বিডিনিউজ ॥ চট্টগ্রামে নিউমুরিং টার্মিনাল ও পটুয়াখালীতে পায়রা বন্দরসহ বাংলাদেশে অবকাঠামো নির্মাণে আগ্রহী ডেনমার্কের একটি কোম্পানি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে দেখা করে এ কথা জানান সফররত ডেনমার্কের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী মোজেনস জেনসেন। তিনি বলেন, ডেনিশ প্রতিষ্ঠান ‘এপি মোলার টার্মিনাল’ নিউমুরিং টার্মিনালের বিষয়ে সরকারী-বেসরকারী অংশীদারিত্ব এবং পায়রা বন্দরের বিষয়ে সরকারের সঙ্গে সরকারের সহযোগিতার মডেলে কাজ করার প্রস্তাব দিয়েছে। সাক্ষাত শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব একেএম শামীম চৌধুরী এ বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান।
শামীম চৌধুরী বলেন, এছাড়াও অপর ডেনিশ কোম্পানি ‘ভেসটাস’ ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত কেন্দ্র প্রকল্পের জন্য সরকারের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করার বিষয়ে কাজ করছে বলে জানান জেনসেন। তিনি আশাপ্রকাশ করেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে দূষণমুক্ত জ্বালানি উৎপাদনের লক্ষ্যে দীর্ঘ উপকূল কাজে লাগানোর একটি সুযোগ বাস্তবায়িত হবে। এটি উভয়ের জন্য লাভজনক হবে। জবাবে ডেনমার্ক ও সেদেশের জনগণকে ‘বাংলাদেশের মহান বন্ধু’ অভিহিত করে প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধের সময় ডেনমার্কের জনগণের মূল্যবান নৈতিক ও কূটনৈতিক সমর্থনের কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন।
শেখ হাসিনা ডেনমার্ক-বাংলাদেশ স্ট্র্যাটেজিক সেক্টর কো-অপারেশন সফলভাবে চালু হওয়ায় ডেনিশ মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি উচ্চপর্যায়ে ‘কনফারেন্স অন আরএমজি : বাংলাদেশ ফ্রেমিং দি ফিউচার’ আয়োজনের ক্ষেত্রে ডেনমার্কের উদ্যোগের প্রশংসা করেন।
বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্প খাতে কারখানার নিরাপত্তা ও শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, কৌশলগত খাতে সহযোগিতার বিষয়ে ডেনিশ দৃষ্টিভঙ্গি বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্প খাতে পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বাংলাদেশ সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি অনুরূপ।
এই প্রসঙ্গে নতুন শ্রম আইন প্রণয়ন, শ্রম আইনের অধীনে বাস্তবায়ন বিধিমালার খসড়া, কেবিনেটে ইপিজেড আইন অনুমোদন, জাতীয় পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য নীতি প্রণয়ন, ট্রেড ইউনিয়নের নিবন্ধন ও তিনটি পরিদর্শন প্লাটফরমের মাধ্যমে কারখানাগুলোর নিরাপত্তা পরিদর্শনের পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, রাজনৈতিক, বাণিজ্যিক, বৈজ্ঞানিক, শিক্ষামূলক ও সাংস্কৃতিক খাতে আরও জোরদারের লক্ষ্যে দুটি দেশের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে অব্যাহত থাকবে।
কোপেনহেগেন নগরীতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশন চালু হওয়ার পর সম্পর্ক আরও সম্প্রসারিত ও গভীর হবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, কৃষি, জাহাজ চলাচল, পর্যটন, নির্মাণ, আইসিটি ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুটি দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ও ডেনমার্কের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি পাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি উল্লেখ করেন, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ বৃদ্ধির বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী, মুখ্য সচিব মোঃ আবুল কালাম আজাদ, ডেনমার্কে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত আবুল মাল আবদুল মুহিত ও প্রেস সচিব একেএম শামীম চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।