ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

৬ উইকেটের বড় জয় অসিদের, দুরন্ত বোলিংয়ে ম্যাচসেরা হ্যাজলউড, বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ‘ডিফেন্ডিং’ চ্যাম্পিয়ন ভারতের মুখোমুখি হবে স্বাগতিক ;###;অস্ট্রেলিয়া, হার দিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ার শেষ হলো দুই পাক-তারকা মিসবাহ ও আফ্রিদির!

পাকিস্তানকে হারিয়ে সেমিতে অস্ট্রেলিয়া

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ২১ মার্চ ২০১৫

পাকিস্তানকে হারিয়ে সেমিতে অস্ট্রেলিয়া

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিল ‘ফেবারিট’ অস্ট্রেলিয়া। শুক্রবার তৃতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে ৬ উইকেটের বড় জয়ে ১১তম বিশ্বকাপ ক্রিকেটের সেমিফাইনালে উঠে গেল মাইকেল ক্লার্কের দল। আগামী বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় সেমিফাইনালে অসিদের প্রতিপক্ষ ‘ডিফেন্ডিং’ চ্যাম্পিয়ন ভারত। টস-হার ছাড়া এ্যাডিলেডে কাল সবই অনুদিত হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার সাজানো ছকে। ১ বল বাকি থাকতে পাকিদের ২১৩ রানে গুটিয়ে দিয়ে ম্যাচটা তারা জিতে নিয়েছে ১৬.১ ওভার ও ৬ উইকেট অক্ষত রেখে! ৩৫ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ‘নায়ক’ বনে গেছেন পেসার জস হ্যাজলউড। টানা দুই হারে শুরুর পরও গ্রুপের শেষ চার ম্যাচ জিতে শেষ আটে উঠে আসে মিসবাহ-উল হকের দল। ব্যাটিং ব্যর্থতাই তাদের ৯২’এর স্মৃতি ফিরিয়ে আনার স্বপ্ন ধুলোয় মিশিয়ে দিল! ইতিহাস বলে এ্যাডিলেড ওভালে আগে ব্যাটিং করা দলের সাফল্যই বেশি। টস জিতলেও সেটি কাজে লাগাতে পারেনি মিসবাহ বাহিনী। উল্টো করে বললে, দুই পেসার হ্যাজলউড ও মিচেল স্টার্কের গতির তোপে হারার আগেই হেরে বসেছে তারা! ২ উইকেট পেয়েছেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, ১টি করে মিচেল জনসন ও জেমস ফকনার। সব মিলিয়ে এ্যাডিলেডের প্রথমার্ধ ছিল অসি বোলারদের নিখুঁত প্রদর্শনীর মঞ্চ। যার ফল পুরো ইনিংসে পাক-ব্যাটসম্যানরা কোমর সোজা করে দাঁড়াতে পারেননি। প্রত্যেকে শুরু করেছেন ভাল কিছুর ইঙ্গিত দিয়ে, কিন্তু শেষ অবধি ব্যর্থতাই হয়েছে পরিণতি। ২০ রানের জুটির পর দুই ওপেনার আহমেদ শেহজাদ (৫) ও সরফরাজ আহমেদকে (১০) তুলে নেন হ্যাজলউড ও স্টার্ক। এরপর মিসবাহ-হারিস সোহেলের মধ্যে গড়ে ওঠে ৭৩ রানে আশা জাগানিয়া জুটি। কিন্তু এ জুটি বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরই সব কেমন এলোমেলো হয়ে যায়! নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় মিসবাহর দল। শোয়েব মাকসুদ, উমর আকমল, শহীদ আফ্রিদির মতো ব্যাটসম্যান থাকা সত্ত্বেও বড় জুটি না হওয়ার ফল ৪৯.৫ ওভারে ২১৩ রানে অলআউট পাকিরা। হারিসের ব্যাট থেকে আসে সর্বোচ্চ ৪১ রান। মিসবাহ ৩৪, মাকসুদ ২৯ রানে সাজঘরে ফেরেন। আকমল (২৫ বলে ২০)-আফ্রিদির (১৫ বলে ২৩) মধ্যে ভাল কিছুর ইঙ্গিত ছিল। কিন্তু ‘হার্ডহিটার’ এই জুটিও পারেনি। ঘুরিয়ে দেখলে, তাদের পাত্তা দেননি অস্ট্রেলীয় বোলাররা! দারুণ বুদ্ধিদীপ্ত বল করেছেন হ্যাজলউড, স্টার্ক (২/৪০) ও ম্যাক্সয়েলরা (২/৪৩)। মোহাম্মদ শামিকে (১৭) হটিয়ে ১৮ শিকারে আসরে সর্বাধিক উইকেটর মালিক এখন স্টার্ক। দলের ব্যর্থতার দিনে ইমরান খানের পর (৩,২৪৭) দ্বিতীয় পাকিস্তানী অধিনায়ক হিসেবে ওয়ানডেতে ৩ হাজার রানের মাইলফলক অতিক্রম করেন মিসবাহ (৩,০০৩)। মাত্র ২১৪ রানের টার্গেট অসিদের জন্য কঠিন হওয়ার কথা নয়। সেটি হয় ও-নি। তবে পাকিস্তানী পেসারদের তোপের মুখে এক পর্যায়ে ১০.৪ ওভারে ৫৯ রানে অস্ট্রেলিয়া ৩ উইকেট হারালে ক্ষণিকেটর নাটকীয়তা তৈরি হয়! পাকিদের সামনে যখন দারুণ সুযোগ তখনই বড় ভুল করে বসেন রাহাত আলি। ওয়াহাব রিয়াজের করা ওভারে (দলীয় ১৭তম) ফাইন লেগে শেন ওয়াটসনের সহজ ক্যাচ মিস করেন তিনি। ওয়াটসন তখন ৪ রানে, সেই তিনিই শেষ পর্যন্ত ৬৪ রানে অপরাজিত থেকে জয় নিয়ে ফেরেন! স্টিভেন স্মিথ ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের সঙ্গে গড়েন ৮৯ ও অবিচ্ছিন্ন ৬৮ রানের মূল্যবান জুটি। তাতেই পাকিস্তানের বিশ্বকাপ সমাপ্তির পথটা পরিষ্কার হয়ে যায়। সর্বোচ্চ ৬৫ রান করে আউট হন স্মিথ। কথায় আছে ‘ক্যাচ মিস তো ম্যাচ মিস’- চলতি বিশ্বকাপে মোট ১৫ ক্যাচ ছাড়ে মিসবাহর দল! দুই উইকেট নেন ওয়াহাব রিয়াজ, সোহেল খান ও এহসান আদিলের শিকার একটি করে। হারের জন্য নিজেদের ব্যাটিং ব্যর্থতাকেই দায়ী করেন মিসবাহ। চল্লিশোর্ধ অধিনায়ক ও ‘বুম বুম’ আফ্রিদি আগেই ওয়ানডে অবসরের ঘোষণা দিয়ে রেখেছিলেন, সেটি ঠিক থাকলে হার দিয়ে রঙ্গিন পোশাকের ক্রিকেটকে বিদায় জানাতে হলো দুই পাক-তারকাকে!
×