ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

শুধুই হাহাকার, ক্ষোভ, বিতর্ক...

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ২১ মার্চ ২০১৫

শুধুই হাহাকার, ক্ষোভ, বিতর্ক...

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ একদিন পেরিয়ে গেলেও বাংলাদেশের মানুষ ভুলতে পারেনি মেলবোর্নে কি ভাগ্যবরণ করতে হয়েছে জাতীয় ক্রিকেট দলকে। কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচে বাজে আম্পায়ারিংয়ের কারণেই বড় ব্যবধানে হেরেছে টাইগাররা। সবকিছু ঠিক থাকলে হয় তো জিতেও যেতে পারত বাংলাদেশ। এমনটাই মনে করছেন কিংবদন্তি সাবেক ক্রিকেটাররা পর্যন্ত। সেই মিছিলে খোদ ভারতেরই সাবেক ক্রিকেটাররা পর্যন্ত আছেন। বাংলাদেশ জুড়েই জ্বলে উঠেছে ক্ষোভের আগুন। বৃহস্পতিবার ম্যাচ শেষে রাতেই আইসিসির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে দুই আম্পায়ার আলিম দার ও ইয়ান গোল্ডের কুশপুতুল দাহ করা হয়েছে। শুক্রবারও বাংলাদেশের ক্রিকেটপাগল জনতা থেমে থাকেননি। আন্তর্জাতিক অঙ্গনও বৃহস্পতিবার থেকে শুরু করে পুরো শুক্রবারজুড়েই ছিল ম্যাচে বিতর্কিত আম্পায়ারিংয়ের আলোচনা-সমালোচনায় মুখর। এসব তর্ক বিতর্কেরই কিছু চিত্র দেখা যাক। আইসিসি মানে ‘ইন্ডিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল’ বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারতের জন্য অনেক বড় হুমকি ছিল বাংলাদেশ দল। গ্রুপ পর্বে টাইগাররা দুর্দান্ত খেলেছে এবং ইংল্যান্ডের মতো শক্তিশালী দলকে হারিয়ে দিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে। এটা যে কোন প্রতিপক্ষের জন্য ভয়ানক দলে পরিণত করে বাংলাদেশকে। এ কারণেই বিশ্ব ক্রিকেট ঢেলে সাজানোর প্রস্তাবক তিন মোড়লের প্রধান মোড়ল ভারত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলকে (আইসিসি) প্ররোচিত করে ম্যাচে বাজে আম্পায়ারিংয়ের মাধ্যমে জয় ছিনিয়ে এনেছে। এমন দাবি দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের। অনেকে সে কারণে আইসিসিকে বলছেন ইন্ডিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল। ফেসবুক ঘেঁটে দেখা গেছে এ ধরনের অনেক পোস্ট। যার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আইনুল হাবিব পাপ্পু বাংলাদেশের পরাজয়ের পরই লিখেছেন, ‘আইসিসি-ইন্ডিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল।’ এমনকি চরম বাংলাদেশ বিদ্বেষী হিসেবে পরিচিতি সাবেক পাকিস্তানী ক্রিকেটার রমিজ রাজাও এদিন বাংলাদেশের পক্ষেই কথা বললেন। তিনি টুইটারে ক্ষোভ ঝেড়ে লিখেছেন, ‘দারুণ দেখিয়েছ আইসিসি (ইন্ডিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল)। নিশ্চিত তোমরা পুরোপুরি বিক্রি হয়ে গেলে।’ বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার পর্যন্ত এভাবেই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোয় বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্ত-সমর্থকরা ও অন্যরা ঝড় তুলেছেন। আম্পায়ারিং ইস্যু নেই আইসিসির রিপোর্টে স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ যখন ক্রিকেট দুনিয়াজুড়ে বাংলাদেশ-ভারত কোয়ার্টার ফাইনালে হওয়া অবিচার নিয়ে হৈ চৈ চলছে, সেখানে আইসিসি নীরব! বৃহস্পতিবার মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে বিতর্কিত আম্পায়ারিং হতবাক করেছে ক্রিকেট বিশ্বকে। অথচ আইসিসির অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে এই ম্যাচ রিপোর্টে এসব নিয়ে টুঁ-শব্দটিও লেখা হয়নি। মনে হয়েছে স্বাভাবিক ম্যাচ খেলে ভারত বড় ব্যবধানে জিতেছে। সুরেশ রায়নাকে এলবিডব্লিউ না দেয়া, রোহিত শর্মা ক্যাচ আউটের পর সেই বল নো দেয়া এবং মাহমুদুল্লাহর ক্যাচ ধরতে গিয়ে শিখর ধাওয়ানের সীমানার রশি ছোঁয়া-এগুলো ছিল ম্যাচের কলঙ্ক। ওই প্রতিবেদনে উল্লেখযোগ্য মুহূর্তগুলোর মধ্যে স্থান পায়নি এ সব ঘটনা। বাংলাদেশের বোলিংয়ের সময়ের এ দুটি ঘটনা স্থান পায়নি একেবারেই। আর মাহমুদুল্লাহকে আউট দেয়া হয়েছে থার্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে। প্রতিবেদনে ভারতের খেলার প্রশংসাও উঠে এসেছে। বাংলাদেশ গ্রুপপর্বে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে এলেও কোয়ার্টারে হেরে গেছে। এর মাধ্যমে টানা দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠার পথ সুগম হয়েছে ভারতের। ভক্তদের জন্য ক্রিকেটারদের ধন্যবাদ স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বৃহস্পতিবার ভারতের কাছে কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচটি হেরে বিশ্বকাপ শেষ হয়ে গেছে বাংলাদেশের। তবে এ ম্যাচ হারলেও আসরে চমৎকার পারফর্মেন্স করেছেন মাশরাফিরা। এ জন্য বাংলাদেশী ভক্ত-সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে নিজেদের ফ্যানপেজে এমনটিই জানিয়েছেন ক্রিকেটাররা। বর্তমান টেস্ট ও সাবেক ওয়ানডে অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম নিজের ফেসবুক ফ্যান পেজে লিখেছেন, ‘ধন্যবাদ সব সমর্থককে। আমি নিশ্চিত, আমাদের সাপোর্টাররা বিশ্বের সেরা সাপোর্টার। প্রতিটা মুহূর্তে তাদের সাপোর্ট আমাদের অনুপ্রাণীত করেছে।’ এ ছাড়া ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটি হারার পর মুশফিক আরও লিখেছেন, ‘দিনটি আমাদের ছিল না। তার পরও ছেলেরা এই টুর্নামেন্টে যেভাবে লড়াই করেছে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড কন্ডিশনে, এটা অসাধারণ।’ দেশের সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান লিখেছেন, ‘বিশ্বকাপ জুড়ে সকলের আন্তরিক সমর্থনের জন্য টাইগারদের পক্ষ থেকে সবাইকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ! এবারের মতো বিশ্বকাপ যাত্রা এখানেই শেষ, এ যাত্রায় সর্বস্ব দিয়ে খেলেছে তারা। তবে, সামনে আছে অনেক কিছু, আছে উজ্জ্বল ভবিষ্যত।’ নিরপেক্ষ ছিল না এমসিজিও স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ-ভারত কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে আম্পায়াররা বাজে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। প্রতিটি সিদ্ধান্তই বাংলাদেশের বিপক্ষে গেছে। শুধু কী আম্পায়াররা, নিরপেক্ষ ছিল না এমসিজিও। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভেন্যু মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড। আগে থেকেই ভাবা হয়েছিল এই ম্যাচটিকে ঘিরে নানা শঙ্কা-আশঙ্কার কথা। শেষ অবধি তাই সত্যি হয়েছে। অনেক কিছুই বাংলাদেশের বিপক্ষে গেছে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে। গ্যালারিতে প্রায় ৪৫ হাজারের মতো ভারতীয় সমর্থক। এর বাইরে মাঠের খেলায় আম্পায়ারদের একের পর এক পক্ষপাত সিদ্ধান্তে প্রশ্ন উঠতেই পাড়ে বাংলাদেশ আর ভারতের মধ্যকার ম্যাচটা আসলে কোথায় হচ্ছে? অনেক কিছুর সঙ্গে বাদ যায়নি মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড (এমসিজি) কর্তৃপক্ষও। ম্যাচ চলাকালে ইলেক্ট্রনিক স্কোরবোর্ডে দেখা গেছে ভারতের পক্ষে নানা রকম প্রচার। এর মধ্যে একটাতে হাস্যোজ্জ্বল ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে ছিলেন সাবেক ২ ভারতীয় ক্রিকেটার অনিল কুম্বলে ও সঞ্জয় মাঞ্জরেকারকে। সঙ্গে লেখা ছিল, ‘জিতেগা রে জিতেগা ... ইন্ডিয়া জিতেগা!’ আইসিসি কী এ রকম কোন বিজ্ঞাপন প্রচারের অনুমতি দিতে পারে? তাতেই বোঝা যায়, নিরপেক্ষ ছিল না এমসিজিও। মাঠে ভারতের ১১ ক্রিকেটার, ৩ আম্পায়ার ও মাঠের বাইরে যেন আইসিসির বিপক্ষেও লড়াই করতে হয়েছে বাংলাদেশকে। শেষপর্যন্ত হার নিয়ে বিদায়ও হতে হয়েছে। আইসিসির দায়িত্ব বিষয়টি তদন্ত করা ॥ কামাল আইসিসির প্রেসিডেন্ট ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সাবেক সভাপতি আ হ মোস্তফা কামালও দারুণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন বাজে আম্পায়ারিংয়ের কারণে। তিনি বলেন, ‘কোন মান ছিল না আম্পায়ারিংয়ের। মনে হচ্ছিল তারা সব ঠিকঠাক করেই মাঠে নেমেছেন। আইসিসির সদস্য হিসেবে আমরা সরাসরি আইসিসির বিরুদ্ধে কিছু বলতে পারব না। এখন আইসিসির দায়িত্ব হবে পুরো বিষয়টি তদন্ত করে বের করা যে এখানে কোন বিতর্কিত বিষয় আছে কি না। অবশ্যই আইসিসি একটা পদক্ষেপ নেবে।’ আরেকবার খেলা হলে বাংলাদেশই জিতবে ॥ পন্টিং অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক রিকি পন্টিং টানা দুই বিশ্বকাপে দলকে শিরোপা জিতিয়েছেন নেতৃত্ব দিয়ে। বাংলাদেশের পরাজয়টা তাকেও বেশ নাড়িয়ে দিয়েছে। তবে এরচেয়েও কষ্ট পেয়েছেন তিনি যেভাবে বাজে আম্পায়ারিংয়ের শিকার হয়েছে বাংলাদেশ সে কারণে। পন্টিং এখনও বিশ্বাস করেন আরেকবার খেলা হলে ভারতই হারবে। তিনি বলেন, ‘যেভাবে আমরা ভুল সিদ্ধান্ত দেখলাম তা অভাবনীয়। এমনটা মেনে নেয়া খুবই কঠিন। এসব বাজে সিদ্ধান্তের কারণেই আজ হারল বাংলাদেশ। পুরো আসরে দলটি দুর্দান্ত খেলেছে। আমার মনে হয় আবারও এ ম্যাচটি হলে ভারতই হারবে।’ রোহিত-রায়না আউট ছিলেন ॥ লারা মেলবোর্নে খেলা চলার সময় অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট দলের বর্তমান নির্বাচক মার্ক ওয়াহ প্রশ্ন ছুড়েছিলেন কিংবদন্তি ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটসম্যান ব্রায়ান লারাকে আম্পায়ারিং নিয়ে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা একটা অবিশ্বাস্য সিদ্ধান্ত। একটা নয়, দুটো সিদ্ধান্ত এদিন বাংলাদেশের বিপক্ষে গেছে এবং এ জন্য বাংলাদেশকে অবশ্যই ভুগতে হলো।’ লারা মনে করেন, রোহিত শর্মা ৯০ রানের মাথায় পেসার রুবেল হোসেনের বলে যে ক্যাচ তুলেছিলেন, তা মোটেই ‘বিমার’ ছিল না। আর সুরেশ রায়না পরিষ্কার এলবিডব্লিউ ছিলেন। মাশরাফির বল রায়নার ব্যাটে লাগেনি। লেগেছিল হাঁটুর নিচে। পরিষ্কার এলবিডব্লিউটাকে ব্যাটে বল লেগেছে বলে নাকচ করে দেয়া হয়। তখন রায়না ১০ রানে ব্যাট করছিলেন। ইনিংসের শেষে লারা তাই স্বীকার করেই বসলেন, ‘ভারতের ৩০২ রানে পৌঁছনোর বিষয়টা ছিল একেবারেই অবিশ্বাস্য।’ সিদ্ধান্তগুলো খুবই বাজে ছিল ॥ পাইলট বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক ও উইকেটরক্ষক খালেদ মাসুদ পাইলট দারুণ হতাশ হয়েছেন আম্পায়ারিংয়ে ত্রুটির বহর দেখে। তিনি কোনভাবেই মানতে পারছেন না বিষয়টা। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এত প্রযুক্তি থাকতে কেন এমন বাজে সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হবে। আমার মনে কোন সন্দেহ নেই। ওই সিদ্ধান্তগুলো খুবই বাজে ছিল।’ জাতীয় দলের নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমনও মানতে পারছেন না। তিনি বলেন, ‘আম্পায়াররা ম্যাচে অনেক সময়ই ভুল সিদ্ধান্ত দেন সেটা স্বাভাবিক। কিন্তু এ ম্যাচে যেভাবে বাজে সিদ্ধান্তগুলো দেয়া হয়েছে তা কোনক্রমেই মানতে পারছি না।’ ‘রুবেলের বলটি বৈধ ছিল’ স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ রোহিত শর্মা আউট হয়ে গেলেই ভারতের বিপদ আসতে পারত। অথচ রুবেল হোসেনের বলটি বৈধ থাকার পরও ‘নো’ দিলেন আম্পায়ার ইয়ান গোল্ড। ‘নো বল’ ডাকলেও টিভি রিপ্লেতে স্পষ্টই দেখা গেছে রুবেলের করা বলটি বৈধই ছিল। বিশ্বকাপ ক্রিকেটের গত বৃহস্পতিবারের দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচটি নিয়ে ‘ভারত বনাম বাংলাদেশ : বিতর্ক সত্ত্বেও রোহিত শর্মার সেঞ্চুরি’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদনে এভাবেই রোহিতকে ‘বাঁচিয়ে’ দেয়া বলটি নিয়ে মন্তব্য করে বার্তা সংস্থা এএফপি, যা ভারতীয় পত্রিকা টাইমস অব ইন্ডিয়াতেও প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ১০৮ বলে সেঞ্চুরি করে ভারতের ইনিংসকে পুনরুজ্জীবিত করেন ওপেনার রোহিত শর্মা। তার সপ্তম সেঞ্চুরিটিতে ছিল ১০ চার ও এক ছক্কার মার। কিন্তু ৯০ রানের সময় তিনি ‘ভাগ্যগুণে’ বেঁচে যান। রুবেল হোসেনের করা বলে ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ দেন তিনি। কিন্তু আম্পায়ার ইয়ান গোল্ড বলটি কোমরের উপরে ছিল দেখিয়ে নো বল ডাকেন। অথচ টিভি রিপ্লেতে দেখা গেছে বলটি বৈধ ছিল। অবশেষে তাসকিন আহমেদের করা বলে ১২৬ বলে ১৩৭ রানে আউট হন রোহিত। তার ইনিংসটিতে ছিল ১৪ চার ও ৩ ছক্কা। এমন ধারণা ভিত্তিহীন ॥ রিচার্ডসন আইসিসি সভাপতি হয়েও মোস্তফা কামাল আম্পায়ারিং নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন সেটা ‘দুর্ভাগ্যজনক’ আখ্যা দিয়েছেন প্রধান নির্বাহী ডেভিড রিচার্ডসন। তিনি বলেন, ‘আইসিসি বিশেষভাবে মোস্তফা কামালের মন্তব্য বিশেষভাবে বিবেচনায় এনেছে। তার এমন মন্তব্য খুবই দুর্ভাগ্যজনক কিন্তু তিনি তার ব্যক্তিগত মতামত দিয়েছেন। কিন্তু আইসিসি ম্যাচ কর্মকর্তাদের সমালোচনা করার সময় প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাকে আরেকটু বিবেচনা করে কথা বলা প্রয়োজন ছিল। নো বলের সিদ্ধান্তটা সবসময়ই ৫০/৫০। ক্রিকেটের বড় বিষয় হচ্ছে আম্পায়ারদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত এবং অবশ্যই সম্মান দিতে হবে।‘ এরপর তিনি দাবি করেন শক্ত কোন প্রমাণ কিংবা তথ্য না থাকলে কোন আম্পায়ারকেই এভাবে দোষারোপ করা যাবে না। তিনি বলেন, ‘আম্পায়ারদের মনে কোন অভিলাষ কিংবা নিজেদের সর্বোচ্চ সামর্থ্য না দেয়ার কোন বিষয় ঘটেছে এমন ধারণা ভিত্তিহীন। আর শক্ত কোন তথ্যাদি না থাকলে এসব অবশ্যই প্রত্যাখ্যান করা হবে।’ এর বিরুদ্ধে আপীল তো হবেই ॥ পাপন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন দারুণ অবস্থায় থাকা দলের পরাজয়টা এভাবে মেনে নিতে পারেননি। ত্রুটিপূর্ণ আম্পায়ারিংয়ের জন্য বাজেভাবে হেরেছে উজ্জীবিত একটি দল। এ বিষয়ে পাপন তাই বললেন, ‘এর বিরুদ্ধে আপীল তো হবেই। কিন্তু এতে খেলার ফলাফল পাল্টাবে না। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে একটি ভুল সিদ্ধান্ত পার্থক্য গড়ে দিতে পারে। সেই জায়গায় একাধিক সিদ্ধান্ত আমাদের বিপক্ষে গেছে যা সারা পৃথিবী দেখেছে।’ বাজে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন গোল্ড ॥ লক্ষণ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে একাধিক ভুল সিদ্ধান্ত দেয়ার বিষয়টি মনঃপুত হয়নি ভারতীয়দেরও। সাবেক ক্রিকেটার থেকে শুরু করে সাংবাদিকরা পর্যন্ত ভুল আম্পায়ারিং নিয়ে বিষোদগার করেছেন। ভারতের সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী টুইটারে লিখেছেন, ‘বলের উচ্চতা নিয়ে সন্দেহ থাকলে সেটা তৃতীয় আম্পায়ারকে দেয়া উচিত।’ ক্রিকেটের জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ক্রিকইনফোতে লেখা হয়েছে, ‘উচ্চতার জন্য নো বল দেয়া হলো কিন্তু তাই ছিল কী? ম্যাচের ফল নির্ধারণী সিদ্ধান্ত হতে পারে এটি।’ ভারতের সাবেক ব্যাটসম্যান ভিভিএস লক্ষণ টুইটারে লিখেছেন, ‘গোল্ডের কাছ থেকে বাজে সিদ্ধান্ত এলো। এটা কোনভাবেই নো বল হতে পারে না। ভাগ্যের সহায়তা পেয়েছেন রোহিত।’ প্রখ্যাত সাংবাদিক সম্বিত বল লিখেছেন, ‘এই নিয়ম পরিবর্তন প্রয়োজন। মাঠে থাকা আম্পায়ারদের নিশ্চিত ভুল থার্ড আম্পায়ারের মাধ্যমে নির্ভুল হওয়া উচিত।’
×