ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দরপতনের ধারা অব্যাহত

প্রকাশিত: ০৩:৪৫, ২২ মার্চ ২০১৫

দরপতনের ধারা অব্যাহত

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ গত সপ্তাহেও দেশের পুুঁজিবাজারে দরপতনের ধারা অব্যাহত রয়েছে। বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ কমার কারণে পুঁজিবাজারে কমেছে মূল্যসূচক, লেনদেন ও বাজার মূলধন। দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক ডিএসইএক্সের পতন হয়েছে প্রায় ৮৮.৯২ বা ১.৯৫ শতাংশ। আর চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) কমেছে ১৩৫ পয়েন্ট। বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, রাজনৈতিক কর্মসূচী হিসেবে গত দুই মাস ধরে টানা অবরোধ এবং হরতালের কারণে দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। শিল্পকারখানায় উৎপাদন রফতানি আয় কমছে। এছাড়া কোম্পানিগুলোর চলমান প্রান্তিকের ফল বা আগামী মাস থেকে প্রকাশ হতে শুরু করবে সেখানেও রাজনৈতিক অস্থিরতার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে অভিজ্ঞরা বলছেন। যার কারণে বাজারে সেই হারে শেয়ারের ক্রেতা দেখা যাচ্ছে না। তবে অনেকেই বলছেন, বাজারে কৌশলী বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ সব সময়ই অল্প দামে শেয়ার কিনতে বর্তমান সময়কেই বেছে নিয়েছেন। অল্প দামে ভাল শেয়ারের প্রতি তারা আগ্রহ বাড়িয়েছেন। সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, ডিএসইর লেনদেন সার্বিক সূচক বা ডিএসইএক্সের ৪ হাজার ৫৫৭ পয়েন্ট দিয়ে শুরু হয়েছে। কিন্তু সপ্তাহ শেষে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৪৬৮.০২ পয়েন্টে। অর্থাৎ সপ্তাহ শেষে সূচক কমছে ৮৮.৯২ বা ১.৯৫ শতাংশ। আগের সপ্তাহে ডিএসই সূচকের পতন হয়েছিল ১০৭.৯৭। ডিএসই-৩০ সূচক ২৭.৭৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৬৮৭ পয়েন্টে এবং শরিয়াহ সূচক ২৩.৩০ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ০৮১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সপ্তাহজুড়ে লেনদেনে অংশ নেয়া অধিকাংশ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের দর কমেছে। মোট ৩২০টি ইস্যুর মধ্যে ৬০টির দর বেড়েছে, কমেছে ২৪৭টির, অপরিবর্তিত রয়েছে ১১টির দর। আর ২টি ইস্যুর কোন লেনদেন হয়নি। আগের সপ্তাহে ডিএসইতে দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছিল ২৮৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। যা গত সপ্তাহে কমে হয়েছে ২৫৫ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহের তুলনায় লেনদেন কমার হার ১০.০৬ শতাংশ। সপ্তাহ শেষে ডিএসই বাজার মূলধনের পরিমাণও কমেছে। সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর বাজার মূলধনের পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ১৩ হাজার ৮১৫ কোটি টাকারও বেশি। আর সপ্তাহ শেষে তা কমে হয়েছে ৩ লাখ ১০ হাজার ৮৯৮ কোটি টাকায়। সপ্তাহ শেষে বাজার মূলধন কমার হার ০.৯৩ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে লেনদেনের শীর্ষে রয়েছে শাহজিবাজার পাওয়ার লিমিটেড। এ কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৬৭ কোটি ৭০ লাখ ২২ হাজার টাকার। সপ্তাহের মোট লেনদেনের ৬.৬২ শতাংশই লেনদেন হয়েছে এ কোম্পানিটির শেয়ার। সাপ্তাহিক লেনদেনের সেরা অন্য কোম্পানিগুলো হচ্ছেÑ লাফার্জ সুরমা, গ্রামীণফোন, ইফাদ অটোস, এসিআই, সামিট এ্যালায়েন্স পোর্ট লিমিটেড, শাশা ডেনিমস, এমজেএল বিডি, স্কয়ার ফার্মা ও বেক্সিমকো। সমাপ্ত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) কমেছে। গত সপ্তাহে ডিএসইতে পিই রেশিও কমেছে দশমিক ২২ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ২৯ শতাংশ। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। আলোচিত সপ্তাহে ডিএসইতে পিই রেশিও কমে দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ৬০ পয়েন্টে। যা আগের সপ্তাহে ছিল ১৬ দশমিক ৮২ পয়েন্ট। সপ্তাহ শেষে খাতভিত্তিক ট্রেইলিং পিই রেশিও বিশ্লেষণে দেখা যায়, ব্যাংক খাতের পিই রেশিও অবস্থান করছে ৭ দশমিক ৬ পয়েন্টে, সিমেন্ট খাতের ৩২ পয়েন্ট, সিরামিক খাতের ২৯ দশমিক ২ পয়েন্টে, প্রকৌশল খাতের ১৯ দশমিক ২ পয়েন্ট, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের ৩৭ দশমিক ৫ পয়েন্ট, জ্বালানি ও বিদু্যুত খাতে ১২ দশমিক ৩ পয়েন্ট, সাধারণ বিমা খাতে ১১ দশমিক ২ পয়েন্টে, তথ্য ও প্রযুক্তি খাতের ২৩ দশমিক ৬ পয়েন্টে, পাট খাতের ১৬৭ দশমিক ৯ পয়েন্ট, বিবিধ খাতের ৩৯ দশমিক ৩ পয়েন্ট, এনবিএফআই খাতের ১৭ দশমিক ৩ পয়েন্টে, কাগজ খাতের ৭ দশমিক ২ পয়েন্ট, ওষুধ ও রসায়ন খাতের ২৭ দশমিক ৯ পয়েন্ট, সেবা ও আবাসন খাতের ৩৩ দশমিক ৪ পয়েন্ট, চামড়া খাতের ২২ পয়েন্ট, টেলিযোগাযোগ খাতে ৩১ দশমিক ২ পয়েন্ট, বস্ত্র খাতের ১০ দশমিক ৯ পয়েন্ট এবং ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে ১৩ দশমিক ১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্য সূচক ৮ হাজার ৪৩৫ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৩০০ পয়েন্টে। লেনদেন হয়েছে ৮১ কোটি ৭ লাখ টাকার। আর লেনদেন হওয়া ২৫৯টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৩টির, কমেছে ১৯৫টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১১টির।
×