ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মুক্তিযোদ্ধাদের সংজ্ঞা নির্ধারিতই আছে ॥ মোজাম্মেল

প্রকাশিত: ০৬:১২, ২০ মার্চ ২০১৫

মুক্তিযোদ্ধাদের সংজ্ঞা নির্ধারিতই আছে ॥ মোজাম্মেল

নিজস্ব সংবাদদাতা, গাজীপুর, ১৯ মার্চ ॥ মুুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী এ্যাডভোকেট আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সংজ্ঞা নির্ধারণ করেই আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা করতে যাচ্ছি। মুক্তিযোদ্ধাদের সংজ্ঞা নির্ধারিত আছে। এ ব্যাপারে আদালতের কাছে যারা মামলা করেছেন, তারা ভুল তথ্য দিয়ে হয়ত মামলা করেছেন। আদালতে যেহেতু প্রশ্নটি উঠেছে, তার ফয়সালাতো অবশ্যই দরকার আছে। আমরা আদালতের নোটিস পেলেই আদালতকে তা জানিয়ে দেব। আমরা যত দ্রুত সম্ভব আদালতে জবাব দিয়ে দেব। আমাদের দেখতে হবে আদালত তালিকা প্রস্তুতির কোন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে কিনা। আদালতের রায় আমাদের কাছে এসে পৌঁছেনি। পত্র-পত্রিকা ও টিভির মাধ্যমে ওই রায়ের খবর জানতে পেরেছি। পূর্ণ আদেশের কপি পেলে আমরা পরিপূর্ণ জবাব দিতে পারব। বৃহস্পতিবার জয়দেবপুরের আউটপাড়া এলাকায় পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে ১৯ মার্চ প্রথম প্রতিরোধ সংগ্রামে শহীদ হুরমতের কবরের পাশে আলোচনা ও দোয়া মাহফিল শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী ওইসব কথা বলেন। এ সময় জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার কাজী মোজাম্মেল হক, জেলা প্রশাসক মোঃ নূরুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। পত্রিকায় প্রকাশিত ১৯ মার্চ নিয়ে কে এম শফি উল্লাহর বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি বলেছেন, তার উদ্ধৃতি দিয়ে বা নাম দিয়ে একটি পত্রিকায় বলেছে, সেদিন কে এম শফি উল্লাহই ১৯ মার্চ বিদ্রোহ করেছেন। কথাটা সম্পূর্ণ অসত্য। কে এম শফি উল্লাহর লেখনী ইতিহাসকে বিকৃত করবে। আমরা এর প্রতিবাদ করছি এবং সেই সঙ্গে আশা করছি তিনি ইতিহাসের যেটা সঠিক কথা, তা মেনে নিয়ে তার লেখা প্রত্যাহার করে নেবেন। মন্ত্রী বলেন, তারা মানসিকভাবে সশ্রস্ত্র বিদ্রোহের সপক্ষে ছিল। এতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু সেদিন সশস্ত্রভাবে তারা ব্রিগেডিয়ার জাহানজেবের বিরুদ্ধে অবস্থান নেননি। তখনকার প্রেক্ষাপটে তাদের পক্ষে সম্ভবও ছিল না। আমি তাদের সদিচ্ছাকে খাটো করে দেখতে চাই না। কারণ বাঙালী সৈন্যরা স্বতঃস্ফূর্তভাবেই ৭ মার্চের পর থেকে বিদ্রোহ করার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিল। সেদিন বিদ্রোহ যেটা হয়েছে, সেটা করেছে গাজীপুরের সর্বস্তরের জনগণ। মন্ত্রী আরও বলেন, সে সময় ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টর সে পরিস্থিতি ছিল না। সেদিন বাঙালী সৈন্যদের সামনে দিয়ে ব্রিগেডিয়ার জাহানজেবের সৈন্যরা পেছনে ছিল। যাতে ওদের ভাষায় বাঙালী সৈন্যরা ‘বিট্টে’ করতে না পারে। তবে বাঙালী সৈন্যরা মানসিকভাবে আমাদের সমর্থক ছিল। কিন্তু প্রতিরোধ তারা করেনি। বরং জাহানজেবের হুকুম মেনে তাদের যাওয়ার পথ পরিষ্কার করে দিয়েছে। পাক হানাদার বাহিনী বিপক্ষে প্রতিরোধ, গোলাগুলি যা হয়েছে তা জনগণের পক্ষ থেকে হয়েছে। পরে মন্ত্রী শহীদ নেয়ামত ও মনু মিয়ার কবর জিয়ারত করেন ও তাদের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন এবং জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শহরের বঙ্গতাজ অডিটরিয়ামে ঐদিন সশস্ত্র শহীদদের পরিবারের সদস্য ও সংগ্রামে অংশগ্রহণকারী বীরদের সংবর্ধনা যোগ দেন। ১৯ মার্চ গাজীপুরে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে স্বাধীনতাকামী বাঙালী জাতির প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ দিবস। এ উপলক্ষে জেলা প্রশাসন ও বিভিন্ন সংগঠন শহীদদের কবর জিয়ারত, আলোচনা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে।
×