভরাট হয়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে শিশু, মেহগনি, বাবলাসহ নানা জাতের বড় বড় গাছ অকালে মরে যাচ্ছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় জীববৈচিত্র্যে এর মারাত্মক নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। কুড়িগ্রাম জেলাজুড়ে জালের মতো বিছিয়ে থাকা সব নদী একে একে হারিয়ে যাচ্ছে। নদীর শুষ্ক বুকে এখন বালি আর বালি। পানির অভাবে নদী মরে যাচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ধরলা, দুধকমোরসহ ১৬টি নদ-নদীর পরিণত হয়েছে শুকনো খালে। পলি জমে, জলাধারগুলো ভরাট হয়ে একের পর এক নদী মরে যাচ্ছে। পানিপ্রবাহ কমে আসার কারণেই নদীগুলো মৃত্যুর প্রহর গুনছে। তিস্তা চুক্তি না করা এবং উজানে তিস্তা নদীতে ভারতের বেশ কয়েকটি বাঁধ দিয়ে পানি প্রত্যাহারের কারণে পানিপ্রবাহ বস্তুত শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে। একসময়ের স্রোতস্বিনী নদ-নদী ফুলকুমোর, কালজানি, গঙ্গাধর, সংকোশ, ধরনী, জিঞ্জিরাম, হংস, নীলকোমল, শিয়ালদহ, সোনাভরি, হলহলিয়া, জালছিরাসহ অনেক নদী হারিয়ে গেছে। কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, জেলার ৫৪টি ঘাটের মধ্যে অধিকাংশ ঘাট এখন বন্ধ। শত শত নৌকার মাঝির চলছে চরম দুর্দিন।সেই সঙ্গে ঘাটশ্রমিকরা পড়ছেন মহাবিপাকে। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহ্ফুজুর রহমান জানান, ভারত একতরফা পানি প্রত্যাহরের কারণে উজান থেকে আসা পানির প্রবাহ কমে গেছে। তাছাড়া বর্ষাকালে পানির প্রবাহ বেড়ে গেলে এ অঞ্চলের নদনদীগুলোর দুই কূল ভেঙ্গে নদী প্রশস্ত হচ্ছে। নদীগুলোতে বিভিন্ন চ্যানেলের সৃষ্টি হয়। শুষ্ক মৌসুমে যে পানি আসে তা বিভিন্ন চ্যানেলে ভাগ হয়ে নদনদীগুলো খালে পরিণত হচ্ছে। তবে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় নদীগুলো ড্রেজিং করে স্বাভাবিক গতি ফিরিয়ে আনতে পারে। বগুড়ায় নদী তীরে মানববন্ধন স্টাফ রিপোর্টার বগুড়া অফিস থেকে জানান, বিশ্ব পানি দিবসে বগুড়ায় রবিবার সকালে ফতেহ আলী ব্রিজসংলগ্ন করতোয়া নদীর তীরে নদী দখল ও দূষণ রোধে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) বগুড়া জেলা শাখা ও বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির যৌথ উদ্যোগে দীর্ঘ মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়। এই আয়োজনে কয়েকটি সংগঠন একাত্মতা প্রকাশ করে কর্মসূচীতে অংশ নেয়। সংগঠনগুলো হলোÑ সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, আমরা ক’জন শিল্পীগোষ্ঠী, বগুড়া বাউলগোষ্ঠী, বগুড়া মহিলা কলেজ, সরকারী আযিযুল হক কলেজের টিম ফর এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ, পেসড, গ্রামীণ বিকাশ ফাউন্ডেশন, নর্দার্ন ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, সাইক ডিজিটাল হাসপাতাল প্রভৃতি। মানববন্ধনে মানুষের সৃষ্ট দুর্যোগে একদার প্রমত্তা করতোয়া নদী যেভাবে দিনে দিনে খালে পরিণত করে হত্যা করা হচ্ছেÑ তা বাঁচানোর জন্য সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানায় বাপা ও অন্যান্য সংগঠনের বক্তারা।
×