ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অনড় ওবামা প্রশাসন ;###;সম্পর্ক জোড়া দেয়া কঠিন হবে নেতানিয়াহুর সঙ্গে

ফিলিস্তিন ইস্যুতে ছাড় নয়

প্রকাশিত: ০৬:২২, ২০ মার্চ ২০১৫

ফিলিস্তিন ইস্যুতে ছাড় নয়

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা এবং ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর মধ্যে মঙ্গলবার রাতে নেতানিয়াহুর নির্বাচনে জয়লাভের অনেক আগে থেকেই তিক্ত সম্পর্ক ছিল। তবে এখন একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক প্রচার চালানোর পর নেতানিয়াহুর জয়লাভ এবং ইরানের সঙ্গে ওবামার সম্ভাব্য পরমাণু চুক্তির প্রেক্ষাপটে এই প্রশ্ন উঠেছে যে, প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী কখনও তাদের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে পারবেন কি- আর ওবামা এ লক্ষ্যে আদৌ চেষ্টাও করবেন কিনা। যুক্তরাষ্ট্র বুধবার একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাকে এগিয়ে নেয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেছে। তবে, ওয়াশিংটন স্বীকার করেছে যে, এ ব্যাপারে ইসরাইলী প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর প্রচারাভিযান অমার্জনীয় অবস্থান গ্রহণ মার্কিন প্রশাসনকে তার রণকৌশল পুনর্মূল্যায়ন করতে বাধ্য করেছে। হোয়াইট হাউস নেতানিয়াহুর নির্বাচনী বিজয়কে নিরুত্তাপের সঙ্গে গ্রহণ করেছে। ইসরাইলী নেতাকে অভিনন্দন জানানোর ফোনকলটি করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি। ইরানের সঙ্গে বিতর্কিত পরমাণু চুক্তির আলোচনার ফাঁকে তিনি তাকে ফোন করেন। হোয়াইট হাউস বলেছে, প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সামনের দিনগুলোতে তাকে ফোন করবেন। খবর নিউইয়র্ক টাইমস, এএফপি ও বিবিসির। মার্কিন কর্মকর্তারা গুরুত্ব আরোপ করেছেন যে, যেকোন ইসরাইলী-ফিলিস্তিনী শান্তি চুক্তির ফলশ্রুতি হতে হবে দুই রাষ্ট্রের পাশাপাশি অবস্থানÑ ওয়াশিংটন তার এই সরকারী নীতি থেকে করে আসবে না। প্রচারাভিযানের শেষ দিনগুলোতে নেতানিয়াহু ওবামা প্রশাসনের সঙ্গে তার বিরোধ আরও চরমে ঠেলে দেন এই অঙ্গীকার করে যে, তিনি থাকতে কোন ফিলিস্তিন রাষ্ট্্র হবে না। তিনি পূর্ব জেরুজালেমে আরও হাজার হাজার বসতি নির্মাণেরও প্রতিশ্রুতি দেন। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জোশ আর্নেস্ট বলেন, ‘ফিলিস্তিনীদের সঙ্গে উত্তেজনা প্রশমনের শ্রেষ্ঠ উপায় যে, একটি দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান প্রেসিডেন্ট ওবামা এই দৃষ্টিভঙ্গীতে অবিচল আছেন।’ তিনি নেতানিয়াহুর লিকুদ পার্টির এই বিদ্বেষী বাগাড়ম্বরেরও তীব্র সমালোচনা করেন যখন প্রধানমন্ত্রী তার সমর্থকদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে সতর্ক করে দেন যে, আরব ভোটাররা দলে দলে আসছে। এতে আরব-ইসরাইলী নাগরিকদের কোনঠাসা করে ফেলার প্রচেষ্টা করা হয়েছে। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ওবামার সঙ্গে এয়ারফোর্স ওয়ানে ভ্রমণরত সাংবাদিকদের বলেন, নেতানিয়াহুর বিবৃতি গভীরভাবে উদ্বেগজনক এবং বিভাজন সৃষ্টিকারী। আমি আপনাদের বলতে পারি, প্রশাসন এই দৃষ্টিভঙ্গী সরাসরি ইসরাইলীদের জানাতে চায়। ইসরাইলের পাশাপাশি একটি ফিলিস্তিনী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নেতানিয়াহুর শেষ মুহূর্তের ঘুরে দাঁড়ানোর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রশাসনের কয়েক কর্মকর্তা বলেন, ওবামা প্রশাসন এখন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের নীতিমালা অন্তর্ভুক্ত থাকবে এমন প্রস্তাব পাশে সম্মত হতে পারে, যাতে ফিলিস্তিনের সঙ্গে ১৯৬৭-এর যুদ্ধপূর্ববর্তী সীমানা এবং পরস্পর সম্মত ভূখ- বিনিময়ের বিষয়টি থাকবে। নিরাপত্তা পরিষদের এ ধরনের কোন সিদ্ধান্ত নেতানিয়াহুর জন্য অপছন্দের। যদিও এই নীতিমালাই হলো যুক্তরাষ্ট্্েরর নীতি। এতদিন পর্যন্ত কর্মকর্তারা কখনই এগুলো জাতিসংঘ অনুমোদন করতেন না। কারণ, এই পদক্ষেপ ইসরাইলের প্রতি খুবই বৈরিতামূলক হতো। প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বিজয় ইরানের সঙ্গে একটি পরমাণু চুক্তিতে পৌঁছাতে যুক্তরাষ্ট্রের কষ্টসাধ্য প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করতে পারবে না। বুধবার পররাষ্ট্র দফতর থেকে একথা বলা হয়, ইসরাইলী নেতা ইরানের সঙ্গে কোন বোঝাপড়ার বিরোধী এবং প্রচারাভিযানের সময় মার্কিন আইনপ্রণেতাদের উদ্দেশে ভাষণ দিতে ওয়াশিংটন আসেন এবং আলোচনাধীন একটি চুক্তিকে ‘মন্দ চুক্তি’ বলে নিন্দা করেন। মুখপাত্র জেন সাকি বলেন, ইরান প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিভঙ্গী সম্পর্কে আমরা দীর্ঘদিন ধরেই অবহিত।
×