ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

নীলফামারীতে মাসোহারা দিয়ে চলছে করাতকল

প্রকাশিত: ০৬:৩৭, ২২ মার্চ ২০১৫

নীলফামারীতে মাসোহারা দিয়ে চলছে করাতকল

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ লাইসেন্সবিহীন করাত কল বসিয়ে বছরের পর বছর রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চলেছে নীলফামারীর কিশোরীগঞ্জ উপজেলার ১৭টি করাতকল মালিক। ফলে প্রতিবছরে সরকার লাখ লাখ টাকার রাজস্ব হতে বঞ্চিত হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় বনবিভাগের কর্মকর্তাদের মাসোহারা দিয়ে ওইসব করাত কল মালিকগণ বছরের পর বছর ফায়দা লুটে চলেছে। এছাড়া করাতকলের আড়ালে রাতের আধারে সড়কের গাছ কেটে ওইসব করাতকল ফায়দা লুটছে। অভিযোগ উঠেছে, শুধু কিশোরীগঞ্জ উপজেলায় নয়, জেলার ৬ উপজেলায় দুই শতাধিক করাতকলের মধ্যে ৫০টি করাতকলের কোন লাইসেন্স নেই। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, কিশোরীগঞ্জ উপজেলা শহরের ৯টিসহ উপজেলাজুড়ে মোট ১৭টি করাতকল রয়েছে। কোন করাতকলে বিদ্যুত সংযোগ না থাকলেও উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন শ্যালো মেশিন বসিয়ে করাতকল চালানো হচ্ছে। এগুলোর কারও কোন লাইলেন্স নেই। কারণ হিসেবে মালিকরা জানায়, বনবিভাগের লোকজন লাইসেন্স করার জন্য কোন চাপ দেন না। তারা মাসোহারা নিতে বেশি ভালবাসেন। করাতকলের মালিক আলম হোসেন জানান, তিনি এক বছর আগে লাইসেন্স করার জন্য আবেদন করেন উপজেলা বনবিভাগের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা মুকুল হোসেনের মাধ্যমে। আবেদনের সঙ্গে সরকারী অর্থ জমা দেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাকে লাইসেন্স প্রদান করা হয়নি। কিশোরীগঞ্জ শহরের তেলপাম্প এলাকার করাতকলের মালিক রহিদুল ইসলাম বলেন, উপজেলায় অনেক করাতকল আছে কারও লাইসেন্স নেই। মাঝে মাঝে বনবিভাগের দায়িত্বে থাকা কেউ এলে কিছু পয়সা দেই, তাই লাইসেন্স করার প্রয়োজন হয় না। এলাকাবাসী জানায়, রাতের আধারে সড়কের অনেক সরকারী গাছ চুরি হয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি বড়ভিটা ইউনিয়নের বড়ভিটা বাজারের চোরাই গাছ আটক করেছিলেন উপজেলা বনবিভাগ কর্মকর্তা মুকুল হোসেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত সে বিষয়ে কোন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ওই করাতকলের মালিক কিশোরীগঞ্জ শহরের মহুরুল বলেন, ওই করাতকলটি ছিল তপনের। সম্প্রতি আমি সেটি ক্রয় করে পরিচালনা করছি। তবে এখনও কোন লাইসেন্স করতে পারেনি। উপজেলা বন কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা মুকুল হোসেন বলেন, করাতকল মালিকদের একাধিক বার লাইসেন্স করার জন্য নোটিস দেয়া হয়েছে। কিন্তু তারা বিষয়টি আমলে নিচ্ছে না। অপরদিকে সৈয়দপুর রেঞ্জের বনবিভাগের কর্মকর্তা মোনায়েম হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, বিভিন্ন জটিলতার কারণে করাতকলের লাইসেন্স দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। কি ধরনের জটিলতা রয়েছে এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ বিষয়ে সময় করে কথা বলতে হবে বলে জানান। কিশোরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বিষয়টি নিয়ে উপজেলার মাসিক সভায় গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। জরুরীভিত্তিতে করাত কল মালিকদের লাইসেন্স করতে নোটিস প্রদান করা হবে।
×